পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्राछन, ऊ छौवन-नझn ভীমগড় হইতে নিদলন্ত হইয়া যাইবার জন্য জঙ্গলের ভিতর দিয়া একটী গোপনীয় পথ আছে, তাহা কেবল আমার বিশ্বস্ত ভাঁলগণ ও আমি জানি। কিন্তু সে পথ অতিশয় বক্র, নিরাপদ স্থানে পেপছিতে সমস্ত রজনী অতিবাহিত হইবে । বালক । পঞ্চ শত রাঠোর লইয়া সমস্ত রজনী দাগ রক্ষা করা অদ্য তোমার কাৰ্য্য! উল্লাসে চন্দনসিংহ উত্তর করিলেন,—প্রভু পাবেই দগোরক্ষার ভার আমার উপর ন্যস্ত, করিয়াছেন, দাস তাহা করিবে । আমাদিগের ধন, সম্পত্তি, জীবন মহারাণার; মহারাণার জন্য এ দাস আদ্য যুঝিবে। প্রভু নিশ্চিত্ত হইয়া রাজপরিবার রক্ষার উপায় উদ্ভাবন করন, ভীমগড় সৰ্য্যোদয় পব্যস্ত এ দাস রক্ষা করিবে। বালকের এ গন্বিত বচন শুনিয়া তেজসিংহ আনন্দিত হইলেন; কহিলেন;–চন্দনসিংহ। তুমি যখন এ কায্যের ভার লইয়াছ, আমার আর চিন্তা নাই। পরে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া অস্পষ্ট স্বরে কহিলেন,—কিন্তু যখন দেবীসিংহ প্রত্যাবৰ্ত্তন করিয়া পত্রের সংবাদ জিজ্ঞাসা করিবেন, তেজসিংহ তাঁহাকে কি বুঝাইবে ? আর বিলম্ব না করিয়া তেজসিংহ রাজপরিবার রক্ষার চেষ্টা করিতে লাগিলেন, স্বয়ং ভৗলবেশে সমস্ত পথ যাইলেন, কোন স্থানে তাঁহাদিগকে লইয়া যাইলেন, পাঠক পবেই তাহা অবগত আছেন । এদিকে মহত্তেমধ্যে দগ-প্রাচীরের উপর মশালের আলোক দন্ট হইল, মহত্তেমধ্যে তিনশত রাঠোর দাগ দ্বার হইতে নিৰ্ম্মান্ত হইয়া স্থানে স্থানে শত্রর আগমন প্রতীক্ষা করিতে লাগিল। যে স্থানে পৰ্বত অতিশয় উচ্চ, আরোহণ অতিশয় কণ্টসাধ্য, রাজপতগণ সেই স্থানে শত্রর অপেক্ষা করিতে লাগিল। রাজপতদিগের সংখ্যা অতিশয় অলপ, কিন্তু সাহস অসাধারণ, এবং সেই পৰ্ব"তরাশি অপেক্ষা তাহাদিগের হৃদয় স্থির ও অকল্পিত। বালক চন্দনসিংহ অদ্য দৈবজ্ঞানে জ্ঞানী, দৈববলে বলিষ্ঠ, নিঃশঙ্কহদয়ে শত্রর প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন। অবশিষ্ট দুইশত যোদ্ধা দাগের ভিতর রহিল। দেখিতে দেখিতে তরঙ্গতেজে মসলমান আসিয়া পড়িল, যাদ্ধনাদে আকাশ ও মেদিনী কম্পিত করিল। সে ঘোর রজনীর ভয়ঙ্কর যুদ্ধ বর্ণনা করা যায় না। অদ্য দাগ হস্তগত হইবে, অদ্য মহারাণার পরিবার বন্দী হইবেন, এই আশায় ঘোর উল্লাসে মুসলমানগণ রাজপতশ্রেণীকে আক্রমণ করিতে লাগিল। মুসলমানের অসংখ্য সেনা, কিন্তু সে পৰ্বত আরোহণ করিবার একমাত্র পথ, সতরাং মুসলমানেরা সেই অল্পসংখ্যক রাজপত সেনাকে চারিদিকে বেল্টন করিতে পারিল না। সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় বারবার মহাগজনে মসলমান সেই রাজপত রেখার উপর পড়িতে লাগিল, কিন্তু জলধিসীমাস্থ পব্বত প্রাচীরের ন্যায় রাজপন্তরেখা বার বার সে তরঙ্গ প্রতিহত করিতে লাগিল । মহারাণার সম্মান, আমাদিগের জীবন, আমাদিগের মাতা, বনিতা, ভগিনী, কুটবিনীর জাতিধৰ্ম্ম সমস্তই আমাদিগের অসির উপর নিভর করে—প্রত্যেক রাঠোর নিঃশব্দে এই চিন্তা করিল, নিঃশব্দে অসংখ্য শত্রকে যাদ্ধদান করিল। এ চিস্তায় যতদিন স্বাধীন যোদ্ধার ধমনীতে রক্ত বহিতে থাকে, ততদিন জগতে সে যোদ্ধার পরাজয় নাই। মোগলদিগের সেনা অধিক, কিন্তু রাজপতগণ যবনের অধীনতা স্বীকার করিবে ? এই প্রশেন প্রত্যেক রাঠোরের মুখমণ্ডল রক্তবর্ণ হইয়া উঠিল, কেবল নিঃশব্দ অসিচালনে সে প্রশ্নের উত্তর করিল। সমস্ত রজনী যুদ্ধ হইল। রাজপত যোদ্ধগণ প্রায় সমস্তই সম্মখেরণে হত হইল। পাবদিকে রক্তিমাচ্ছটা দেখা দিল, অসংখ্য মসলমানগণ ভয়ঙ্কর যুদ্ধনাদ করিয়া অবশিষ্ট কতিপয় রাজপতকে আক্রমণ করিল, উদ্বেল সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় যেন উপরে আসিয়া পড়িল। তখন রক্তাপ্লত কলেবরে বালক চন্দনসিংহ পলাইয়া দগে প্রবেশ করিলেন; সঙ্গে সঙ্গে অনমান পঞ্চাশজন মাত্র রাঠোর দাগে প্রবেশ করিল। তাহাদিগের আরক্ত নয়ন, রক্তপণ পরিচ্ছদ, দীঘ কলেবর ও ভীষণ মুখমণ্ডল দেখিলে বোধ হয় যেন ব্রহ্মবলে অসরেয়াদ্ধে পরাস্ত হইয়া দেবগণ ধীরে ধীরে আপন আলয়ে প্রত্যাগমন করিতেছেন। মহাকোলাহলে মুসলমানগণ তখন দাগ আরোহণ করিয়া প্রবেশের চেষ্টা পাইল, কিন্তু ঝন ঝনাশব্দে দগকবাট রাদ্ধ হইল। কবাটের পশ্চাতে অবশিষ্ট নিভীক রাঠোর বীরগণ শেষ পৰ্য্যস্ত যুঝিবে, মসলমান আক্রমণকারাদিগকে রাজপতেবীৰ্য্য দেখাইবে! も●●