পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এইরুপ চিন্তা করিতে করিতে শকুনি দেখিল, অন্তঃপরে গবাক্ষপাশ্বে বিমলা এখনও দণ্ডায়মান রহিয়াছেন। পিতা চলিয়া গিয়াছেন, কিন্তু পিতার গমনপথ-দিক অনিমেষলোচনে নিরীক্ষণ করিতেছেন। ক্ৰন্দন করাতে সেই উন্নত প্রশস্ত ললাটের শিরা সফীত হইয়াছে; চক্ষদ্বয় এখনও জলে ঢল ঢলা করিতেছে; অধরোঠ কল্পিত হইতেছে; উন্নত বক্ষঃস্থল সফগীত হইতেছে; বসন্ত্র আশ্রজেলে প্লাবিত হইয়াছে। তিনি উচ্চৈঃস্বরে রোদন করিতেছেন না, তাঁহার হৃদয়ের যে গম্ভীর বিষন্ন ভাব, তাহা বালিকার উচ্চ রোদনে প্রকাশ পায় না, নিঃশব্দ, অলক্ষিত, অবারিত আশ্রজেলে কথঞ্চিৎ প্রকাশ পায়, কথঞ্চিৎ শান্ত হয়। দেখিয়া শকুনি আপন চক্ষে দুই এক বিন্দ জল আনিয়া আপনিও বাহিরের ঘরের গবাক্ষপাশ্বে দাঁড়াইল। বিমলা চক্ষ উঠাইয়া দেখিলেন, শকুনি দাঁড়াইয়া. রহিয়াছে। ক্রোধে, ঘণায় প্রকূেটী করিয়া গবাক্ষ হইতে প্রস্থান করিলেন। বিমলার মনোহরণ করিবার জন্য শকুনির এই প্রথম উদ্যম নিৰ্ম্মফল হইল। নবম পরিচ্ছেদ ঃ উপাসকে উপাসকে ENAMOURED, yet not daring for deep awe To speak her love :-and watched his nightly sleep, Sleepless herself, to gaze upon his lips Parted in slumber, whence the regular breath Of innocent dreams arose : then when red morn Made paler the pale moon, to her cold home Wildered and wan and panting, she returned. —Shelly. চতুবেষ্টিত দলগ হইতে ৫ । ৬ ক্রোশ দরে ইচ্ছামতী-তীরে প্রসিদ্ধ মহেশ্বর-মন্দির ছিল । সন্ধ্যার সময় বিমলা শিবিকা আরোহণ করিয়া চলিলেন। তাঁহার সঙ্গে দুই চারিজন প্রাচীনা সত্ৰীলোক ও অনেক সংখ্যক দাসদাসী চলিল। বঙ্গদেশের দেওয়ানজীর একমাত্র দুহিতার যেরপে সমারোহে যাওয়া উচিত, সেইরাপ সমারোহে বিমলা মহেশ্বর-মন্দিরে চলিলেন। অনেক দরদেশ হইতে অনেক লোক এই মন্দিরে প্রতিদিন সমাগত হইত। বাদ্ধাগণ পত্রকন্যার কুশল কামনা করিয়া পজা দিতে আসিতেন ; যবেতীগণ পত্র আকাঙ্ক্ষায় মহেশ্বরের উপাসনা করিতে আসিতেন; চিররোগিগণ রোগশাস্তি কামনায় এই মন্দিরে আসিতেন; ষোদ্ধাগণ জয়াকাঙ্ক্ষায়, কৃপণগণ ধনাকাঙক্ষায়, যবেকগণ বিদ্যাকাঙ্ক্ষায়, নানাপ্রকারের লোক নানা আকাঙ্ক্ষায় এই মন্দিরে সমবেত হইত। বহুকালের ধন সঞ্চিত হইয়া এই মন্দিরে রাশীকৃত হইয়াছিল, মন্দিরের আটালিকাসমহ দিন দিন দীঘর্ণয়ত হইতেছিল। মধ্যে উচ্চ মন্দির, তাহার চারিদিকে শ্রেণীবদ্ধ, উত্তজবল, উন্নত সৌধমালা শোভা পাইত। আগস্তুকগণ এই সৌধমালায় বাস করিত, তাহা হইতে যে আয় হইত, তাহাও দেবসেবায় অপিত হইত। এই প্রকান্ড অট্টালিকাশ্রেণী মন্দিরের চারিদিকে নিশ্চিমীত হইয়াছিল। তন্মধ্যবত্তী স্থান অতি বিস্তীর্ণ। সুতরাং মন্দিরের যে কোন দিকে দণ্ডায়মান হইয়া দেখিলে কেবল সৌধমালা ভিন্ন আর কিছুই দেখা যাইত না। এই সৌধমালার ভিতর দিয়া মন্দিরাভিমুখে যাইবার জন্য চারিদিকে চারিটী সিংহদ্বার ছিল। শিবিকা কি শকট সেই সিংহদ্বার পয্যন্ত আসিতে পারিত, তাহার ভিতর যাইতে পারিত না। না। রাজকুমারী ভিখারিণীর সহিত একত্র পদব্রজে সিংহদ্বার হইতে মন্দির পয্যন্ত যাইতেন, ভস্ম-বিভূষিত সন্ন্যাসীর সহিত বর্ণরৌপ্যালঙ্কৃত মহারাজ একত্রে পথ অতিবাহিত করিতেন। ধমের সম্মখে উচ্চ কে ? নীচ কে ? ধনীই বা কি ? দরিদ্রই বা কি ? যদিচ চারিদিকের সৌধবেটিত মধ্যস্থ ভূমি অতিশয় প্রশস্ত ও বিস্তীর্ণ, তথাপি কখন কখন এত লোকের সমাগম হইত যে, সেই ভূমি লোকে পরিপণ হইত। তথায় যে কেবল উপাসকগণ રીત: