পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बक्रर्गब८छज्रा নিকটে একটী গ্রাম আছে, সম্মুখে অনস্ত নদী, পশ্চাতে সন্দের কুঞ্জবন ও ধান্যক্ষেত্র। এই কুটারসবামী মঙ্গেরে সামান্য কাৰ্য্য করিতেন, কিন্তু স্বভাবতঃ চিন্তা ও খেদ-পরায়ণ হওয়ায় নগর হইতে দরে একটী গ্রামের নিকট বাটী করিয়াছিলেন, তথায় একাকী থাকিতেন, একাকী গীত গাইতেন, এবং সায়ংকালে একাকী আপন নৌকা আপনি নদীবক্ষে বাহিতেন। উভয়ে উপবেশন করিলে পর সেই অপরিচিত সরেন্দ্রনাথকে বলিতে লাগিলেন,— “যবেক ! আপনার হৃদয়ে যদি ক্রোধ ও দপ থাকে, তাহা ত্যাগ করন,—এই দপেই আমার সব্বনাশ হইয়াছে। শৈশবাবস্থা হইতে আমি অতিশয় গব্বী ছিলাম। শনিয়াছি, অতি শৈশবেও আমার কোন বিষয়ে ইচ্ছা যদি সম্পন্ন না হইত, তাহা হইলে আমি এক দিন, দই দিন অনাহারে থাকিতাম। এই বিজাতীয় ক্রোধেই আমার সব্বনাশ হইয়াছে। “বাল্যাবস্থায়ও এইরুপ ছিলাম। আমার মন স্বভাবতঃ পাঠাভ্যাসে রত হইত, কিন্তু কখন যদি গরমহাশয় অন্যায় তিরস্কার করিতেন, তাহা হইলে আমার সেই বিজাতীয় ক্রোধের অবিভাব হইত, পুস্তক দরে নিক্ষেপ করিতাম, সহস্ৰ বেল্লাঘাতেও আমি কথা কহিতাম না, ক্ৰন্দন করিতাম না। গরমেহাশয় আমাকে ভালবাসিতেন, কিন্তু সময়ে সময়ে আমার ক্রোধ দেখিয়া আমার উপর অত্যন্ত রাস্ট হইতেন। একদা এরুপ রটে হইয়া আমাকে সহস্ৰ যাতনা দিলেন, আমি ক্ৰন্দন করিলাম না, মহেত্তেমধ্যে অচেতন হইয়া ভূমিতে পড়িয়া গেলাম। তখন গরমেহাশয়ের সংজ্ঞা হইল। তিনি আমাকে পত্রবৎ স্নেহ করিয়া ক্রোড়ে করিলেন, জলসেচনের দ্বারা আমাকে শীঘ্রই চেতনা দান করিলেন। সেই অবধি আমার পড়া সাঙ্গ হইল। গরমহাশয় আর আমাকে পড়াইলেন না, আমি জন্মের মত মাখ রহিলাম। “আমার মাতাঠাকুরাণী আমাকে কখন নিঠর বাক্য বলেন নাই। তিনি আমার হৃদয় জানিতেন ও আমাকে এরপে ভালবাসিতেন যে, কখনও তাঁহার একটী কথাতেও মনে বেদনা জন্মে নাই। আমি পিতার অবাধ্য হইয়াছি, গরের অবাধ্য হইয়াছি, কিন্তু কস্মিনকালেও মাতার একটি কথা অবহেলা করি নাই। গাহের সমস্ত লোকে উপরোধ করিলে, ভয় প্রদর্শন করিলে, প্রহার করিলে, আমি যে কায্য না করিতাম, মাতা ইচ্ছা প্রকাশ করিলেই আমি তাহা করিতাম। হায় ! সে স্নেহের প্রতিমাকে আমি আর দেখিতে পাইব না।” বলিতে বলিতে বক্তার কন্ঠরদ্ধে হইল, মুখ নত করিয়া অনবরত অশ্রুবিন্দর বিসর্জন করিতে লাগিলেন। সরেন্দ্রনাথ অতিশয় দুঃখিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন,—কেন, আপনার মাতার কাল হইয়াছে ? অপরিচিত উত্তর করিলেন,-শনিয়াছি তাঁহার কাল হুইয়াছে। ক্ষণেক অশ্র বিসর্জনের পর হৃদয় কিঞ্চিৎ শান্ত হইলে পুনরায় বলিতে লাগিলেন,— “আমার পিতা দেশের মধ্যে একজন প্রসিদ্ধ কায়স্থ জমীদার ছিলেন, তাঁহার প্রভূত ক্ষমতা, লোকজন এবং সৈন্যসামস্ত ছিল, এবং স্বভাবতঃ তিনি কিছল গন্বিত ও রাস্ট ছিলেন। আমাকে যথার্থ ভালবাসিতেন, আমার সখ্যাতি শুনিয়া তাঁহার লোচন আনন্দে উৎফুল্ল হইত, আমার নিন্দা শুনিলে তাঁহার মখে লান হইয়া যাইত; কিন্তু তথাপি তিনি সব্বদা স্বাভাবিক ক্রোধ সম্বরণ করিতে পারিতেন না। একদিন আমাকে নিন্দোষে প্রহার করিলেন ও বলিলেন, “তোর মুখ আর দেখিতে চাহি না, আমার গহ হইতে বাহির হইয়া যা।’ ‘চলিলাম, বলিয়া আমি পিতৃগহ হইতে নিগতি হইলাম। "প্রহারে ও তিরস্কারে অনেক বালক শাস্ত হয়, কিন্তু আমি ক্রোধে অন্ধ হইলাম ; হৃদয়ে হতাশন জনলিতে লাগিল। সেই হতাশন পিতৃভক্তি, মাতৃস্নেহ, সকলই দন্ধ করিল। সেই হতাশনে আমার ভাবী সংসার-সুখ, পিতামাতার আশা ভরসা একেবারে দন্ধ করিল। পিতা আমাকে দরে হইতে বলিলেন, আমি দরে হইলাম। সেই অবধি আমি পিতৃগহ ত্যাগ করিয়াছি। তখন আমার বয়ঃক্রম দ্বাদশ বৎসর মাত্র । “তাহার পর কয়েক বৎসর আমার জীবন যে কিরাপে অতিবাহিত হইয়াছে তাহা জিজ্ঞাসা করবেন না। মরুভূমিতে প্রচণ্ড বায়র ন্যায় আমার জীবনের দশ বৎসর বহিতে লাগিল। প্রচন্ডতা আছে, কিন্তু ফল নাই, অর্থ নাই, কাহারও উপকার নাই। নিজন প্রাণিশান্য সে গঙ্কজনের শ্রোতা নাই; সে গজানে কেহ আনন্দিত হয় নাই, কেহ বিস্মিত হয় নাই। లిరి ෆ