পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्राछन्।ुङ जीवन-नक्रा “অদ্য আমাদের মহারাণা চিতোরে নাই, মহারাণা পাবত-কদরে বাস করেন, মহারাণা বক্ষতলে শিশদিগকে লালনপালন করেন, শব্দশন্য নিবিড় জঙ্গল মহারাণার শ্রদ্ধান্তঃপরে। বাল্যকালে আমি আর একজনকে এইরুপ দেখিয়াছিলাম, তিনিও পর্বতগহবরে বাস করিতেন, পৰ্বতশিখর তাঁহার উন্নত প্রাসাদ ছিল। সদরশ্ৰত সঙ্গীতের ন্যায় পন্বেকথা হৃদয়ে জাগরিত হইতেছে, হৃদয় আলোড়িত করিতেছে, সেকথা শ্রবণ করন। “সেই বালক একদিন ভ্রাতার সহিত চারণীদেবীর পব্বতে গিয়াছিলেন; নিভীক বালক অন্য আসন ত্যাগ করিয়া সিংহচমের উপর বসিলেন। চারশীদেবী শিহরিয়া উঠিয়া বলিলেন,— যিনি সিংহচমের উপর বসিলেন, একদিন তিনি সিংহাসনে বসিবেন । রোষে জ্যেষ্ঠভ্রাতা বালককে আক্রমণ করিল, কেননা উভয়েই রাজপত্র। বালক আঘাতে জর্জরিত কলেবর হইয়া এক চক্ষ অন্ধ হইয়া পলাইল। কোথায় পলাইল ? “ছাগরক্ষকদিগের নিকট অন্বেষণ কর। তাহাদিগের ঐ মলিন বেশধারী অথচ তেজঃপুণ’ ভৃত্যটী কে ? ছাগরক্ষকগণ জানে না, জানিলে কি ছাগরক্ষণে অপটু বলিয়া বালককে অবমাননা করিয়া দরে করিয়া দিত ? অবমানিত, দ্রীকৃত বালক কোথায় যাইল ? “জঙ্গলের ভিতর অন্বেষণ কর, শ্রীনগরের বীর করিমচাঁদের একজন সামান্য সেনা পরিশ্রাত্ত হইয়া কি সুখে নিদ্রা যাইতেছে। বটবৃক্ষই তাহার চন্দ্রাতপ, তৃণই তাহার শষ্যা, খড়াই তাহার ' উপাধান। বৈকালিক সয্যেকিরণ সেই পত্ররাশি ভেদ করিয়া বালকের মনখের উপর পড়িয়াছে, একটী সপ চক্র-বিস্তার করিয়া সেই রৌদ্র নিবারণ করিতেছে। করিমচাঁদের সামান্য সেনার জন্য কি সপ চক্র-বিস্তার করিয়াছে ? এ সামান্য সেনা নহে, এ বালক গপ্তেবেশে রাজপত্র, সপ বালকের রাজচ্ছত্রধারী। “দিন গেল, মাস অতীত হইল, বৎসর অতিবাহিত হইল, সেই বালক সিংহাসনে বসিলেন, রাজচ্ছন্নধারী তাঁহার উপর ছত্র ধরিল। ঐ শন বজ্রনাদ, ঐ দেখ, সংগ্রামসিংহের অশীতি সহস্ৰ অশ্বারোহী মেদিনী কম্পিত করিতেছে! ঐ দেখ, তাঁহার অসংখ্য জয়পতাকায় আকাশ রক্তবর্ণ হইতেছে! ঐ দেখ, শতদ্র হইতে বিন্ধ্যাচল পয্যন্ত ও সিন্ধ হইতে যমনা পৰ্য্যন্ত তাহার রাজ্য বিস্তত হইয়াছে, অষ্টাদশ যুদ্ধে জয়ী হইয়া তিনি এ রাজ্য বিস্তার করিয়াছেন! পনরায় কি পথবীরাজের ন্যায় আযাবত্ত একচ্ছত্র করিবেন ? কিন্তু ভারতবষের পশ্চিম দিকে মেঘরাশি জড় হইতেছে, সে তুমুল ঝটিকা ভারতবর্ষে আসিয়া পড়িল, নতন আগন্তুক বাবরের মোগল-সৈন্য ভারতক্ষেত্র আচ্ছন্ন করিল ! সিংহবল প্রকাশ করিয়াও সংগ্রামসিংহ বাবরের নিকট পরাস্ত হইলেন। কিন্তু বীরের বীরপ্রতিজ্ঞা শ্রবণ কর—যতদিন বাবরকে পরাস্ত না করিব, ততদিন চিতোর প্রবেশ করিব না ; মরুভূমি আমার শয্যা, আকাশ আমার চন্দ্ৰাতপ ! সংগ্রামসিংহ প্রতিজ্ঞালঙ্ঘন করে না; পাথরোজের সিংহাসনে কি আবার হিন্দরোজা উপবেশন করবেন ? আমি বদ্ধ হইয়াছি, আর দেখিতে পাই না, সংগ্রামসিংহ কোথায় গেলেন ? তাঁহার অধীনস্থ ষোড়শ রাজা ও শতাধিক রাওয়ৎ ও রাওয়ল কোথায় গেলেন ? পঞ্চশত হস্তী, অশীতি সহস্ৰ অশ্বারোহী কোথায় গেল ? সে আলোক নিস্তবাণ হইয়াছে! সে মহাতেজ চিরকালের জন্য লীন হইয়াছে। “লীন হয় নাই। যোদ্ধাগণ, সবল হন্তে খড়া ধারণ কর, তীক্ষা বশ মস্তকের উপর উত্তোলন কর, হনকার-রবে যুদ্ধে ধাবমান হও, বায়ন-তাড়িত তৃণবৎ তুকী-দিগকে দরে তাড়াইয়া দাও, চিতোর নগর জয় জয়-নাদে পরিপরিত কর। ব্যুদ্ধের পর্বোসমতি কেবল স্বপ্ন নহে, মেওয়ারের পবেদিন আসিবে। পৰ্বত-কন্দর ও নিবিড় বন ত্যাগ করিয়া সংগ্রামসিংহের ন্যায় প্রতাপসিংহও সিংহাসনে আরোহণ করিবেন, সংগ্রামসিংহের ন্যায় প্রতাপসিংহের নামও দিল্লীর দ্বার বদ্ধ নীরব হইল। ক্ষণমাত্র সভাস্থল নীরব, সহসা শত যোদ্ধার বজ্রনাদ ও হােঙ্কার শব্দে সালমেরার পর্বত কম্পিত হইল। পৰ্বতের নীচে সৈন্যগণ সে শব্দ শুনিল, শতগণ উচ্চরবে সেই শব্দ প্রতিধৰনিত করিল। চারণদেব নিজস্থানে উপবেশন করিলে পর সালমোৱাধিপতি যোদ্ধাদিগের দিকে চাহিয়া গম্ভীর স্বরে বলিলেন,—বীরগণ, যুদ্ধের অধিক বিলম্ব নাই। যুদ্ধ-সময়ে সালমত্রা সব্বদাই রাণার দক্ষিণে থাকেন, আমি কেবল সৈন্যসংগ্ৰহ করিবার জন্য এখানে আসিয়াছি। চন্দাওয়ৎকুলের প্রধান প্রধান বীরগণ সসৈন্যে উপস্থিত হইয়াছেন, চল কল্যই আমরা মহারাণার আধুনিক ミ○○