পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्धश्रण ब्रक्रमाबळनौ অশ্র টল টল করিতে লাগিল। সরলা ইন্দ্রনাথকে প্রাতার মত ভালবাসিত, তাহা ভিন্ন অন্য কোন প্রকার ভালবাসা আপন হৃদয়-কোরকে প্রবেশ করিয়াছে, তাহা জানিত না; বিদার দিতে এমন যাতনা হইবে, তাহা জানিত না । সেই পৌণমাসী রজনীতে, সেই নিভৃত উদ্যানে, উভয়ে অনেকক্ষণ নিস্তব্ধ হইয়া, উভয়ের হস্তধারণ করিয়া, পরপরের বদনমন্ডল নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন;–পরস্পর-দশান-সন্ধা সতৃষ্ণনয়নে পান করিতে লাগিলেন;–পরস্পরের বদনমণ্ডল দেখিয়া হৃদয়ের যাতনা কিছু কিছু প্রশমিত করিতে লাগিলেন। অনেকক্ষণ পরে ইন্দ্রনাথ স্নেহভরে সরলার চক্ষের জল মছাইয়া দিয়া, আশ্বাস দিয়া বলিলেন,— সরলা, আমি ধমের গৌরবের জন্য, পাপের দণ্ডের জন্য, যাইতেছি। ভগবান আমাকে অবশ্যই সাহায্য করবেন। যদি তিনি সাহায্য করেন, তবে কাহাকে ভয় ? অবশ্যই কৃতকাৰ্য্য হইয়া আবার তোমারই নিকট আসিব । সরলা কিঞ্চিৎ শান্ত হইয়া বলিল,—যদি আইস, কবে আসিবে ? ইন্দ্রনাথ বলিলেন-ছয় মাসের মধ্যে আসিব । আজি পণিমা, আজ হইতে সপ্তম পণিমা তিথিতে আবার তোমার সহিত দেখা হইবে। যদি না হয়, তবে জানিবে ইন্দ্রনাথ আর এ জগতে । নাই । এই কথা বলিতে বলিতে দ্বারদেশে শব্দ হইল। সরলা বুঝিল, দাসী আসিয়াছে। দ্বার খালিয়া দিতে গেল। ইন্দ্রনাথ অনিমেষলোচনে তাহার দিকে নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন, ও মনে মনে বলিলেন— ভগবান, সহায় হও, যেন এই রমণীরত্ন লাভ করিতে পারি। যদি না পারি, এ হৃদয় শঙ্কে হইবে, এ জীবন মরুভূমি হইবে! পঞ্চম পরিচ্ছেদ ঃ রন্দ্রপরে পরিত্যাগ AND there were sudden partings, such as press The life from out young hearts, and choking sighs That ne'er might be repeated. Who could guess, If e'er again should meet those mutual eyes, Since upon a night so sweet such awful morn could rise. —Byron. রাজা সমরসিংহ রায় বঙ্গদেশীয় সমস্ত হিন্দু জমীদারদিগের সম্পদকালে পরমবন্ধ ও বিপদকালে অবলম্বন এবং আশ্রয় ছিলেন। তিনি নিজ সাহস ও বাহুবলে যে খ্যাতি ও ক্ষমতা লাভ করিয়াছিলেন, তন্দ্বারা সবধমাবলম্ববী জমীদারদিগের গৌরব বদ্ধন করিবার চেন্টা করিতেন। ফলতঃ বিপদকালে তাঁহার নিকট উপকার প্রাপ্ত হন নাই, এ প্রকার জমীদার প্রায় বঙ্গদেশেই ছিল না। ইচ্ছাপরের প্রজারঞ্জন জমীদার নগেন্দ্রনাথ চৌধুরী রাজা সমরসিংহের বিশেষ অনুগ্রহভাজন ছিলেন। নগেন্দ্রনাথও রাজা সমরসিংহকে জ্যেষ্ঠ ভ্রাতৃবং শ্রদ্ধা করিতেন ও তাঁহার আজ্ঞা না লইয়া কোন কাৰ্য্যই করিতেন না। রাজা সমরসিংহের মৃত্যুর পর বিধবা রাজ্ঞী ও রাজকুমারীর জন্য নগেন্দ্রনাথ অনেক অনুসন্ধান করিয়াছিলেন; কিন্তু তাঁহারা ছদ্মবেশে চতুবেষ্টিত দাগ হইতে পলায়ন করাতে কেহই তাঁহাদের কোন সন্ধান পাইল না। বিশেষতঃ রাজা সমরসিংহের অপত্যের নিমিত্ত অধিক স্নেহ প্রকাশ করিলে দেওয়ান সতীশচন্দ্রের ক্রোধভাজন হইতে হইবে, এই বিবেচনায় আন্তরিক স্নেহও কিঞ্চিৎ পরিমাণে সংবত রাখিতে হইয়াছিল। মানবহৃদয়ে স্নেহরজ অতি সক্ষয় ও ক্ষণস্থায়ী, সবাথপরতা যৎপরোনাস্তি প্রবল। দিনে দিনে, সপ্তাহে সপ্তাহে, মাসে মাসে নগেন্দ্রনাথ আপনার উন্নতিপথে ধাবিত হইতে লাগিলেন; যাহাতে ধন, মান, ক্ষমতা বন্ধন হয়, যাহাতে ૪ ૨