পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्भव्य ब्रफ़नाबव्नौ উমার বিশ্ববিনিন্দিত সন্দের সক্ষম ওঠে একট হাস্যকণা দেখা গেল, উজ্জল নয়নশ্বয়ে যেন একট লান ছায়া পড়িল। তিনি ধীরে ধীরে বলিলেন, "কালীদিদি, যদি সাদা জড়ি, কালো জড়ি আর মাবেলের ঘর হলে সুখ হয়, তা হলে আমি সখী হব, কিন্তু কপালের কথা কে বলতে পারে?” সক্ষদশী বিন্দ দেখিলেন, উমা ধীরে ধীরে একটা দীঘ নিঃশ্বাস পরিত্যাগ করিলেন। ক্ষণেক সকলে মৌন হইয়া রহিলেন, তাহার পর উমা আবার বলিলেন, বিন্দ দিদি ! আমাদের ছেলেবেলায় এই গ্রামে একজন সন্ন্যাসী এসেছিল মনে পড়ে, সে আমাদের হাত দেখেছিল মনে পড়ে ? বিন্দর। কৈ, মনে পড়ে না। উমা। সে কি দিদি, তুমি আমার চেয়ে বড়, তোমার মনে পড়ে না ? কালীদিদির বোধ হয় মনে পড়ে ! কালী। কৈ না, আমারও মনে নেই। উমা। তবে বুঝি সে কথাটী আমার মনে লেগেছিল, তাই আমার মনে আছে। ঠিক বার বছর হল, এই বৈশাখ মাসে একদিন এমনি সন্ধ্যার সময় এইখানে খেলা করছিলেম, একটা একটা অন্ধকার হয়েছে, আর একট একট চাঁদের আলো দেখা দিয়েছে, এমন সময় একজন জটাধারী সন্ন্যাসী ঐ জঙ্গলটার ভিতর হতে বেরিয়ে এল। আমরা ভয়ে কাঁপতে লাগলেম, কিন্তু সন্ন্যাসীটী কাছে এসে বললে, ভয় নেই, তোমরা পয়সা নিয়ে এস, আমি তোমাদের হাত দেখব। আমি মার কাছে সেই দিন ৪টা পয়সা পেয়েছিলেম, ভয়ে তা সন্ন্যাসীকে দিলেম । তখন সন্ন্যাসী খসী হয়ে হাত দেখে বললে, “মা, তুমি বড় ধনবানের পত্নী হবে গো, তুমি কিছু ভেবো না।” তখন কালীও হাত দেখাবার জন্যে বাড়ী থেকে একটা পয়সা এনে দিলে, সন্ন্যাসী সেটী নিয়ে বললে, “তোমার ধনটন হবে না, তুমি ভাল বংশের বউ হবে।” বিন্দ হাসিয়া বলিলেন, “আর জটাধারী মশায় আমার কি ব্যবস্থা করলেন ?” উমা। তাই বলছি, তোমার মা ঘাটে গিয়েছিলেন, তাঁর কাছে পয়সাটয়সা বড় থাকত না. তুমি শধে হাতে হাত দেখাতে এলে । সন্ন্যাসী বললে, “মা, তোমার ধনও নেই, বংশও নেই, গরিবের ঘরে ঘর নিকিয়ে গরিবের ভাত খাবে।” এই বলে সব পয়সাগুলি তোমার হাতে দিয়ে সন্ন্যাসী চলে গেল । বিন্দ হাসিয়া বলিলেন, “তা বেশ ব্যবস্থা করেছিল ত। এখন আমার মনে পড়েছে, গ্রামের লোকে সন্ন্যাসীটীকে রামপ্রসাদ সরস্বতী বলত। উমা। হ্যাঁ হ্যাঁ, সেই সরস্বতী ঠাকুর । তোমার মা পর্কুের হতে জল এনে জিজ্ঞেসা করায় আমি সবকথা বললেম। তখন তিনি অচিল দিয়ে তোমার চক্ষের জল মুছিয়ে বললেন, “তা হক, বাছা বেচে থাক, বে থা হক, চির এইসন্ত্রী হয়ে থাকিস, যেন গরিবের ঘরে ঘর নিকিয়েই সুখে থাকিস । বাছাধন, কুলে সুখ হয় না, ধন কুলে তোর কাজ নেই।" বিন্দ দিদি, এই কথাটী আমার কেবল মনে পড়ে, ধন বা কুল হলেই যদি সুখ হত, তবে পৃথিবীতে আর অভাব থাকত না। বিন্দর। ও কি ও উমা, তুমি ছেলেবেলাকার একটা কথা মনে করে চখের জল ফেলছ কেন ? তোমার আবার সখের অভাব কিসে উমা ? তুমি যদি ভাববে, তবে আমরা কি করব ? উমা। না দিদি, আমার কন্ট কিছুই নেই, আমার কষ্ট আছে বলে আমি দুঃখ করছি না। কিন্তু জানি না, কেন এই কলকেতায় যাব বলে কয়েক দিন হতে মনে অনেক সময়, অনেক রকম ভাবনা উদয় হয়। ভবিষ্যতের কথা ভগবানই জানেন ! তা বিন্দ দিদি, তুমি কলকেতায় যাচ্ছ, আর কালীদিদিও বদ্ধমানে আছেন, শুনেছি সেও কলকেতা হতে ৩ । ৪ ঘণ্টার পথ ; আমরা ছেলেবেলা যেমন তিন বোনের মত ছিলেম, যেন চিরকাল সেই রকম থাকি, আপদবিপদের সময় যেন পরস্পরকে ভগিনীর মত জ্ঞান করে সেই রকম ব্যবহার করি। সহসা উমার মনের বিকার দেখিয়া বিন্দ ও কালীর মনও একটা বিচলিত হইল, তাঁহারা আচিল দিয়া উমার চক্ষের জল মোচন করিলেন, এবং অনেক সান্থনা করিয়া রাত্রি এক প্রহরের সময় বিদায় লইয়া আপন আপন গহে গেলেন। ○ りO