পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংসার ছেলে, তুমি মাকে ভালবাস, আমি এ নিন্দার কথা বিশ্বাস করি না; তুমি তোমার অভাগিনী মাতাকে কটে দিবে না। “লোকে বলে, তুমি সন্ধাকে বিবাহ করিতে ইচ্ছা করিয়াছ। বাছা, এটী অধমের কথা, এ কাজটা করিয়া তোমার বাপের নিম্মল কুলে কলঙ্ক দিও না, তোমার মা যত দিন বেচে আছে, তাহাকে তুমি কস্ট দিও না। বাছা, তুমি ত কথার অবাধ্য ছেলে নও। “বাছা শরৎ, আমি অনেক কট সহ্য করেছি। তোমার বাপ আমাকে কাঁদিয়ে রেখে গিয়েছেন, বাছা কালীর যে অবস্থা, তা তুমি জান। তুমি আমার হৃদয়ের ধন, তোমার আশায় বেচে আছি, এ বয়সে তুমি আমাকে কাঁদাইও না, আমার অধিক দিন বাঁচবার নেই। “আমার মাথার চুলের মত তোমার পরমায় হোক। ভগবান তোমাকে সংসারে সখ দান করন, পশ্যকমে তোমার মতি হোক। এ অভাগিনী আর কি আশীৰুবাদ করবে ?” শরৎ একবার, দুইবার, তিনবার এই পত্র পাঠ করিলেন। তাঁহার হাত কাঁপতে লাগিল, দু:তি আলি বল ত হয় নাম পলি লে ন ঘৰত য় ভূতলে ! अक्छबिरन नब्रिटन्छ्म : श्राऊा ७ जख्ठान সে দিন রাত্রিতে শরৎ যে যাতনা ভোগ করিয়াছিলেন, তাহা বর্ণনা করিতে আমরা অক্ষম। নৈরাশ্যের কৃষ্ণবর্ণ ছায়া তাঁহার হৃদয়কে আবত করিল, ঘণা ও লজা তাঁহাকে ব্যথিত করিল, বন্ধর সব্বনাশ করিয়াছেন, এই চিন্তা শত বশিচকের ন্যায় তাঁহাকে দংশন করিতে লাগিল। যে সবপ্লবৎ সখের আশা ছয় মাস ধরিয়া শরৎ হৃদয়ের হৃদয়ে সযত্নে ধারণ করিয়াছেন, তাহা অদ্য জলাঞ্জলি দিবেন ? মাতৃআজ্ঞা পালনাথ শরৎ তাহা করিতে প্রস্তুত আছেন। সমস্ত জীবন সখশন্য, উদ্দেশ্যশন্যে, আশাশন্যে হইবে, মরুভূমির ন্যায় শতক ও রসশন্য হইবে, দাবহ জীবনভার বহন করিতে পারবেন ? মাতৃআজ্ঞার জন্য শরৎ তাহাতেও প্রস্তুত আছেন। কিন্তু জীবনের প্রিয়তম বন্ধ হেমচন্দ্র ও বিন্দর নামে আজি ষে কলঙ্ক রটিল, সমাজে তাহাদিগকে কি সহ্য করিতে পারবেন ? লোকে এখন বলিবে, ঐ দুইজনে একটা নস্টা বিধবাকে শরতের সঙ্গে বিবাহ দিতে চাহিয়াছিল, শরৎ বুঝিয়া সঝিয়া সে বিবাহ করিলেন না, ব্যভিচারিণীটা হেমবাবরে ঘরেই আছে, এ হৃদয়-বিদারক কথা কি শরৎ সহ্য করিতে পারবেন ? যে বিন্দ বাল্যকালাবধি শরতের স্নেহময়ী ভগিনীর ন্যায়, তাঁহার প্রতি শরৎ এইরুপ আচরণ করবেন ? যে হেমবাক স্বীয় ঔদায্যগণে শরৎকে ভ্রাতার ন্যায় ভালবাসিতেন, লোকনিন্দা তুচ্ছ করিয়া আজি কেবল শরৎ ও সাধার মাখের দিকে লক্ষ্য করিয়া শরতের বিষম প্রস্তাবেও সম্মত হইয়াছিলেন, তাঁহাকে কি শরৎ জগতের তিরস্কার ও ঘৃণার পদাৰ্থ করবেন ? যে স্নেহপর্ণ নিকলঙ্ক পরিবারে প্রবেশ করিয়া শরৎ এতদিন শান্তি লাভ করিয়াছিলেন, আজি কি কুটিলগাঁত বিষধর সপোর ন্যায় তাহাদিগকে দংশন করিয়া চলিয়া আসিবেন ? কালবিষে সে পরিবার জজরিত হউক, ধবংস প্রাপ্ত হউক, অনপনেয় কলঙ্ক-সাগরে নিমগ্ন হউক, শরৎ নিঃসঙ্কুচিত চিত্তে তাহাদিগকে ত্যাগ করিয়া আসিবেন ? এ চিন্তা শরতের অসহ্য হইল, অসহ্য বেদনায় চীৎকার করিয়া উঠিলেন, “মাতা, ক্ষমা কর, আমি এ কাজটী পারিব না।" আর সেই ধাম-পরায়ণা, পবিত্র-হৃদয়া হতভাগিনী সন্ধা ? ছয় মাস পাবে সে বালিকা ছিল, প্রণয়ের কথা জানিত না, বিবাহের কথা মনে উদিত হয় নাই। এই ছয় মাসের মধ্যে শরৎই তাহাকে প্রণয় শিখাইয়াছে, বালিকার হৃদয়ে নতন ভাব, নতন চিন্তা, নতন আশা জাগরিত হইয়াছে। আহা! উষার আলোক যেরপে নিস্তন্ধে ধীরে ধীরে সাপ্ত জগতে ও গভীর আকাশে প্রসারিত হয়, এই মতন আশা অনাথিনী বিধবার হৃদয়ে সেইরূপ ব্যাপ্ত হইয়াছে, আজি লজাবতী নম্নমুখী বিধবা তৃষ্ণাত্ত চাতকের ন্যায় প্রণয়-বারির জন্য চাহিয়া রহিয়াছে। এখন শরৎ তাহাকে বঞ্চিতা করিকেন ? চিরকাল হতভাগিনী করবেন; কলঙ্কে কলঙ্গিকতা করিয়া তাহাকে এই নিষ্ঠুর সংসার-মধ্যে ত্যাগ করিবেন ? হয়ত অসহ্য অবমাননা ও কলঙ্কে দগ্ধহৃদয়া হইয়া অকালে সে প্রাণত্যাগ করবে, অথবা চিরজীবন হৃদয়ে এই নিষ্ঠর শেল বহন করিয়া জীবন্মত হইয়া B్పరి