পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रटधभ ब्रळनाबब्जी বিন্দর। তোমাদের জমিদারীর শুনেছি অনেক আয়, তোমার স্বামীর অনেক গাড়ীঘোড়া আছে, তা বাড়ীতে চাকরদাসী রাখেন না কেন ? কালী। না দিদি, আয় জেয়াদা নেই, খরচ শুনেছি বিস্তর হয়, ধারও কিছু হয়েছে শুনেছি, তা আমি বাড়ীর ভিতর থাকি, ওসব কথা ঠিক জানি না। আমাদের একখানা বাগানবাড়ী আছে, বাব সেইখানে থাকেন, তাঁর শরীরও অসুস্থ, বাড়ীতে প্রায় আসেন না, তা কাজকমের কি জানবেন ? আমার শ্বাশুড়ীরাই কাজকম দেখেন শানেন। ঝি রাখবেন কেমন করে বল, আমাদের বাড়ীর ত সে রীতি নয়, বাইরের লোকেদের কি ছাতে আছে ? কাজেই বোঁদের সব করতে হয়। বিন্দর। তা তোমাদের ধারটার হয়েছে বোন, তা খরচ একটা কমাও না কেন? শুনেছি তোমার স্বামী অনেক খরচ করে সাহেবদের খানাটানা দেন, অনেক ঘোড়া রাখেন,—তা এসবগলো কেন ? তোমার স্বামীকে যেমন আয়, তেমনি ব্যয় করতে বলতে পার না ? কালী। ও মা ! তাঁকে কি আমি সে কথা বলতে পারি? তিনি বিষয়কম বুঝেন, আমি বোঁ মানুষ হয়ে কোন লজায় তাঁকে একথা বলবো ? তবে কখন কখন যখন আমাদের বাড়ীতে বেড়াতে আসেন, আমার খড়শ্বাশুড়ীরা তাঁকে ঐরকম কথা দুই একবার বলেছিলেন শুনেছি। বিন্দর। তা তিনি কি বলেন ? কালী। বলেন, আমাদের ভারি বংশ, দেশে কুলের যেমন মৰ্য্যাদা, সাহেবদের কাছে বনিয়াদি বড়মানুষ-বংশ বলে তেমনি মৰ্য্যাদা, তা সাহেবদের খানাটানা না দিলে কি হয় ? শুনেছি সাহেবরাও তাঁকে ভালবাসেন, এই যে কত “কমিটী” বলে না কি বলে, বদ্ধমানে ষত আছে, বাব সবেতেই আছেন। আর রোগা শরীর, তব গাড়ী করে প্রত্যহ সাহেবদের বাড়ী দলবেলা যাওয়াআসা আছে, সাহেব মহলে নাকি তাঁর ভারি মান । সরলস্বভাব কালীতারার এই বামি-গৌরব বর্ণনা শুনিয়া বিন্দ একট হাসিলেন, অভিমানিনী উমা একটু ঈষায় ভ্রকেটী করিলেন। বিন্দ । আচ্ছা কালী, তোমাদের বাড়ীর মধ্যে এখন গিন্নী কে ? কালী। আমার শ্বাশুড়ী ত নেই, কাজেই আমার তিনজন খড়েশ্বাশুড়ীই গিন্নী। বড় যে সে ভাল মানুষ, প্রায় কোনও কথায় থাকে না, মেজোই কিছ রাগী, সকলেই তাকে ভয় করে, বেীরা ত দেখলে কাঁপে। আহা, সে দিন আমার খড়তুতো ছোট জা রান্নাঘর থেকে কড়া করে দুধ আনতে পড়ে গিয়েছিল, গরম দুধে তার পায়ের ছালচামড়া পড়ে গিয়েছে। তাতে তার যত কস্ট না হয়েছিল, শ্বাশুড়ীর ভয়ে প্রাণ একেবারে শকিয়ে গিয়েছিল । আমার মেজো খড়শ্বাশুড়ী ঘাট থেকে নেয়ে এসে যেই শনলে যে দধে অপচে হয়েছে, অমনি মড়ো থেঙরা নিয়ে তেড়ে এসেছিল, আহা আমনি বকুনি বকলে, বাপমা তুলে এমনি গাল দিলে, আমার ছোট জা চোকের জলে নাকের জলে হল । আহা কাঁচ মেয়ে, দশ বছর মাত্র বয়স, ভয়ে তিন দিন ভাল করে ভাত খেতে পারেনি। উমা। তা তোমাকেও কি অমনি করে বকে ? কালী। তা বকবে না, দোষ করলেই বকবে, তা না হলে কি সংসার চলে ? উমা ! তোমাকে যখন বকে, তুমি কি কর ? কালী। চুপ করে কাঁদি, আর কি করব বল ? অভিমানিনী উমা একট হাসিয়া বলিলেন, “আমি ত তা পারিনি বাবা, কথা আমার গায়ে সহ্য হয় না।” কালী। তা, হ্যাঁ বিন্দ দিদি, শ্বশুরবাড়ীতে কেউ গাল দিলে আর কি করব বল ? একটী কথার জবাব দিলে, আর পাঁচটা কথা শুনতে হয়। তা কাজ কি বাবা, শ্বাশুড়ীই হক আর ননদই হক, কেউ দই কথা বললে চুপ করে থাকি, আবার তখনই ভুলে যাই। কথা ত আর গায়ে ফোটে না, কি বল বিন্দ-দিদি। বিন্দর। তা বেশ কর বোন, কথা বরদাস্ত করতে পারলেই ভাল, তবে সকলের কি আর বরদাস্ত হয়, তা নয়। আচ্ছা, তোমার ছোট খড়েশ্বাশুড়ীও শুনেছি নাকি রাগী। কালী। হাঁ, রাগী বটে, তা মেজোর সঙ্গে ত আর পারে না, রাগ করে দল একটা কথা বলে আপনার ঘরের ভিতর খিল দিয়ে থাকে, মেজো এক কথায় পচিশ কথা শুনিয়ে দেয়। মেজোর ○○ bf