পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৩৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झणन्न भीब्रट्झन : कर्गजकाङाम्न स्नात्राश्रम ইহার কয়েকদিন পর হেমচন্দ্র সপরিবারে কলিকাতা যাত্রা করিলেন। যাত্রার পর্বে দিন বিন্দ আপন পরিচিত গ্রামের সকল আত্মীয়া কুটবিনী ও বন্ধর সহিত সাক্ষাৎ করিয়া বিদায় লইয়া আসিলেন। তালপুকুরে সেদিন অনেক আশ্রজেল বহিল। যাইবার দিন অতি প্রত্যুষে বিন্দ আর একবার জ্যেঠাইমার নিকট বিদায় লইতে গেলেন। বিন্দর জ্যেঠাইমা বিন্দকে সত্যই স্নেহ করিতেন, বিন্দর গমনে প্রকৃত দঃখিত হইয়াছিলেন। অনেক কান্নাকাটি করিলেন, বলিলেন, "বাছা, তোরা আমার পেটের ছেলের মত, আমার উমাও যে, বিন্দ সন্ধাও সে, আহা তোদের হাতে করে মানুষ করেছি, তোদের ছেড়ে দিতে আমার প্রাণটা কে’দে উঠে। তা যা বাছা, যা, ভগবান করন, হেমের কলকেতায় একটা চাকরী হক, তোরা বেচে বত্তে সখে থাক, শানেও প্রাণটা জড়বে। বাছা উমা শ্বশুরবাড়ী গেছে, তাকেও নাকি কলকেতায় নিয়ে যাবে, এই জ্যৈষ্ঠ মাসে নিয়ে যাবে বলে আমার জামাই পীড়াপীড়ি করছে। শনলেম সে নাকি কলকেতায় নতন বাড়ী কিনেছে, বাগান কিনেছে, গাড়ীঘোড়া কিনেছে, ঐ ঘোষেদের বাড়ীর শরৎ সেদিন বলছিল, তেমন গাড়ীঘোড়া সহরে নেই। তা ধনপরের জমিদারের ঝাড়, হবে না কেন বল ? - আমন টাকা, অমন বড়মানুষী চালচোল ত আর কোথাও নেই। ঐ ওমাসে আমি একবার বেনের বাড়ী গিয়েছিলেম, বকলে কিনা, তা এই নীচে থেকে আর তেতলা পয্যন্ত সব বেলওয়ারীর ঝাড় টাঙ্গিয়েছে। আর লোকজন, জিনিসপত্র, সে আর কি বলব। সেদিন প্রায় পঞ্চাশ জন মেয়ে খাইয়েছিল, বকেলে কিনা, তা সবাইকে রপোর থাল, রপোর রেকবী, রপোর গেলাস, রপোর বাটী দিয়েছিল! আর আমার বেনের কথাবাত্রাই বা কেমন। তারা ভারি বড় মানুষ, তাদের রীতিই আলাদা। এই আমার জামাইও শুনেছি নতুন বাড়ী করে খুব সাজিয়েছে, ঝাড়, লন্ঠন, দেয়ালগিরি, গালচে, মকমলের চাদর, বুঝলে কিনা, আর কত সোণা, রপো, সাদা পাথরের সামগ্রী, তার গোনাগস্তি করা যায় না। তা তোমরা চোখে দেখবে বাছা, আমি চোখে দেখিনি, তবে কলকেতা থেকে একজন লোক এসেছিল, সেই বল্লে যে * * * ইত্যাদি ইত্যাদি। “তা বেচে থাক বাছা, সখে থাক, আমার উমার সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ হবে, দটী বোনের মত থেকো। আহা বাছা! তোদের নিয়েই আমার ঘরকন্না, তোদের না দেখে কেমন করে থাকব ? (রোদন) তা যা বাছা, বাছা উমাও শিগগির যাবে, তার সঙ্গে দেখা করিস, না হয় তাদের বাড়ীতে গিয়েই দিন কত রইলি। তাদের ত এমন বাড়ী নয়, শুনেছি যে মস্ত বাড়ী, অনেক ঘরদরজাবুঝলে কিনা * * * ইত্যাদি ইত্যাদি। অনেক আশ্রজেল বষণ করিয়া জ্যেঠাইমার কাছে বিদায় লইয়া বিন্দ একবার শরতের মাতার নিকট বিদায় লইতে গেলেন। শরৎ কলিকাতায় যাইয়া অবধি তাঁহার মাতা প্রায় একাকী বাড়ীতে থাকিতেন, শরৎ অনেক বলিয়া কহিয়া একটী ঝি রাখিয়া দিয়াছিলেন, কিন্তু একটী বামনী রাখিবার কথায় শরতের মাতা কোন প্রকারে সম্মত হইলেন না। বাড়ীটী প্রশস্ত, বাহির বাটীতে একটী পাকা ঘর ছিল, শরৎ কলিকাতা হইতে আসিলে সেইখানেই আপনার পস্তেকাদি রাখতেন ও পড়াশনা করিতেন। বাড়ীর ভিতরেও দুই তিনটী পাকা ঘর ছিল, আর একটী খোড়ো রান্নাঘর ছিল। তাহার পশ্চাতে একটী মধ্যমাকৃতি পুকুর ছিল, শরৎ তাহা প্রতিবৎসর পরিকার করাইতেন । শরতের মাতা গৌরবণ, দীঘ"াকৃতি ও ক্ষীণ ছিলেন, বিশেষ স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি আর শরীরের যত্ন লইতেন না, সতরাং আরও ক্ষীণ হইয়া গিয়াছিলেন। কি শীতে, কি গ্রীমে তিনি অতি প্রতাষে উঠিয়া স্নান করিতেন, এবং একখানি নামাবলী ভিন্ন অন্য উত্তরীয় ব্যবহার করিতেন না। স্নান সমাপনান্তর প্রত্যহ প্রায় এক প্রহর ধরিয়া আহ্নিক করিতেন, তাহার পর স্বহস্তে রন্ধনাদি করিতেন। স্বামীর মৃত্যুতে ও কলাঁতারুর কন্টের চিন্তায় বিধবার শরীর দিন দিন শীর্ণ হুইয়া আসিতেছিল, মাথার চুল অনেকগুলি শক্লে হইয়াছিল, অকালে বাদ্ধক্যের দাবীলতা উপস্থিত হইয়াছিল। তিনি সমস্ত দিন দেব-আরাধনায় ও পারমাথিক চিন্তায় অতিবাহিত করিতেন। ○や>