পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հe)e রমেশচন্দ্র সমাজ-সংস্কারের বিশেষ পক্ষপাতী ছিলেন। বিদ্যাসাগর প্রবত্তি'ত বিধবা বিবাহ এবং রাহ্মসমাজ কর্তৃক পরিচালিত অসবর্ণ বিবাহ প্রচেষ্টার সারবত্তা তিনি মৰ্ম্মে মৰ্ম্মে অনুভব করিয়াছিলেন। একারণ তিনি সংসার উপন্যাসে বিধবা বিবাহ এবং সমাজ উপন্যাসে অসবর্ণ বিবাহের প্রয়োজনীয়তা প্রতিপাদনে সবিশেষ প্রয়াসী হন। সমাজের উদ্ধান্তরে অর্থাৎ শিক্ষিত প্রগতিশীল নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যেই যে এইরুপ সংস্কার প্রবত্তন আশর প্রয়োজন তাহার কথা তিনি একখানি পরেও প্রকাশ করিয়াছিলেন। রমেশচন্দ্রের নিজের কথায় : "... On principle inter-caste marriage is a duty with us, because it unites the divided and enfeebled nation, and we should establish this principle (as well as widow marriage, &c.) safely and securely in our little society, so that the greater Hindu Society, of which we are only a portion and the advanced guard, may take heart and follow. I cannot tell you how deeply I have felt this for years past; of my last two novels “Sansar" goes in for widow marriage, and, "Samaj"... goes in for inter-caste marriage.” ( ১০-২-১৮৯৪ তারিখে লিখিত পত্রাংশ ।) r এবারে আমরা পনরায় এই দুইখানি উপন্যাস সম্বন্ধে ডক্টর শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের ु ब्रूड पिन अिन ७ पिन व्यिक् अिन अछाना স্না বলেন : “ ‘সংসার’ ও ‘সমাজে রমেশচন্দ্র ইতিহাসের কোলাহল হইতে শান্ত পল্লীর সৌন্দয্যের মধ্যে, আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষুদ্র সখেদঃখের কথায় ফিরিয়া আসিয়াছেন। এই দইখানি উপন্যাসে তিনি নতেন শক্তির পরিচয় দিয়াছেন। তাঁহার কল্পনা এতদিন ইতিহাসের সবিশাল ক্ষেত্রে সমরণীয় ঘটনাসমহের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল; সমাজ ও পরিবারের ক্ষুদ্র ব্যাপার লক্ষ্য করিতে তিনি অবসর পান নাই। কিন্তু তাঁহার শেষ উপন্যাসদ্বয়ে তিনি নিঃসন্দেহে প্রমাণ করিয়াছেন যে, ইতিহাসের বিশাল, ও সমাজের সঙ্কীণ, এই উভয় ক্ষেত্রেই তাঁহার তুল্য অধিকার ও সমান শক্তি আছে। " সংসার’ ও ‘সমাজে তিনি পল্লী গ্রামের পারিবারিক জীবনের এমন একটি সন্দের, রসপণ, সহানুভূতিমলেক চিত্ৰ দিয়াছেন, যাহা বঙ্গসাহিত্যে নিতান্ত সলভ নহে। প্রথম দটিতে ইহার মধ্যে কিছু বিশেষত্ব দেখা যায় না, কোনরপে উচ্চাঙ্গের সজনীশক্তি, উচ্চস্তরের সমালোচনা লক্ষ্য হয় না। মনে হয় যেন সমস্তই কেবল বাস্তব বর্ণনা, পল্লী সমাজের নিখ:ত ফোটোগ্রাফ মাত্র। ইংরেজ ঔপন্যাসিকদের মধ্যে Jane Austen পড়িতে পড়িতে অনেকটা এইরুপ ভাবের উদয় হয়। লেখিকা এমন সহজ, সরলভাবে ঘটনাবিরল, প্রাত্যহিক জীবনের চিত্ৰ দিয়া যান, এতই সাবধানে বিশ্লেষণ বাহুল্য ও গভীরতা বজন করেন যে, আমরা মনে করি যে ইহার মধ্যে বিশেষ কিছু কলাকৌশল নাই, এবং কেবলমাত্র সক্ষম পৰ্য্যবেক্ষণশক্তির অধিকারী হইলেই আমরাও ঐরাপ লিখিতে পারিতাম। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইহার অপেক্ষা ভ্রান্ত ধারণা আর কিছুই নাই; খুব উচ্চ রকমের কলাকৌশল না থাকিলে নিতান্ত সাধারণ উপাদান হইতে এত সন্দের ও মমপশী উপন্যাস রচনা করা যায় না। যে আট আত্মগোপন করিতে পারে, নিজের সমস্ত বাহ্য লক্ষণ প্রচ্ছন্ন রাখিতে পারে, তাহাই উচ্চতম আট"।” (পঃ ৪৭) ডক্টর শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় রমেশচন্দ্রের ঐতিহাসিক ও সামাজিক উপন্যাসগুলির সঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্র ও শরৎচন্দ্রের কোন কোন উপন্যাসের একটি মনোজ্ঞ সংক্ষিপ্ত পযালোচনা করিয়াছেন। তাঁহার আলোচনা হইতে এই অংশটি এখানে দেওয়া হইল : “.....রমেশচন্দ্র ঐতিহাসিক ও সামাজিক দই প্রকার উপন্যাসেই নিজ ক্ষমতার পরীক্ষা করিয়াছেন। ঐতিহাসিক উপন্যাসে তিনি সমধিক কৃতিত্ব দেখাইয়াছেন—তাঁহার জীবন প্রভাত’ ও জীবন সন্ধ্যা’ বঙ্গসাহিত্যে খাঁটি ঐতিহাসিক উপন্যাসগুলির শীর্ষস্থান অধিকার করিয়াছে। রমেশচন্দ্রের ঐতিহাসিক উপন্যাসের অনেকগুলি গণ আছে—তিনি বর্ণিত যাগের বিশেষত্বটুকু উপলব্ধি করেন, বীরত্ব-কাহিনীর উন্মাদনা নিজ রক্তের মধ্যে অনুভব করেন ও বণিত বিষয়ের মধ্যে একটা ভাবগত ঐক্য স্থাপন করিতে পারেন। অবশ্য ঐতিহাসিক উপন্যাসের আর একটা গণ—সাধারণ সামাজিক জীবনের উপর ইতিহাসের বিশাল ঘটনাগুলির প্রভাব-চিরণ তাঁহার