পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बक्रविट्छडा —h বোধ হয়, মিস্টতার আধার, আর সদা সহাসিতে বিকশিত। গাছ গুচ্ছ নিবিড় কৃষ্ণ কেশ ৱদনমণ্ডলের সরল কিশোর ভাব অধিকতর বন্ধন করিতেছে। সব্বাঙ্গ কোমল ও সারিন্ধ । সমস্ত দিন পরিশ্রমের পর শয্যায় শয়ন করিতে না করিতে নিদ্রার আবির্ভাব হইল, প্রসফটিত পদ্ম যেন পনরায় মুকুলিত হইয়া কোরকভাব ধারণ করিল। যে কুটীরে মাতা ও কন্যা বাস করিতেন, সে কুটীর অতিশয় সামান্য। ক্ষুদ্র একটী পাকশালা ও একটী গোশালা ছিল, এতস্তিন্ন দুইটী বড় ঘর ছিল, তাহার মধ্যে একটীতে মাতা, কন্যা ও একমাত্র দাসী শয়ন করিত, অপরটীতে দিনের বেলা কমকায্য হইত এবং কোন অতিথি আসিলে তাঁহার শয্যা রচনা হইত। গোশালায় দই তিনটী গাভী থাকিত; প্রাঙ্গণে একটী গোলা ছিল, তাহাতে কিছু ধান্য সঞ্চিত থাকিত। গহপাশ্বে একটী ক্ষুদ্রায়ত বাগান ছিল, তাহাতে কতকগলি ফলব্যক্ষ ছিল, আর সরলা কতকগুলি পাপের চারা রোপণ করিয়াছিল। যদিও কুটীর সামান্য, তথাপি কোনও আগন্তুক আসিলেই অনায়াসেই অনুভব করিতে পারিতেন যে, কুটীরবাসিনীগণ নিতান্ত সামান্য লোক নহেন। গাহের মধ্যে সকল দুবাই পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন। বসন যৎসামান্য, কিন্তু পরিচ্ছন্ন ; ঘরগুলিও যৎসামান্য, কিন্তু পরিক্ত; প্রাঙ্গণে তৃণমাত্র নাই। কুটীরবাসিনী কায়স্থরমণীদিগের আচারব্যবহার দেখিয়া প্রথমে গ্রামবাসিগণ নানাপ্রকার আলোচনা করিত। এক্ষণে ছয়-সাত বৎসরাবধি তাঁহাদিগকে সেই গ্রামে বাস করিতে দেখিয়া সকলেই নতন অনভেবে বিরত হইল; সকলেই সিদ্ধান্ত করিল যে, মহাশ্বেতা কোনও কায়স্থ জমীদারের বিধবা হইবেন, বিষয়সম্পত্তি হারাইয়া, ভদ্রাসন ত্যাগ করিয়া কন্যাকে লইয়া এই গ্রামে আশ্রয় লইয়াছেন। এদিকে মহাশ্বেতা বহু সমান করিয়া শিখণ্ডিবাহন ব্রহ্মচারীকে আহার করাইয়া আপনিও কিছ জলযোগ করিলেন। পরে ব্রহ্মচারীকে আসনে উপবেশন করাইয়া আপনি ভূমিতে বসিয়া কথোপকথন করিতে লাগিলেন। সমস্ত রারি কথোপকথন হইতে লাগিল; আমরা তাহার কিয়দংশ বিবত করিব। শিখডিবাহন বলিলেন,—ভগিনি । আমি পিতা চন্দ্রশেখরের নিকট হইতে আসিতেছি, তিনি সম্প্রতি তীর্থ হইতে প্রত্যাগমন করিয়াছেন। আজি সাত বৎসর হইল, পিতা তীথে" গিয়াছিলেন, সাত বৎসরে হিমালয় হইতে কাবেরী-তীর পয্যন্ত সমস্ত তীথ পয্যটন করিয়াছেন । মহাশ্বেতা। পিতার সাথক জীবন। শিখন্ডি। অবশেষে বঙ্গদেশে প্রত্যাবৰ্ত্তন করিয়াই শুনিলেন যে, পাঠান রাজ্য বিলুপ্ত হইয়াছে, দিল্লীশ্বরের হিন্দুসেনাপতি টোডরমল্ল এ দেশ জয় করিয়াছেন। আরও শুনিলেন যে, বঙ্গদেশের সমরসিংহের কাল হইয়াছে। পরে আমার প্রমুখাৎ তোমার ব্লতের বিষয় শনিয়া বিস্মিত হইলেন। তিনি ব্রতের সম্বন্ধে কোন মতামত প্রকাশ করিলেন না, কিন্তু আমার আশঙ্কা হইতেছে, এ ব্রত হইতে অনিটের সম্ভাবনা । ভগিনি, এখনও ক্ষাস্ত হও । মহাশ্বেতা বলিলেন,—ভ্রাতঃ ! এ অনুরোধ হইতে আমাকে মাজনা করন। এ ব্ৰত আমার প্রাণের অংশ বরাপ ও জীবনের অবলম্বন স্বরুপ হইয়াছে। এত শোক, এত মনস্তাপ সহ্য করিয়া যে আমি জীবিত আছি, এই ভয়ানক অবস্থার পরিবত্তনেও যে আমি স্বচ্ছন্দে আছি, সে কেবল এই ব্রতের নিমিত্ত। যে দিন ব্রত উদযাপিত করিব, সেদিন আমাকে জীবন পরিত্যাগ করিতে হইবে। এই উত্তর শ্রবণ করিয়া শিখণ্ডিবাহন ব্রতত্যাগের অনুরোধ হইতে নিরস্ত হইলেন। ক্ষণেকপর বলিলেন,—বৈরনিৰ্য্যাতনের কোন বিশেষ উপায় অবলম্ববন করিতেছ ? মহাশ্বেতা বলিলেন,-আমি এক সিদ্ধ পরেষের নিকট একটী ভীষণ মন্ত্র লইয়াছি। তিনি এই মন্ত্র-সাধনের জন্য যে অনুষ্ঠান বলিয়া দিয়াছেন তাহাও ভীষণ, কিন্তু সে অনুষ্ঠানে আমি স্থিরপ্রতিজ্ঞ হইয়াছি। প্রত্যহ সন্ধ্যার সময় স্নান করিয়া নিশা দ্বিপ্রহর পয্যন্ত দেবদেব মহাদেবের সেই মন্ত্রদ্বারা আরাধনা করিব;—যতদিন মহাদেব শত্রনিপাত না করেন, ততদিন কন্যা অবিবাহিতা থাকিবে--সপ্তমবষের মধ্যে শত্রানিপাত না হইলে কুমারীকন্যাকে মহাদেবের নিকট হত্যা দিয়া চিতারোহণ করিব । অনেকক্ষণ উভয়েই নিস্তব্ধ হইয়া রহিলেন। ব্রহ্মচারী পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেনতোমার ব্ৰত কি তাহা আমি অবগত আছি। জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, বৈরনিষ্যাতন সাধনের জন্য এই ব্রতধারণ ভিন্ন অন্য কোন উপায় অবলম্বন করিয়াছ ? Ők