পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৪৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रटभश्ल ब्रफ़नाबलौ সরিকে অনেক মামলা-মকদ্দমা হইয়া গিয়াছে, এবং এখনও চলিতেছে। কোন কোন অংশীদিগের মধ্যে কেহ কেহ একেবারে নিঃস্বত্ব হইয়া গ্রাম ছাড়িয়া বদ্ধমান বা কলিকাতায় চাকরি লইয়াছেন। কোন কোন সরিক দরিদ্র হইয়াও কোনপ্রকারে সাবেক ভদ্রাসনে এখনও জমিদার নামটা বজায় রাখিয়াছেন। আবার কোন কোন তরফ এখনও বেশ সঙ্গতিপন্ন আছেন, আয় ” যথেষ্ট আছে, তাহার সঙ্গে সঙ্গে মামলা-মকদ্দমাও চলিতেছে। বংশের যেরপে অবস্থা, পরাতন বাড়ীরও সেইরপে অবস্থা। প্রকাণ্ড হাতার মধ্যে অতি প্রাচীন ইমারত, কোথাও ভাঙ্গিয়া পড়িতেছে, কোথাও নতন মেরামত করা হইয়াছে। প্রাচীন সিংহদ্বার এখন সিংহশনা, প্রাচীন উদ্যান এখন জঙ্গল, প্রাচীন খিড়কির পকেরিণী সরিকী, অতএব পানায় পরিপণ"। এজমালির বাড়ীতে কেহ বড় টাকা খরচ করিয়া সংস্কার করে না, কিন্তু সঙ্গতিপন্ন অংশিগণ স্থানে স্থানে নতন দালান তুলিয়াছেন, যাহার যেরপে ক্ষমতা, তিনি সেইরপে গহসংস্কার বা নতেন প্রস্তুত করিয়াছেন। কোন গহ অতি সামান্য, আবার সঙ্গতিপন্ন কোন অংশীর নব্য গহ প্রাসাদতুল্য শোভা পাইতেছে। এইরুপে সনাতনবাটীর জমিদার-আবাস অনেক পরেষের সম্পট, অনেক ধাঁচায় নিমিতে, অনেক অবস্থায় পরিণত। কিন্তু তথাপি সেই বিস্তীণ আবাসস্থান, সনাতনবাটীর জমিদার-ঘর বলিয়া প্রসিদ্ধ; এবং সেই বিস্তীণ আবাসের বাসিগণ, কি ধনী, কি দরিদ্র, সনাতনবাটীর - জমিদার-বংশীয় বলিয়া মযাদা প্রাপ্ত হইতেন। ছেলেপলে লইয়া প্রায় শতাধিক লোক সেই বিস্তীণ জমিদার-বাড়ীতে বাস করিতেন, কেহ বা পরাতন এজমালী বাড়ীর ভগ্ন ঘরে, কেহ নতন-নিমিত প্রাসাদে। কেহ বা রাজার তুল্য আয় ভোগ করিতেন, কেহ বা প্রজার উপর উৎপাত করিয়া চালের কুমড়োটী কাড়িয়া আনিলে তবে গৃহিণী ব্যঞ্জন প্রস্তুত করিতেন। কোন গহিণী নিজ হাতে খিড়কির পানা পকেরিণীতে বাসন মাজিতেন, আর কেহ সন্দের বাহুলতায় হীরকখচিত বলয় ও কঙ্কণ ধারণ করিয়া কত্তার মন আকষণ করিতেন। সকলেরই দেশেবিদেশে সনাতনবাটীর জমিদার-বংশীয় বলিয়া মানসম্প্রম আছে। এই বহজ্ঞোতিপণে বাড়ীর মধ্যে কামিনীকান্ত মুখোপাধ্যায়ই আজ প্রধান বলিতে হইবে। তাঁহার পিতা বড় বৃদ্ধিমান লোক ছিলেন, ছলে, বলে বা কৌশলে, ভয় দেখাইয়া, ঠকাইয়া, বা অথ দ্বারা ক্রয় করিয়া, অনেক ক্ষুদ্র অংশ নিজ হস্তগত করিলেন, ও অবশেষে সমস্ত জমিদারির চারি আনা অংশের মালিক হইলেন। কামিনীকান্তবাব নিজ বুদ্ধি ও প্রভাব বলে আর তিন আনা বাড়াইলেন, সতরাং তাঁহাকে সাত আনির জমিদার বলিত। তাঁহার পিতা তাঁহাকে কলিকাতায় লেখাপড়া শিখাইয়াছিলেন,—লেখাপড়া ধনাঢ্য জমিদারদের যেরপে হয় সেইরপেই হইল, তাহার সঙ্গে সঙ্গে কলিকাতার বাবগিরি শিখিলেন। পিতার মৃত্যুর পর কামিনীকান্তবাব নিজের অংশের অট্টালিকা ভাল করিয়া সাজাইলেন, ঝাড়, লন্ঠন, দেয়ালগিরি, পাখা, মমরপ্রস্তরের টেবিল, সোফা, চৌকি, কাপেট প্রভৃতি নানা উপকরণদুব্য নব্য জমিদারের ঘর আলো করিল। সম্মখে একটী বাগান করিলেন, মধ্যে পাকরিণী, চারিদিকে মামারপ্রস্তরের মাত্তি । বাগানে একটী নাচঘর নিম্মাণ করিলেন, তাহাতে কখন কখন সাহেবদের খানা দিতেন, কখন বা কলিকাতা হইতে বাই আনিয়া বাই-নাচ দিতেন। কলিকাতায় তাঁহার সব্বদা যাতায়াত ছিল, এবং কলিকাতার সসভ্য বন্ধগণও কখন কখন তাঁহার ইন্দ্রপরীতে আসিয়া সবগ সখে ভোগ করিতেন। কামিনীকান্তবাবরে দোদণ্ড প্রতাপ। প্রজাগণ তাঁহার নাম শুনিলে কাঁপে, ক্ষুদ্র আংশিগণ তাঁহার অত্যাচার বহন করেন, দরিদ্রা অংশিনীগণ তাঁহার দ্বারা অবমানিতা হইলে ঘরে গিয়া কাঁদেন, জমিদার-বাড়ীর ছেলেপলেরা তাঁহাকে দেখিলে পলায়। সাহেবসবাদের নিকট তাহার যথেস্ট নাম, পুলিশ তাঁহাকে ভয় করে, তাঁহার বাড়ীতে একটা ঘটনা হইলে শীঘ্র ঘেসে না। গ্রামের বড়ো লোকে বলিত, অনেক বৎসর পবে একটা হাঙ্গামা হইয়া জমিদারের বংশেরই একটা ছেলে খন হইয়া গিয়াছিল, কিন্তু লাশও পাওয়া গেল না, পলিশ কোন কিনারাও করিতে পারিল না। আখ্যায়িকা বিবত-সময়ে কামিনীকান্তবাবর প্রায় পঞ্চাশ বৎসর বয়স, কিন্তু এখনও যৌবনের তেজ ও প্রতাপ কমে নাই। fr يقييد Sá8