পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

जबाछ শরৎ। শনিয়াছি কাশী প্রয়াগ এবং দিল্লী আগ্রা পৰ্য্যন্ত মেলেরিয়া জর বিস্তারিত হইয়াছে, পাঞ্জাব প্রদেশেও নাকি মেলেরিয়া হয়। আমি এই দুই বৎসর বিহারে ছিলাম, সেখানে ত অতিশয় মেলেরিয়া হয়। তবে ভাগ্যক্রমে আমার এ পৰ্য্যস্ত জর হয় নাই। এইরপে দাদামহাশয়ের সহিত অনেকক্ষণ পশ্চিমদেশের কথা, চাকরির কথা, তালপুকুরের কথা ইত্যাদি নানা কথা হইতে লাগিল। দাদামহাশয় পন্বেকালের চাকরির রহস্য-গল্প বলিলেন, পবোকালের গহসংসারের রহস্য-গল্প বলিলেন; কেমন করিয়া সাহেবদের বশে রাখিতে হয় তাহা বলিলেন, কেমন করিয়া বেীকে বশে রাখিতে হয় তাহাও বলিলেন ! সেই সমস্ত কথা কহিতে কহিতে জিজ্ঞাসা করিলেন,—বলি এখন ছটা লইয়া আসা হইয়াছে কি মনে করিয়া ? নাতবোঁকে নিয়ে যেতে চাও বুঝি ? তা হবে না ভায়া, নাতবোঁকে শীঘ্র ছাড়ব না ! শরৎ । তা আপনারা অনুমতি না দিলে কি প্রকারে পরিবার লইয়া যাই । দাদা। তা অনুমতি দি কেমন করে ? তোমরা সব কলেজের ছেলে, বোঁকে মাথায় করে রাখবে, আপনারও চাকরিটী ঘচোবে, বৌয়েরও মাথাটী খাবে! শরৎ । সে কি দাদামহাশয় ? বৌয়ের মাথা খাব কেন ? দাদা। তা নয় ত কি ? তোমাদের বৌঠাকরণেরা নাকি কলর মত ঘানিগাছের উপর বসিয়া থাকেন, আর তোমাদের চখে ঠলি দিয়া ঘোরান ! ভায়া! সেকালে ত এমন রীতিটী ছিল না, সেকালে অন্য রীতি ছিল। শরৎ। কি রীতি দাদামহাশয় ? বল না দই একটা পুরাতন কথা শুনি, দই একটা পুরাতন রীতি শিখিয়া লই! দাদা। বলি সেকালে কি বোঁদের পায়ের উপর পা দিয়া বসিবার উপায় ছিল ? ঐ সকাল থেকে উঠে বাসন মাজা, ঘর ঝাঁট দেওয়া, কুটনা কোটা, বাটনা বাটা, রাঁধা, বাড়া, পরষদের খাওয়ান, ছেলেদের খাওয়ান,—এসব কাজ হলে তবে বৌয়েরা মুখে জল দিতে পারিত! কাজ না করলে কি বৌ তৈয়ের হয় ? সেকালের শাশড়ীরা বোঁ তৈয়ের করতে জানত। তোমরা ভায়া কালেজের ছেলে, তোমরা তার কি জানবে বল ? শরৎ । শুনেছি নাকি সেকালে শাশুড়ীরা কখন কখন হাতা পড়িয়ে ছেকা দিয়া বেী তৈয়ের করত ! দাদা। ওহে ভায়া, চাই, চাই, একটা শাসন চাই! তোমরা সব বগী গাড়ী হাঁকাও না ? বলি গাড়ী হাঁকাইবার সময় ঘোড়ার রাস একটা টেনে রাখলে ঘোড়া যায় ভাল, কেমন? আর তা না হলে ঘোড়া মুখ থুবড়ে পড়ে যায়! দেখ ভায়া, তোমার যেমন রাস আলগা–যেন নাতবেটী শেষে মুখ থুবড়ে পড়ে যায় না! শরৎ। দাদামহাশয়! মেয়েমানুষ কি ঘোড়া ? তারা কি আপনাদের কত্তব্য জানে না ? তাদের কি ঘোড়ার মত মুখে রাস দিয়া ফেরাইতে হয় ? দাদা। হাঁ হে ভায়া, কৰ্ত্তব্য সকলেই জানে, তব মুখে রাসটা থাকলে কৰ্ত্তব্যটা হয় ভাল । এই তোমরা ষে সরকারি চাকরি কর—কেমন কড়া নিয়ম ? কোম্পানি কই একটা আলগা দিক দেখি ? সব বিশৃঙ্খলা হইয়া যাবে। শরৎ । দাদামহাশয়, গভর্ণমেণ্ট আমাদের মাহিনা দিয়া চাকর রাখিয়াছে, চাকরের মত খাটাইয়া লয়। মেয়েমানুষে কি আমাদের মাহিনা-করা দাসী ? কাজ ত সকলেরই করা উচিত, আমরা বাহিরের কাজ করি, তাহারা সংসারের কাজ করবে। কিন্তু তাদের প্রতি দাসীর মত ব্যবহার করা উচিত ? "a দাদা। ঐ! কালেজের ছেলেদের বলি ঐ ! বলি ঘাড়ে জোয়াল দিলে যেমন কাজটী হয়, অমনি কি তেমন হয় ? সংসারের রীতি এই—ঘাড়ে জোয়াল দিবে, খাব শাসন করবে, তবে ষোল আনা কাজ আদায় হইবে । শরৎ } আর যদি ঘাড়ে জোয়াল না দিয়া বার আনা কাজ পাওয়া যায়, আর তার সঙ্গে যদি একটা ভালবাসা পাওয়া যায়,--সেটা ভাল নয় ? দাদা। ঐ! কালেজের ছেলেদের বলি ঐ ! ওহে বাপ জোয়াল না দিলে কাজও পাবে না, ভালবাসাও পাবে না! তা বুঝি জান না? বলি মেয়েমানুষদের ময়না পাখীর মত সোণার 8&పి