পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ও মনষ্যের কোলাহলে সবে মহল প্রাসাদ পরিপন্ণ হইল, অপসংখ্যক রাজপত ছিন্নভিন্ন শত্ৰবেটিত হইয়া তখনও অসরবীষ্যে প্রাসাদ রক্ষা করিতেছে। o প্রাসাদের শেষ কুটীরে দলেজয়সিংহের সহিত তেজসিংহের সহসা দেখা হইল, উভয়েই খড়্গহস্ত, উভয়েই রক্তাপ্লাত! তেজসিংহ ঈষৎ চিন্তা করিয়া কহিলেন,—দড়জয়সিংহ! চন্দাওয়ৎ রাঠোরের বীরত্ব দেখিয়াছে, রাঠোর চন্দাওয়তের বীরত্ব দেখিয়াছে, আর যন্ধে নিম্ফল, এ যুদ্ধে ফুল দাও দল কিন্তু অদ্য আমরা রক্ষা পাইলে মহারাণার অন্য কাৰ্য্য সাধন করিতে রব । 1. o.গ্নসিংহ। মহারাণার কাৰ্য্যসাধন রাজপতের প্রথম কৰ্ত্তব্য, কিন্তু অদ্য পরিত্রাণ পাওয়ার পথ আছে ? তেজসিংহ ধীরে ধীরে একটী গবাক্ষের দিকে অঙ্গুলি নিন্দেশ করিয়া কহিলেন,—শুনিয়াছি, ঐ গবাক্ষ দিয়া একজন রাঠোর বালক লম্ফ দিয়া হ্রদে পড়িয়াছিল, পরে সস্তরণ দ্বারা জীবন রক্ষা করিয়াছিল। রাঠোর বালক যাহা করিয়াছিল, চন্দাওয়ৎ যোদ্ধা বোধ হয় তাহা করিতে পারেন। লজায়, রোষে, পাবকথা স্মরণে দলজয়ের মুখ রক্তবর্ণ হইল, হন্তের অসি কপিতে লাগিল। রোষে পদাঘাত করিয়া সে গবাক্ষ বিদীণ করিয়া লক্ষফ দিয়া হ্রদে পড়িলেন। তেজসিংহও সে গবাক্ষ দিয়া হ্রদে পড়িলেন, উভয়ে সন্তরণ দ্বারা হ্রদ পার হইলেন। সযর্গমহল শত্র হস্তগত হইল। চতুৰিবংশ পরিচ্ছেদ ঃ ভীমগড় ধবংস ক গতাঃ পৃথিবীপালাঃ সসৈন্যবলবাহনাঃ। প্রমাণসাক্ষিণী যেষাং ভূমিরদ্যাপি তিষ্ঠতি ॥ —মহাভারতম। উপরি উক্ত ঘটনার পর প্রায় একমাস কাল কোন যুদ্ধ হইল না। ভীমগড়নিবাসী রাজপতগণ সুকুম না হয় এ কলে ন ন হল কি ল শ অথবা আন | মহারাণা প্রায়ই দুগে থাকিতেন না। অল্পসংখ্যক সৈন্য লইয়া পব্বতে ও উপত্যকায় বাস করিতেন। স্থানে স্থানে সেনাগণকে সন্নিবেশিত করিতেন, সুযোগ পাইলেই অন্ধকার নিশীথে সমস্ত সৈন্য লইয়া নিশিচন্ত মোগলদিগকে সহসা আক্রমণ করিতেন, পনরায় বহুসংখ্যক মোগল জড় হইবার পবে যেন ভূগভে বা পৰ্বত গহবরে লীন হইয়া যাইতেন। দিবসে, যামিনীতে, শীতে, বষায়, গ্রীমে, অবিশ্রাস্ত প্রতাপসিংহ এইরপে মেওয়ার রক্ষা করিতে লাগিলেন। অনন্ত যুদ্ধ চলিতে লাগিল, মেওয়ার বিজয় হইল না। এইরপে কিছুকাল অতিবাহিত হইলে মসলমানগণ সহসা একদিন রজনীতে দ্বিসহস্ৰ সৈন্যসমেত ভীমগড় দাগ আক্রমণ করিল। ভীমগড়ে রাজপরিবার আছেন এ সংবাদ কোনরপে তাঁহারা জানিয়াছিল। রাজপরিবারকে বন্দী করিয়া দিল্লীতে প্রেরণ করিলে অবশেষে প্রতাপ তাহাদিগের উদ্ধারের জন্য অবশ্যই অধীনতা স্বীকার করিবেন, এই আশায় অদ্য সহসা মহাকোলাহলে ভীমগড় দাগ আক্রমণ করিল। রাজপতগণ নিশাযোগে এই সহসা আক্রমণের জন্য প্রস্তুত ছিল না। প্রতাপসিংহ দগে" ছিলেন না, দেবীসিংহও কয়েক শত রাঠোর লইয়া মহারাণার সঙ্গে সঙ্গে পৰ্বতে পাবতে ফিরিতেছিলেন। কেবল বালক চন্দনসিংহ পাঁচশত মাত্র রাঠোর লইয়া দুগে ছিল, আর তেজসিংহও দাগে ছিলেন। তিনি রাজপরিবার রক্ষার ভার লইয়াছিলেন, কদাপি দাগ ত্যাগ করিতেন না । মসলমানদিগের সহসা এই ভীষণ আক্রমণ দেখিয়া তেজসিংহের মুখ গম্ভীর হইল। তিনি ক্ষণেক নিস্তব্ধ হইয়া রহিলেন, দাগ প্রাচীর হইতে চারিদিকে পিপীলিকা-শ্রেণীর ন্যায় মসলমানদিগকে দেখিতে লাগিলেন। ক্ষণেক পর বালক চন্দনকে সম্বোধন করিয়া কহিলেনচন্দন! অদ্য দগোরক্ষা সংশয়ের বিষয়, রাজপরিবারকে সংশয়ের স্থানে রাখা বিধেয় নহে। రిO: