পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* অষ্টম পরিচ্ছেদ ঃ ধত্তে ধত্তে" CURSE on his perjured arts' dissembling smooth 2 Are honor, pity, conscience, all exiled 2 Is there no pity, no relenting truth 2 —Burns. পরদিন প্রাতে দেওয়ানজী মহাসমারোহে মঙ্গের যাত্রা করিলেন। কন্যার নিকট বিদায় লইবার সময় বিমলা বলিলেন,—পিতঃ ! আপনি চলিলেন, অনুমতি করন, আমি প্রসিদ্ধ মহেশ্বর-মন্দিরে যাইয়া আপনার মঙ্গলাথ পাজা দিব। তথায় আমাকে কিছুদিন অবস্থিতি করিতে হইবে। পিতা সম্মত হইলেন ও অনেক স্নেহগভ বচনে কন্যার নিকট বিদায় লইলেন। কন্যার চক্ষুজলে বসন্ত্র সিক্ত হইল, পিতা চলিয়া যাইবার সময়, সেই দিকে নিরীক্ষণ করিয়া বিমলা মনে মনে বলিতে লাগিলেন,—এই বিপুল সংসারে আপনি ভিন্ন এ হতভাগিনীর আর কেহই নাই, আপনি না থাকিলে সংসার আমার পক্ষে অন্ধকার। ভগবান আপনাকে নিরাপদে রাখনে, ধৰ্ম্মপথে আপনার মতি হউক। আপনার নৈসগিক চরিত্র উদার ও অকপট, কুক্ষণে শকুনির সহিত মিলন হইয়াছিল। শকুনির সহিত বিদায় লইবার সময় শকুনি বলিলেন,—আপনি অগ্রসর হউন, আমিও সমরসিংহের বিধবাকে উপযুক্ত স্থানে রাখিয়া ও অন্যান্য কাৰ্য্য সমাধা করিয়া আপনার নিকট যাইতেছি। সতীশচন্দ্র উত্তর করিলেন,--যাহা উচিত হয় কর, আমি তোমারই তীক্ষাবৃদ্ধির উপর নিভীর করি। সতীশচন্দ্র যখন বহিগত হইলেন, শকুনি মনে মনে বলিতে লাগিল— বৃদ্ধি তীক্ষয় কি না, হাতে হাতেই টের পাইবে, বড় বিলম্বব নাই। শকুনির সহিত সতীশচন্দ্রের আজ আট বৎসর পরিচয়। যখন প্রথমে পরিচয় হইয়াছিল, তখন শকুনির বয়ঃক্রম বিংশতি বৎসর, সতীশচন্দ্রের বয়ঃক্রম চত্বারিংশৎ বর্ষ। শকুনি দেখিতে সশ্রী ছিল ও অলপ বয়সে অনাথ ব্রাহ্মণপত্র বলিয়া সতীশচন্দ্রের স্বারে শরণাপন্ন হইয়াছিল। সতীশচন্দ্রও স্কুমার নিরাশ্রয় ব্রাহ্মণপত্রকে আশ্রয় দিয়াছিলেন—সেই দিন অবধি হৃদয়ে কালসপ ধারণ করিয়াছিলেন। * তীক্ষাবৃদ্ধি শকুনি শীঘ্রই সতীশচন্দ্রের হৃদয় বুঝিল; সতীশচন্দ্রের দন্দ'মনীয় উচ্চাভিলাষ লক্ষ্য করিল ; সেই ভীষণ অগ্নিতে দিন দিন আহুতি দিতে লাগিল; আহমতি পাইয়া অগ্নিশিখা দিনে দিনে গগনস্পশী হইতে চলিল। এই ঘোর মদে মত্ত হইয়া সতীশচন্দ্র দিগ্বিদিক জ্ঞান হারাইলেন, ধৰ্ম্মমাধক্ষম জ্ঞান হারাইলেন, একেবারে অন্ধপ্রায় হইলেন। শকুনি সুযোগ পাইল। অন্ধকে কুটিল পথে লইয়া যাওয়া দরহে নহে, সৎপরামশ হইতে কুপরামর্শ দিতে আরম্ভ করিল, প্রভুকে সৎপথ হইতে কুপথে লইয়া চলিল। অবশেষে এমন ঘোর পকে নিমগ্ন করিল যে, তথা হইতে উদ্ধার হইয়া প্রত্যাবত্তন করা মানুষের সাধ্য নহে। তখন সতীশচন্দ্রের চক্ষ উন্মীলিত হইল, ক্রমে ক্রমে ভ্রম দেখিতে পাইলেন। কিন্তু তখন পশ্চাত্তাপ ভিন্ন উপায়ান্তর নাই। শকুনির মনস্কামনা সিদ্ধ হইল, প্রভুকে সম্পর্ণেরুপে হস্তগত করিল। শকুনিকে আশ্রয় দিবার অনতিবিলম্বেই সতীশচন্দ্র তাহার তীক্ষাবৃদ্ধি লক্ষ্য করিয়াছিলেন। শকুনির বিনীতভাবে সস্তুস্ট হইয়াছিলেন, তাহার পরামশে চমৎকৃত ও প্রীত হইয়াছিলেন, দিন দিন তাহাকে অধিকতর স্নেহ করিতেন, আপনার পত্র নাই বলিয়া শকুনিকে পত্রের মত ভালবাসিতেন। কখন তাহাকে পোষ্যপত্রে করিবার কামনা করিতেন, কখন বা তাহাকে আপন দহিতার সহিত বিবাহ দিবার সঙ্কল্প করিতেন। কিন্তু নিরাশ্রয় ব্রাহ্মণ-কুমারের সহিত কন্যার বিবাহ দিলে মানহানি হইবে, এই ভয়ে শকুনিকে গৃহ-জামাতা করিতে পারেন নাই। ক্রমে কন্যার বয়ঃক্ৰম অধিক হইতে লাগিল, কিন্তু কুলীন-কন্যার বয়ঃক্ৰম অধিক হইলে ক্ষতি কি ? বিশেষ সতীশচন্দ্রের সীর মৃত্যু হওয়াতে কন্যার প্রতি স্নেহ দ্বিগণ হইয়াছিল, কন্যার বিবাহ দিলে গহ শান্য হইবে, এইজন্য বিবাহের বিলম্ব হইতে লাগিল, এইজন্য শকুনিকে জামাতা করিয়া গহে রাখিবার সঙ্কল্প হইতে লাগিল। ২৩