পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नद्राग्न সৌন্দৰ্য্য নাই। উপন্যাস রণিত সুখ সকলের কপালে ঘটে না, উপন্যাস-বণিত সৌন্দয্য সকলের থাকে না। এই বিশাল সংসারের দিকে চাহিয়া দেখ, দই একজন ঐশ্বয্যের সন্তানকে ছাড়িয়া দিয়া সহস্ৰ সহস্র দরিদ্র গহস্থ ভদ্রলোকের সংসারের দিকে চাহিয়া দেখ, আমাদিগের দরিদ্র ভগিনী বা কন্যা বা আত্মীয়গণ কিরপে সখে, দুঃখে, কণ্টে, সহিষ্ণতায়, সংসারযাত্রা করেন, চাহিয়া দেখ, দেখিয়া বল, ছার উপন্যাসের কাল্পনিক অলীক সুখ কয়জনের কপালে ঘটিয়াছে, রুপার ঝিনুক ও গরম দগ্ধ মুখে করিয়া কয়জন এ সংসারে জন্মগ্রহণ করিয়াছেন ? ক্ষণেক বেড়াইতে বেড়াইতে শিশু নিদ্রিত হইল, মাতা নিদ্রিত শিশকে সযত্নে মেজেতে মাদরের উপর শোয়াইয়া আপনি নিকটে বসিয়া ক্ষণেক পাখার বাতাস করিতে লাগিলেন। সেই ঘরের স্তিমিত আলোক সেই প্রশাস্ত ঈষৎ চিন্তাশীল ললাটের উপর পড়িয়াছে। স্থির প্রশান্ত, অতিশয় কৃষ্ণবর্ণ নয়ন দুইটী সেই শিশুর দিকে চাহিয়া রহিয়াছে, নয়নে মাতার স্নেহ, মাতার যত্ন বিরাজ করিতেছে, তাহার সঙ্গে সঙ্গে মাতার চিন্তা ও মাতার অসীম সহিষ্ণতা লক্ষিত হইতেছে। শরীরখানি ক্ষীণ কিন্তু সংগঠিত। ক্ষীণ সংগঠিত বাহ দ্বারা নারী ধীরে ধীরে পাখার বাতাস করিতেছিলেন, আর সেই নিস্তব্ধ অন্ধকার ঘরে বসিয়া তাঁহার কত চিন্তা উদয় হইতেছিল। সংসারের চিস্তা, এই সখদঃখপণ জগতের চিন্তা, আর কখন কখন পবেকালের চিন্তা ও মতি ধীরে ধীরে সেই রমণীর হৃদয়ে উদয় হইতেছিল। عاشد ছেলে বেশ ঘমোইয়াছে। তখন মাতা পাখাখানি রাখিয়া আপন বাহর উপর মস্তক স্থাপন নিদ্রিত হইয়া পড়িলেন। দ্বিপ্রহরের উত্তাপে সমস্ত জগৎ নিস্তব্ধ, সে ঘরটীও নিস্তব্ধ, সেই নিস্তব্ধতায় সস্তান দুইটীর পাশ্বে স্নেহময়ী মাতা নিদ্রিত হইলেন। সংসারের অশেষ ভাবনা ক্ষণেক তাঁহার মন হইতে তিরোহিত হইল, সেই শাস্ত, সহিষ্ণ, চিন্তাশীল মুখমণ্ডল ও ললাট হইতে চিন্তার দুইটী রেখা অপনীত হইল। রমণী দই তিন দণ্ড এইরুপ নিদ্রিত রহিলেন। পরে একটা শব্দে তাঁহার নিদ্রা ভঙ্গ হইল। যখন চক্ষু উল্মীলিত করিলেন, তখন তাঁহার পাশ্বে একটী প্রফুল্ল-নয়না, হাস্যবদনা, সৌন্দৰ্য্যবিভূষিতা বালিকা বসিয়া একটী বিড়াল-শিশুর সঙ্গে খেলা করিতেছে, তাহারই শব্দ। বিড়ালশিশু লাফাইয়া লাফাইয়া বালিকার হস্তের খেলিবার দ্রব্য ধরিতে চেণ্টা করিতেছে, বালিকা হস্ত টানিয়া লইতেছে। সে সন্দের গৌরবণ চিন্তাশন্যে ললাটে গুচ্ছ গুচ্ছ কৃষ্ণ চুল পড়িতেছে, সরিয়া যাইতেছে, আবার পড়িতেছে; সেই প্রফুল্ল, অতি উক্তজবল, কৃষ্ণবর্ণ নয়ন দটী যেন উল্লাসে হাসিতেছে, সে বিশ্ববিনিন্দিত ওঠ দুইটী হইতে যেন সন্ধা ক্ষরিয়া পড়িতেছে, সেই সংগঠিত সন্দের ললিত বাহুলতা বায়ন-সঞ্চালিত লতার ন্যায় শোভা পাইতেছে। বালিকার বয়স ত্রয়োদশ বৎসর, কিন্তু তাহার প্রফুল্ল মুখখানি ও হাস্যবিসফারিত নয়নদ্বয়, তাহার চিন্তাশন্যে মন ও উদ্বেগশন্য হৃদয় বালিকারই বটে, নারীর নহে। রমণী অনেকক্ষণ সেই প্রেমের পত্তেলির দিকে চাহিয়া রহিলেন, সেই বালিকা ও বিড়ালশিশর খেলা ক্ষণেক দেখিতে লাগিলেন, পরে ধীরে ধীরে বলিলেন, “সন্ধা, তুমি কতক্ষণ এসেছ ?” সন্ধা। “দিদি, আমি অনেকক্ষণ এসেছি, তুমি ঘামচ্ছিলে, তাই জাগাইনি। আর দেখ দিদি এই বেড়াল ছানাটা আমি যেখানে যাব, সেইখানেই যাবে, আমি রান্নাঘরে বন্ধ করে বাসন মাজতে গেলাম, ও আমার সঙ্গে সঙ্গে গেল।” বিন্দ। “বাসন মাজা হয়েছে? বাসনগুলি সব ঘরে বন্ধ করে রেখে এসেছ ত?" সন্ধা। “হাঁ, সব মেজে রেখে এসেছি। তারপর বেড়ালকে গোয়াল ঘরে বন্ধ করে এলম, সে আবার সেখান থেকে বেড়া গ’লে এখানে এসেছে। ও আমার এই পর্তুলটা নিতে চায়, তা আমি দিচ্চি এই যে !" বিন্দর। “তা বোন এতক্ষণ এসেছ, একবার শোও না, গেল রাত্রিতে তোমার ভাল ঘাম হয়নি, একটা ঘমোও না।” সন্ধা। “না দিদি, আমার দিনে ঘন্ম হয় না, আমি রাত্রিতে বেশ ঘামিয়েছিলাম। কেবল কুলক মন কাল অন আ ফ লাল আজ খোকা কেমন আছে ניכ ○○>