পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* ब्रटभश्च ब्रक्रमाबल" + তখন মসলমানগণ কিঞ্চিৎ হতাশ্বাস হইল। সমস্ত রজনী যুদ্ধ করিয়া শ্রান্ত হইয়াছে, এক্ষণে দেখিল দাগাস্বায় রন্ধ, বোধ হয় পুনরায় সমস্ত দিবস যুদ্ধ না করিলে দাগ বিজয় হইবে না। সেনাপতি সেনাদিগকে অবসন্ন ও শ্রান্ত লক্ষ্য করিলেন; আদেশ দিলেন, আদাই ভীমগড় লইব, আদ্যই প্রতাপসিংহের পরিবার বন্দী হইবে, সৈন্যগণ ক্ষণেক বিশ্রাম কর। I মসলমানদিগের উদ্যম ভঙ্গ দেখিয়া চন্দনসিংহ প্রাচীরের উপর উঠিলেন। দেখিলেন, প্রায় এক সহস্র মসলমান দ্বারের বাহিরে বিশ্রাম করিতেছে, বুঝিলেন, যুদ্ধ শেষ হয় নাই, ক্ষণেক নিবত্ত হইয়াছে মাত্র। দগের ভিতরে চাহিলেন; দেখিলেন, কেবল দুইশত জন রাঠোর। যুবকের ভ্ৰম কুশ্চিত হইল, ললাট চিন্তাচ্ছন্ন হইল। ক্ষণমাত্র চিস্তার পরই যেন প্রতিজ্ঞা স্থির হইল, তখন ঈষৎ হাসিয়া প্রাচীর হইতে অবতীর্ণ হইলেন। যোদ্ধগণকে চারিদিকে ডাকিয়া কহিলেন;–বন্ধগণ, মনষ্যের যাহা সাধ্য, রাজপতের যাহা সাধা, তাহা করিয়াছি। আমার পণ রক্ষা করিয়াছি, স্যাদেব আকাশে উদিত হইয়াছেন। :লি সৱে লভিজ্ঞ বােমা আন নীতি আছি। এক্ষণে তোমাদিগের পরামশ ? একজন রাঠোর উত্তর করিলেন,—রাঠোর সম্মখেরণে প্রাণত্যাগ ভিন্ন অন্য পরামশ জানে না। চন্দনসিংহ। তাহার পর ? তাহার পর আমাদিগের মাতা, ভগিনী, বনিতা, যবনের গোলী হইবে। রাজপত-রমণী দিল্লীতে বিলাসের দ্রব্য হইবে ! রোষে সকলের মুখ রক্তবর্ণ হইল, কোষ হইতে অসি অদ্ধেক বহিগত হইল। তথাপি রাজপতিমণ্ডলী সকলে স্তন্ধ ও বাক্যশন্যে। অদ্ধান্সফটস্বরে কেহ কেহ একটী ভয়ঙ্কর কথা উচ্চারণ করিল—“চিতারোহণ।” ক্রমে সকলে সমস্বরে কহিল,—“পরেষের রণশয্যা, রমণীর চিতারোহণ।” চন্দনসিংহ তখন অস্তঃপারে প্রবেশ করিলেন। তথায় তাঁহার মাতা অন্যান্য রাঠোর-রমণী বেষ্টিতা হইয়া উপবেশন করিয়াছিলেন, পত্রে মাতার চরণে প্রণত হইলেন। মাতা জিজ্ঞাসা করিলেন—যুদ্ধের সংবাদ কি ? চন্দনসিংহ। সংবাদ ভাল। কোনও রাজপতে যোদ্ধা যুদ্ধস্থান ত্যাগ করে নাই, শত্রকে পাঠপ্রদর্শন করে নাই। সায্য উদয় হইয়াছেন, দাগ এখনও আমাদিগের হন্তে । মাতা সস্তুস্ট হইয়া পত্রকে আশীব্বাদ করিলেন। পরে পত্র ধীরে ধীরে কহিলেন;–মাত । যদি অনুমতি করেন, তবে আরও নিবেদন করি, রজনীর যুদ্ধে প্রায় তিন শত যোদ্ধা রাঠোরের ন্যায় জীবনদান করিয়াছেন, এক্ষণে দগের ভিতর দুইশত পঞ্চাশ জনের অধিক রাঠোর নাই, শত্ৰগণ প্রায় এক সহস্ৰ, ক্ষণপরেই যাদ্ধারম্ভ করিবে—অবশিষ্ট কথা চন্দনসিংহ উচ্চারণ করিতে পারিলেন না, বীর বালক অলক্ষিত ভাবে আশ্রমোচন করিলেন। তীব্রস্বরে দেবীসিংহের গহিণী জিজ্ঞাসা করিলেন—দুইশত পঞ্চাশ জন রাজপত কি সহস্ৰ তুকীর সহিত যুঝিতে ভয় করে ? স্থির বরে চন্দনসিংহ কহিলেন-রাজপত মনষ্যের সহিত যুদ্ধ করিতে ভয় করে না, যাদ্ধদান করবে। কিন্তু রাজপতরমণীর সম্মান প্রথম রক্ষণীয়। হাসিয়া চন্দনসিংহের মাতা উত্তর দিলেন—বৎস! এই কথা কহিতে ভয় করিতেছিলে ? রাজপত বীর মরিতে জানে, রাজপতরমণী কি মরিতে জানে না ? যাও বৎস! যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও, আমরাও হইতেছি। পরে অন্যান্য রমণীদগকে আহবান করিয়া চন্দনের মাতা সহাস্যবদনে কহিলেন,—সখিগণ ! অদ্য আমরা সতী হইব, স্বামীর সোহাগিনী হইব, ইহা অপেক্ষা রাজপতকামিনীর অদন্টে কি সখে আছে ? মেলচ্ছ তুকীগণ দেখক, রাজপত যোদ্ধাগণ বীর, রাজপতরমণীগণ সতী। নবোদিত সৰ্য্যোলোকে সহস্ৰ নারী স্নানাদি সমাপন করিলেন, দেবদেবীর আরাধনা সমাপন করিলেন, পট্টবস্ত্র পরিধান করিয়া রাজদ্বারে একত্রিত হইলেন। বালা, প্রৌঢ়া, বাদ্ধা, সকলে একত্রিত হইলেন, সকলে আনন্দে দেবতার নাম উচ্চারণ করিতে লাগিলেন। তাহার পর ?— তাহার পর রাজপতের পরাতন ধৰ্ম্ম অনুসারে অলঙ্কার-বিভূষিতা সহস্র রমণী উল্লাসরব করিতে করিতে চিতারোহণ করিলেন। যখন পরাজয়, অবমাননা ও ধৰ্ম্মম নাশ অনিবাৰ্য্য হয়, রাজপতরমণীগণ এইরপে সতীত্ব রক্ষা করেন! go সেই অগ্নিশিখার চতুদিকে দই তিন শত রাঠোর বীর দণ্ডায়মান ছিলেন। নিঃশব্দে OOH