পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्धश्च ब्रछनाक्लौ f পরে যখন পাপপকে পতিত হইয়া সতীশচন্দ্রের চক্ষু উল্মীলিত হইল, তখন এই সঙ্কল্প আবার দরে হইল। পাপ এরাপ ঘণার পদার্থ যে, একজন পাপী অন্য জনকে ভালবাসিতে পারে না; সতীশচন্দ্র শকুনিকে আর ভালবাসিতে পারিলেন না। উন্নতচরিত্রা, ধৰ্ম্মপরায়ণা দহিতাকে কুটিলম্বভাব, কপটাচারী শকুনির হস্তে অপণ করিবেন, এ ভাবনা সতীশচন্দ্র সহ্য করিতে পারলেন না। মনে মনে ভাবিলেন,—আমি পাপিষ্ঠ বটে, কিন্তু পাপেরও সীমা আছে। ধৰ্ম্মপরায়ণ সমরসিংহকে হত্যা করিয়াছি, কিন্তু আমার স্নেহের পত্তেলি বিমলাকে নরকে ফেলিতে পারিব না। আমার যাহা হইবার হইয়াছে, বিমলা ধৰ্ম্মপথে থাকুক। সতীশচন্দ্র এইরুপ চিন্তা করিতেন, কিন্তু শকুনিকে কিছু বলিতে পারিতেন না। শকুনি সবাদারের নিকট একটী কথা জানাইলে সতীশচন্দ্রের শিরশেছদন হইবে, তাহা তিনি জানিতেন, সুতরাং তিনি শকুনির একরপে হস্তগত হইলেন । শকুনি যে ঘোর পাপিষ্ঠ, তাহা বলা বাহুল্য। সতীশচন্দ্রও পাপিষ্ঠ, কিন্তু তাঁহার পাপের সীমা ছিল, তাঁহার চরিত্রে দলই একটী সদগণেও ছিল, তাঁহার হৃদয়ে দলই একটী মহানুভবতা লক্ষিত হইত। পাপের প্রায়শ্চিত্তস্বরুপ মধ্যে মধ্যে তাঁহার আত্মগ্রানি উপস্থিত হইত। শকুনির এ সমস্ত কিছই ছিল না, কেবল ঘোর বাথপরতা ও দাভেদ্য কুটিলতা। সতীশচন্দ্রের মত তাহার দন্দ'মনীয়া বেগবতী মনোবৃত্তি একটীও ছিল না; তাহার হৃদয়ের সকল প্রবত্তিই শান্ত: সকল প্রবত্তিই ঘোর বাথপরতার অনাচারিণী। উর্ণনাভ যেরপে বক্ষপত্রগলি দেখিয়া দেখিয়া ধীরে ধীরে জাল পাতিত করে, শকুনি সেইরাপ অন্য লোকের মনোবাত্তির বেগ বুঝিয়া অতি ধীরে ধীরে আপন সক্ষম জাল বিস্তার করিত। সে মন্ত্রণাজাল এমন সক্ষম, এমন দলে ক্ষ্য ও এমন দাভেদ্য যে, কাহার সাধ্য তাহা ভেদ করে ? প্রেম, বন্ধত্বে, দয়া, কৃতজ্ঞতা প্রভৃতি যে সকল সকুমার মনোবৃত্তি দ্বারা জগৎ বদ্ধ ও মানবজাতি একীকৃত হইয়া রহিয়াছে, শকুনি সে সকল হইতে সম্পণে স্বাধীন ছিল। যশে অভিরুচি ও উচ্চাভিলাষ প্রভৃতি যে সকল দন্দোম মনোবৃত্তি অনেককে বিচলিত করে, তাহা হইতেও শকুনি সম্পণেরপে স্বাধীন ছিল। সতরাং আপন তীক্ষাবৃদ্ধি ও গাঢ় মন্ত্রণার দ্বারা আপন সবাথাসাধনে কখনও নিৰ্ম্মফল হইত না। শকুনি সতীশচন্দ্রকে বলিয়াছিল যে, চরেরা সমরসিংহের বিধবাকে ধরিতে অক্ষম হইয়াছে— সেটি মিথ্যাকথা। শকুনির যেরপে তীক্ষা বৃদ্ধি, মহাশ্বেতাকে ধরা তাহার পক্ষে কষ্টসাধ্য কাৰ্য্য নহে: সেকেবল সতীশচন্দ্রের সহিত শকুনিকে মঙ্গেরে না যাইতে হয় এইজন্য "শকুনির বিস্তীর্ণ মন্ত্রণাজাল ভেদ করি, আমাদের কি সাধ্য ? পাঠক মহাশয়! চলন, শকুনি যথায় বসিয়া চিস্তা করিতেছে, তথায় যাইয়া দেখা যাউক, যদি কিছ জানা যায়। চতুবেটিত দাগের প্রশস্ত কক্ষে শকুনি একাকী পদচারণ করিতেছে, চারিদিকে বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র অবলোকন করিতেছে, দগপদসঞ্চারিণী কল্লোলিনী যমুনার কল কল শব্দ শ্রবণ করিতেছে, মধ্যে মধ্যে প্রশস্ত দাগের শুদ্ধান্তঃপরদিকে অবলোকন করিতেছে। তাহার মুখমণ্ডলে আনন্দের লক্ষণ, বাথ সাধন হইলে সবাথপর লোকের যেরপে আনন্দ ও উল্লাস হয়, সেইরাপ আনন্দের লক্ষণ। মনে মনে এইরুপ চিন্তা উদয় হইতেছে,— এই সবিস্তীণ জমীদারী, এই প্রশস্ত দগে", ঐ অন্তঃপ্রবাসিনী সপ্তদশ-বষীয়া সন্দেরী শীঘ্রই নব স্বামী গ্রহণ করিবে; সমরসিংহের প্রজাগণ, সতীশচন্দ্রের প্রজাগণ, শীঘ্রই শকুনির নাম উচ্চারণ করিবে ; কল্লোলিনী ষমনো শীঘ্রই শকুনির গৌরব-গীত গান করিবে। আর তুমি বিমলে! তুমি আমাকে ঘৃণা কর জানি, কিন্তু ঘৃণার দিন শেষ হইল; তোমার ইচ্ছা থাকুক আর নাই থাকুক, আমাকে স্বামী বলিয়া আলিঙ্গন করিতেই হইবে; তথাপি যদি ঘণা কর, এই পতঙ্গের মত তোমাকে পদে দলিত করিব: এই দলিত মত পতঙ্গের ন্যায় দরে নিক্ষেপ করিব। প্রেমের জন্য বিবাহ করিতেছি না, প্রেম বালক-বালিকার স্বপ্নমাত্র ! তোমার রপেলাবণ্যের জন্য তোমাকে গ্রহণ করিতেছি না; আমার নিকট রপেলাবণ্যের আদর নাই; যদি থাকিত, লক্ষপতির রপেলাবণ্যের অভাব কি? তবে তোমায় দলিত না করিব কেন ? সতীশচন্দ্র, সাবধান ! আজি శ్లాస్గో পাইবে; অধিকন্তু শকুনির দোষও তোমার উপর 영 । তাহার পর ? তাহার পর নিঃসন্তান সতীশচন্দ্র গত হইলে তাহার জামাতা ভিন্ন আর কে উত্তরাধিকারী হইবে? তীক্ষাবৃদ্ধির চিরকালই জয় হউক। 8