পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/২৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रटभभ ब्रष्5नाबली আরোহীদিগের আনন্দের সীমা রহিল না। বরাহ যোদ্ধাদিগকে দেখিয়া সে ঝোপ হইতে বাহির হইয়া অন্যদিকে পলাইল। মহাউল্লাসে অশ্বারোহিগণ পশ্চাদ্ধাবন করিলেন। সে উল্লাস বর্ণনা করা যায় না। বরাহ যে দিকে পলাইল, অশ্বারোহিগণ বেগে সেই দিকে ধাবমান হইলেন। অশ্বগণ যেন সেই ভূখণ্ড পদভরে কাঁপাইয়া ছটিল, পথের মধ্যে উন্নত শিলাখণ্ড বা পৰ্বততরঙ্গিণী লম্ফ দিয়া অতিক্রম করিল, কণ্টকময় ঝোপ বা ব্যক্ষ অগ্রাহ্য করিয়া পথ পরিকার করিয়া ছটিল। আরোহীদিগের জলন্ত নয়ন সেই বরাহের দিকে স্থিরীকৃত রহিয়াছে, তাঁহাদিগের উন্নত দক্ষিণ হস্ত শন্যে বশ ধারণ করিয়া রহিয়াছে, তাঁহাদিগের হৃদয় উল্লাসে ও উৎসাহে উৎক্ষিপ্ত রহিয়াছে। বরাহ ক্ষণেক দৌড়াইয়া দেখিল অশ্বারোহিগণ নিকটে আসিতেছে। একবার স্থির হইয়া যেন তাহাদিগকে আক্রমণ করিবার চিস্তা করিল, কিন্তু শত যোদ্ধার হস্তে শত বশীর শাণিত ফলা দেখিয়া সম্মুখ-রণচিস্তা ত্যাগ করিল, লম্ফ দিয়া একটী নিবিড় ও বিস্তীণ ঝোপের ভিতর প্রবেশ করিল। নিমেষমধ্যে শত অশ্বারোহী সেই ঝোপ চারিদিকে পরিবেস্টন করিলেন। উচ্চশব্দ করিয়া বরাহকে ঝোপ হইতে বাহির করিবার প্রয়াস পাইলেন, কিন্তু বরাহ প্রাণভয়ে লুকাইয়াছে, বাহির হইবে না। কেহ কেহ প্রস্তরখন্ড নিক্ষেপ করিলেন, কেহ বা সেই বিস্তীণ ঝোপের কোন অংশে পত্রের শব্দ শুনিয়া অনুমান করিয়া বশ নিক্ষেপ করিলেন। অনেকক্ষণ সময় নষ্ট হইল, অনেক উদ্যম ব্যথ হইল, বরাহ ঝোপ হইতে বাহির হইল না। তখন দত্তেজয়সিংহ বলিলেন,—বন্ধগণ, আর এরপে ব্যথা উদ্যমে আবশ্যক কি ? দেখ সৰ্য্যে অস্তাচলে বসিয়াছেন, আর অধিক সময় নাই। সতকভাবে সকলে পদব্রজে ধীরে ধীরে অগ্রসর হও । বরাহ এই ঝোপের মধ্যে আছে, আমরা চারিদিক হইতে মধ্যভাগে অগ্রসর হইলে বরাহ অবশ্য একদিক হইতে পলাইবার চেচ্টা করিবে, অথবা মধ্যদেশেই মরিবে । যোদ্ধাগণ ইহা ভিন্ন উপায় দেখিলেন না। অশ্ব হইতে অবতরণ করিয়া সকলে ধীরে ধীরে অগ্রসর হইতে লাগিলেন। তীক্ষ হন্তে বশৰ্ণ ধারণ করিয়া রহিলেন, তীক্ষ নয়নে দেখিতে লাগিলেন। এবার বরাহ অবশ্যই বাহির হইবে, সহসা আক্রমণ করিতে না পারে, এই জন্য সকলে সতকভাবে সম্মুখে ও চারিদিকে দেখিতে দেখিতে ঝোপের ভিতর অগ্রসর হইতে লাগিলেন। বরাহ বোধ হয় আরোহীদিগের উদ্দেশ্য বুঝিতে পারিল । সহসা লম্ফ দিয়া একদিক হইতে বাহির হইল ; বিদ্যুৎবেগে নিকটস্থ যোদ্ধার পদ বিদীণ করিল, নিমেষ মধ্যে দরে পলাইল । দই একজন যোদ্ধা আহতের সেবার জন্য রহিলেন, অবশিস্ট সকলে অশ্বারোহণ করিয়া পুনরায় বরাহের পশ্চাদ্ধাবন করিলেন। পনরায় ভূমি ও শিলাখণ্ড কম্পিত করিতে লাগিলেন, বায়ুবেগে কণ্টক ও তরঙ্গিণী অতিক্রম করিতে লাগিলেন, মহানাদে বন পরিপরিত করিতে লাগিলেন। দজায়সিংহ উন্মত্তের ন্যায় অশ্ব ছয়টাইলেন, তাঁহার দক্ষিণ হস্তে দীঘ বশ কম্পিত হইতেছিল। হইল, সন্ধ্যার ছায়া ক্রমে গাঢ়তর হইতে লাগিল, অশ্বারোহিগণ শ্রেণীভঙ্গ হইয়া ভিন্ন ভিন্ন হইয়া পড়িল । কেহ নিকটে, কেহ দুরে, কেহ প্রান্তরে, কেহ নিবিড় বনে, বরাহ অনুসন্ধান করিতেছেন। দত্তেজয়সিংহ একাকী একটী বনের মধ্যে আসিয়া পড়িয়াছেন। তাঁহার অশ্বের শরীর ফেনময়, তাঁহার ললাট হইতে ঘৰ্ম্ম পড়িতেছে, কিন্তু তাঁহার নয়ন স্থির, শত যোদ্ধামধ্যে তিনিই কেবল বরাহের গতি অবিচলিত নয়নে নিরীক্ষণ করিয়াছিলেন। অন্ধকারে বরাহ সকলের পক্ষে নিরদেশ হইয়াছে, তাঁহার পক্ষে হয় নাই। তিনি যে জঙ্গলের দিকে স্থির নিরীক্ষণ করিয়াছিলেন, বাস্তবিক তথায় বরাহ নিহিত ছিল । এবার বরাহ রকেট হইল। আদ্য একপ্রহর কাল জঙ্গল হইতে জঙ্গলে, গহবর হইতে গহবরে লুকাইয়া প্রাণ বাঁচাইয়াছে, তথাপি একজন যোদ্ধা অব্যথ নয়নে তাহার পশ্চাদ্ধাবন করিয়াছে। সন্ধ্যার সময় ঝোপের ভিতর লকোইয়াছে, সেই একজন যোদ্ধা তাহাকে হনন করিবার জন্য দণ্ডায়মান আছে। একেবারে বিদ্যুতের ন্যায় গতিতে বরাহ দত্ত্বেয়সিংহকে আক্রমণ করিতে আসিল । দন্জেয়সিংহ বামহস্তে ললাটের বেদ মোচন করিয়া লম্বমানকেশ সরাইলেন, তাঁর দটি করিয়া দক্ষিণ হস্তের কম্পমান বশর্ণ ছাড়িলেন। শ্রান্তিবশতঃ বা অন্ধকারবশতঃ সে বশ" 《8