পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बक्रर्गब८छङा 嘲 F-y যেন সরলার শোকাবহ গানে আগন্তুকের হৃদয়ে কোন শোক-চিস্তার উদ্রেক হইয়াছিল। অনেকক্ষণ দাঁড়াইয়া থাকিয়া যবেক সরলার নাম উচ্চারণ করিলেন “সরলা ?” , সরলা হঠাৎ পশ্চাতে দেখিয়া চমকিত হইয়া বলিল,—“ইন্দ্রনাথ ?” ইন্দ্রনাথ। সরলা ! তোমার সংসারে কি এতই বৈরাগ্য হইয়াছে যে, এরপে শোকাবহ গান গাইতেছ? সরলা। না, আমি মনে কিছুই ভাবি নাই, আমার মনে কোন ভাবনাই নাই, তবে আমি ঐ একটী ভিন্ন আর গান জানি না, সেই জন্য আমি ঐটী বার বার গাইতেছিলাম। সই আমাকে গান শিখাইয়াছিল, তাহার মধ্যে আমার কেবল ঐটী মনে লাগে, যখন একলা থাকি, তখন বসিয়া বসিয়া গাই । আমি কি জানি যে, তুমি লুকাইয়া শুনিতেছ ? এই বলিয়া সরলা মুখ নত করিল। ক্ষণেক পর আবার বলিল,—মা পজা করিতে গিয়াছেন, আমাদের দাসী হাটে গিয়াছে, সেই জন্য আমি একলা বাড়ীতে আছি। তুমি বস, দাসী এখনই আসিবে। এতক্ষণ একাকিনী থাকিয়া সরলা যেরপ লান হইয়াছিল, চিরপরিচিত বন্ধকে অনেকদিন পরে দেখিয়া সেইরপে আগ্রহ ও আনন্দের সহিত কথাবাত্ত কহিতে লাগিল। সরলার কি কথা ? -সরলচিত্ত বালিকার যে কথা, সরলা সেই কথাই কহিতেছিল। কখন মাতার কথা কহিতেছিল; কখন আপন কায্যের কথা কহিতেছিল; কখন ক্ষুদ্র উদ্যানে লইয়া গিয়া আপনি যে পাম্পচারা রোপণ করিয়াছিল, তাহাই দেখাইতেছিল। ইন্দ্রনাথ আগ্রহপবেক তাহাই শুনিতে ও দেখিতেছিলেন। ক্রমে ক্রমে নিবিড় ব্যক্ষাবলীর ভিতর দিয়া পর্ণেচন্দ্রের উদয় হইল। প্রথমে আকাশ সবেণবৰ্ণ হইয়া আসিল, ক্রমে ক্রমে বক্ষপত্রের ভিতর দিয়া উজ্জবল পণচন্দ্রের আলোক দেখা যাইতে লাগিল, এবং কিয়ৎক্ষণ পরে চন্দ্র উচ্চে আরোহণ করিয়া নীল আকাশে স্বর্ণআলোক বিস্তার করিল। সে আলোক সরলার সগোল শরীর প্লাবিত করিল, সন্দর বদনমণ্ডলের কিশোর ভাব বদ্ধন করিল, সহাসপরিপন্ণ ওঠদ্বয় আরও মধরিমাময় করিল, শাস্তজ্যোতিঃ নয়নদ্বয় স্নেহরসে আপ্লত করিল। ইন্দ্রনাথেরও মুখে কথা নাই, সস্নেহনয়নে সেই সবর্ণ প্রেমপ্লাবিত নয়ন, সেই স্মিতমধরে ওঠাধর, সেই মোহন মুখমণ্ডল নিরীক্ষণ করিতেছিলেন। অনেকক্ষণ পরে বলিলেন, “সরলা!” ইন্দ্রনাথের গম্ভীর সবরে সরলা কিঞ্চিৎ বিস্মিত হইয়া তাঁহার মুখের দিকে চাহিল। দেখিল, তাঁহার লান মাখ আরও লান হইয়াছে। ইন্দ্রনাথ পুনরায় বলিলেন,—সরলা ! বোধ হয়, তোমার সহিত আমার এই শেষ দেখা। সরলার প্রফুল্ল নয়নে এক বিন্দ জল আসিল, সে জিজ্ঞাসা করিল,—কেন, তুমি কি আর রন্দ্রপরে থাকিবে না ? ইন্দ্রনাথ। না; আমি আর রন্দ্রপরে থাকিব না; বোধ হয়, তুমি পরে কারণ জানিতে পারবে। সরলা। কেন, তোমার এ গ্রামে থাকিতে কোন ক্লেশ হইতেছে ? তুমি কেন আমাদের বাড়ী থাক না ? আমি মাকে বলিলে মা সম্মত হইবেন। আমাদের যাহা সামান্য আয় আছে, তাহাতে তোমার এখানে কোন কট হইবে না, স্বচ্ছন্দে থাকিবে । ইন্দ্রনাথ। সরলা, তোমার দয়ার শরীর, তোমার স্নেহ অসীম। কিন্তু আমার খাইবার কন্ট কিছুই নাই, আমি নবীন দাসের বাড়ীতে অতিথি হইয়া আছি, তোমার সই আমাকে বিশেষ যত্ন করেন, তাহাত তুমি জান। এখানে স্থান না হইলেও আমার থাকিবার অন্য স্থান আছে। আমি অন্য কারণে গ্রাম ত্যাগ করিতেছি। সরলা । নিতান্তই কি গ্রাম ত্যাগ করিতে হইবে ? ইন্দ্রনাথ। সরলা, আমি চলিয়া গেলে কি তোমার মনে কন্ট হইবে ? সরলা । কস্ট হইবে না ? আমাদের আর কে আছে বল ? ইন্দ্রনাথ। সরলা, তোমার মনের কন্ট দেখিয়া আমার হৃদয় বিদীণ হইতেছে, কিন্তু আমি কোনও প্রকারে আর এ গ্রামে থাকিতে পারি না। সরলা, বিদায় দাও ; যদি বাঁচিয়া থাকি, যদি কাৰ্য্য সিদ্ধ হয়, পুনরায় দেখা করিব; না হয়, এই শেষ। ইন্দ্রনাথের মুখ হইতে আর কথা বাহির হইল না, সরলার প্রশান্ত নীলোৎপলসদৃশ চক্ষতে SS