পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

मृत्वमाछ আর দেখছ কি ভায়া, আমার যথাসব্বস্ব তোমাদেরই। তোমার বংশের উন্নতি হউক, তোমার ভগিনী আমার গহের গহলক্ষী হউক, তোমার মাতা ঠাকুরাণী দীর্ঘজীবী হউন, এবং তোমারও ত উপাজন হইতেছে, তুমিও একটী বিবাহ করিয়া তোমাদের পরাতন ঘর বজায় রাখ। বলিল,—আমরা ত আপনাদেরই দাস, যখন আজ্ঞা করিবেন, আমার ভগিনী আপনার হইবে। তবে আমরা আপনার সহিত কুটবিতা করি, এরপে আমাদের অবস্থা কৈ ? পৈতৃক ভাঙ্গা ঘরে আমরা বাস করি, তাহার ইটকাঠ নাই। তা আমাদের ঘর বজায় থাকা যে বলছেন সে আপনারই অনগ্রহের উপর নিভীর। যখন এ দীনদের প্রতি দণ্টি করিয়া কুটবিতায় স্বীকার হইয়াছেন, তখন যাহাতে আমাদের ঘর বজায় থাকে, পরাতন গহটীর সংস্কার হয়, সুকু ফুল বাদ দে দক পাস দন্ত পদ এল পদ অলং আপনি ! বৃদ্ধিমান তারিণীবাব দেখিলেন, বালক গোকুলচন্দ্র এতদিন ব্যথা বদ্ধমান নগরীতে কাজ করে নাই, সেও বিষয়বৃদ্ধিতে নিপুণ হইয়াছে-ভগিনীকে বিক্রয় করিয়া কিছু টাকা আদায় করিবার উপায় করিতেছে! টাকার কথা উত্থাপন হওয়ায় নাজির মহাশয়ের বকেটা একবার দমিয়া গেল, কিন্তু আবার সেই ফটফুটে মেয়েটার প্রফুল্ল ওষ্ঠ (দই দিন পবে যাহার মধ্য আসবাদন এরিয়াছিলেন) তাঁহার মনে পড়িল, বন্ধের ঠোঁট দিয়া নাল পড়িতে লাগিল। হাসাগদগদ বরে বলিলেন ; বল বল ভায়া, তোমার কি মতলব, তাহাই বল। আমার সমস্ত সম্পত্তি ত তোমাদেরই দিতে বসিয়াছি, তা এখনই দি, আর পরেই দি। গোকুল। যদি আজ্ঞা করেন ত বলি, কিন্তু আপনার নিকট বলাই বাহুল্য, আপনি সমস্তই জানেন। আমাদের বাহিরের ও ভিতরের ইন্টকাবশিষ্ট ঘর,—যাহা আপনার পদধলিতে পবিত্র হইবে,—সেই ঘর পুনঃসংস্কার করিতে হইবে। খিড়কীর পুকুরটী,—যাহাতে আপনি পণ্য শরীরে অবগাহন করিবেন,—তাহাও সংস্কার করিতে হইবে। গহে কোনও উপকরণাদি নাই, আপনি গেলে একটী আসন দিব, তাহারও উপায় নাই, চৌকি, তক্তপোষ, খাট, বিছানা, এ সমস্তই আবশ্যক। তস্তিন্ন আপনার ন্যায় জামাতা পাইলে মাতা ঠাকুরাণী রপোর বাসন না করিয়া কিরাপে খাওয়াইবেন, আর মল্লিকবংশের সহিত কুটবিতা হইলে আমাদের একটা মান রাখিয়া হইবে—এ সমস্ত কথা কি আপনার ন্যায় বহুদশী লোকের নিকট আমার ন্যায় বালকের বলা সাজে ? তা আপনি বিবেচনা করিয়া দেখন, আমি আর কি বলিব ? (পরে মাথা চুলকাইতে চুলকাইতে) আজ্ঞা, পাঁচ হাজার টাকার কমে যে এ কাৰ্য্য সম্পাদন হয়, এমন ত বোধ হয় না। বৈজ্ঞানিকগণ বলেন, পৃথিবীর উদরস্থ দ্রব পদাৰ্থ সব্বদাই কল কল করিতেছে, যখন অতিশয় বাপের তেজ হয়, তখনই আগ্নেয়গিরি দিয়া ফুটিয়া বাহির হয়। টাকার কথা উত্থাপন হওয়াতেই তারিণীবাবর উদরন্থ রাগটা একটা কল কল করিতেছিল, কিন্তু স্থির করিয়াছিলেন, গরিবদের হাজার টাকা কি জোর পনর শত টাকা দিয়া কন্যারত্বটী ক্রয় করিবেন। কিন্তু যখন গোকুল পাঁচ হাজার টাকার উল্লেখ করিল, তখন আগ্নেয়গিরি কোথায় লাগে! উচ্চৈঃস্বরে বলিলেন,—কি বলিলে মিত্রের পো ? পাঁচ হাজার টাকা ? বলি যত বড় মাখ নয়, তত বড় কথা ? বলি আমি কি তোমাদের বংশ চিনি না ? তোমার ঠাকুন্দাদা গ্রামের হাড় জনালিয়ে গিয়েছে, তোমার বাবা হাড় জালিয়ে গিয়েছে, আবার তুমি হাড় জালাতে এসেছ ? পাঁচ হাজার টাকা জলে ভেসে আসে, না পাঁচ হাজার টাকা কখন মিত্রবংশে দেখেছ ? বলি এক রত্তি ছেলে, সে দিন হাতে করে মানুষ করেছি, আমাদের সম্মখে এমন কথা বলিতে ভয় হয় না ? এমন বিধম্মীর সঙ্গে কুটবিতা করিলে নরক ভোগ করিতে হয়। এমন কুলাঙ্গারদের মুখ দেখলেও পাপ হয়! ইত্যাদি, ইত্যাদি। গোকুল কিছুমাত্র অপ্রতিভ বা ক্রুদ্ধ না হইয়া, নাজির মশাইয়ের মেজাজ একটা গরম হইয়াছে দেখিয়া, একটী প্রণাম করিয়া প্রস্থান করিল। বলা বাহুল্য যে, নাজির মশাইয়ের গরম হওয়া ব্যথা, বড়ো বয়সে বালিকা বিবাহ লালসা মনে উদয় হইলে, সে রোগ আর ছাড়ে না। আবার তাহার উপর সেই বালিকাটাকেও মধ্যে মধ্যে পাকুরধারে দেখিতে পাইতেন, উঃ কি চোখ! কি ভুর! কি ঠোঁট! বিধাতা কি তুলি দিয়া লিখিয়াছেন? টকটকে রং কি আলতা দিয়া অকিয়াছেন? কি ললিত বাহলতা ? কি 8○○。 气