পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बक्रर्गबट्छङा ngm= 憩 পিতাই স্নেহের পাত্র, পিতাই পরম বন্ধ, পিতাই পজনীয় দেবতা। বিমলার অপার রেহস্ৰোত, সুপরিসীম ভক্তিস্রোত, সেই একমাত্র আধারাভিমুখে ধাবমান হইল। পিতার দুঃখেই দুঃখ, পিতার আনন্দেই আনন্দ, পিতার বিপদে চিন্তা, পিতার সম্পদে ভরসা,—বিমলা পিতার জীবনেই জীবনধারণ করিতেন। সেই পিতার মঙ্গলাথ প্রার্থনা করিতে করিতে বিমলার হৃদয়ের দ্বার উদঘাটিত হইল; হৃদয়ের নিভৃত কন্দর পয্যন্ত ভক্তিরসে প্লাবিত হইল। অদ্ধপ্রহর কাল বিমলা উপাসনা করিলেন। উপাসনাস্তে যখন বিমলা প্ৰণিপাত করিয়া দণ্ডায়মান হইলেন, তখন তাঁহার হৃদয় সম্পর্ণেরুপে চিন্তাশন্যে ও শান্ত । তখন বিমলা একেবারে মন্দির হইতে বহিগতি না হইয়া ঔৎসক্যেফদল্ললোচনে মন্দিরের চারিদিক নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। তিনি অনেক দিন এ মন্দিরে আইসেন নাই, মন্দিরের সকল দ্রব্যই নতেন বোধ হইতে লাগিল। বিমলা এরপে সুনিমিত, প্রশস্ত, চমৎকার আটালিকা কখন দেখেন নাই। কখন কখন সবর্ণমণ্ডিত পাপালঙ্কৃত স্তম্ভসমহ নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন; কখন কখন ভিত্তির উপর সন্দের ভাস্করকায্য অবলোকন করিতে লাগিলেন; কখন ধীরে ধীরে ইতস্ততঃ পদচারণ করিতে লাগিলেন; কখন দুই এক জন দেবদাসীকে মন্দির-বত্তান্ত জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। উপাসক আর কেহই নাই, সতরাং বিমলার এইরুপ ঔৎসক্যে কোন ব্যাঘাত জন্মে নাই। একপাশ্বে একমাত্র উপাসক নিদ্রিত রহিয়াছেন, সহসা বিমলার নয়ন সেই দিকে পতিত হইল। তাঁহার অলৌকিক তেজঃপরিপণে সৌন্দৰ্য্য দেখিয়া বিমলা বিস্মিত হইলেন, নয়ন আর সেদিক হইতে অন্যদিকে ফিরাইতে পারিলেন না। যবেকের ললাট উদার ও প্রশস্ত, কিন্তু নিদ্রাতেও যেন কোন গাঢ় চিন্তায় কুণ্ডিত রহিয়াছে। নয়ন মাদ্রিত, বদনমণ্ডল উক্তজবল ও বীরদপ প্রকাশক। উপাসকের আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করিয়া বিমলার বোধ হইল যেন, কোন বীরপরষে বীরব্রতে ব্ৰতী হইয়া দরদেশে যাত্রা করিতেছেন, পথিমধ্যে এই দেবমন্দিরে উপাসনা করিতে আসিয়াছেন। শ্রাত্তিবশতঃ বা অন্য স্থান না থাকাতে উপাসনান্তে এই স্থানেই নিদ্রিত রহিয়াছেন। বিমলার অবলা হৃদয়েও বীর ভাবের অভাব ছিল না; সুতরাং উপাসকের এই অলৌকিক বীর-আকৃতি দেখিয়া তাঁহার হৃদয় সহসা স্তম্ভিত হইল। অনিমেষলোচনে সেই বীরপরুষের দিকে নিরীক্ষণ করিতে লাগিলেন। * উপাসকের নিদ্রাভঙ্গ হইল, তিনি গাত্রোথান করিয়া দণ্ডায়মান হইলেন। চক্ষ উন্মীলন করিয়াই দেখিলেন, সম্মুখে উক্তজনল-নয়না তবেঙ্গী দণ্ডায়মান রহিয়াছেন। চারি চক্ষর মিলন হইবামাত্র বিমলার সংজ্ঞা হইল, অপরিচিত পরষের দিকে দেখিতেছিলেন জ্ঞান হইল, লজ্জায় মুখ অবনত করিয়া ধীরে ধীরে মন্দির হইতে নিম্ফাস্ত হইলেন। নিশা প্রভাতপ্রায় হইয়াছে। প্রাতঃকালের প্রথম রশিম বিমলার নয়নোপরি নিপতিত হইল। চারদিকে দই এক জন করিয়া লোক বাহির হইতেছে। বিমলার লোকের সমখে পদব্রজে যাওয়া অভ্যাস নাই, কুষ্ঠিত হইয়া দ্রুতবেগে বাসস্থানাভিমুখে চলিলেন। প্রাচীনাগণ যখন জিজ্ঞাসা করিবেন, এতক্ষণ কি করিতেছিলেন, তখন বিমলা কি বলিবেন ? এতক্ষণ কি তিনি উপাসনা করিতেছিলেন ? বিমলার অন্যান্য চিন্তা হইতে লাগিল। এ বীরপরষে কে ? কি ব্লতে ব্ৰতী হইয়া সমস্ত রাত্রি উপাসনা করিতেছিলেন ? এমন ভাগ্যবান বীরপর ষের প্রাথনীয় কি আছে ? এইরুপ নানা চিন্তায় অভিভূত হইয়া বিমলা শয়নগহে ফিরিয়া আসিলেন। 이