পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बक्रीब८छज्रा - o— সত্রপাত করিয়াছেন, আপনি গড়মন্ত্রণায় ও চমৎকার কৌশলে যে কাৰ্য্য সম্পাদন করিতে চেণ্টা করতেছেন, সে কায কি আপনি জানেন না ? আপনার কৌশল ও বদ্ধি দেখিয়া চমৎকৃত হইয়াছি, রাজা টোডরমল্লকে কেহ বঞ্চনা করিতে পারেন নাই, আপনি তাহা করিয়াছেন। আপনি চিরজীবী হউন, একদিন বঙ্গদেশের গৌরবস্থল হইবেন। ইন্দ্রনাথ বিস্মিত হইয়া রহিলেন । তখান বলিতে লাগিলেন,— যথার্থই হুমায়ন ও আমি কতবার অন্তরালে আপনার কৌশলের ধন্যবাদ করিয়াছি। শিবিরে আমাদের মত অনেক জনই বিদ্রোহোন্মুখ সেনানী আছেন। ত্রিংশতসহস্ৰ অশ্বারোহীর সেনাপতি মাসমেীফারামদাঁও বিদ্রোহতৎপর। কিন্তু রাজা টোডরমল্ল আমাদিগের সকলের অন্তরের ভাব জানিয়াছেন, আমাদিগের সকলেরই উপর এরুপ দটি রাখিয়াছেন যে, আমরা কামনা সিদ্ধ করিতে পারি নাই। কিন্তু আপনি কি কুহকে, কি মহাকৌশলে যে রাজা টোডরমল্লকে অন্ধ করিয়াছেন কিছুই বুঝিতে পারি না। ধন্য আপনার বৃদ্ধিবল ! তখান আরও বলিতেছিলেন, কিন্তু ইন্দ্রনাথ কুদ্ধ হইয়া বলিলেন,—আমি বিদ্রোহী নহি, আপনারা যদি মনে করিয়া থাকেন আমি গুপ্তচর, কি কপটাচারী, কি বিদ্রোহকামনা করিয়া রাজা টোডরমল্লের অধীনে কম করিতেছি, তাহা হইলে আপনারা ঘোর ভ্রান্তিতে নিমগ্ন হইয়াছেন। আর আপনারা যদি বিদ্রোহী হয়েন, তবে আমাকে বিদায় দিন। আমার সহিত আপনাদিগের কোন সম্পক নাই। আমি এইক্ষণেই রাজা টোডরমল্লকে সব্ববত্তোন্ত অবগত করাইব । কুক্ষণে আমার হস্তে আপনাদিগের লিপি পড়িয়াছিল। হামায়নেদিউয়ানা ও তখানফামিলীর মুখ গম্ভীর হইল, উভয়েই ভাবিতে লাগিল,— আমরা এতদিন কি ভ্রান্ত ছিলাম, মাসমীফারাত্মদেশী কি এই হিন্দরে অন্তর বিশেষ জানেন না ? উভয়েই কোষ হইতে খড়গ বহিগতি করিবার উদ্যম করিলেন। ইন্দ্রনাথও শস্ত্রবিষয়ে অপট ছিলেন না, কোষ হইতে অসি বাঁহগত করিলেন । এমত সময়ে হুমায়ন পুনরায় একটু হাসিয়া বললেন,— বুঝিয়াছি, আপনি বোধ হয়, এখনও আমাদিগকে বিশ্বাস করেন নাই, এই জন্য আমাদিগের নিকট বিদ্রোহ-মন্ত্রণা ব্যক্ত করিতে চাহেন না। কিন্তু আমাদিগের নিকট মন্ত্রণা গুপ্ত করিবার আবশ্যক নাই; আপনি একমে নিযুক্ত হইবার পর্বোবধি আমরা বিদ্রোহোমখে। এই দেখন, বিদ্রোহীদিগের নিকট হইতে আমরা কয়েকখানি পত্র পাইয়াছি। ইন্দ্রনাথ ক্রোধে ও বিসময়ে অন্ধ হইলেন, বলিলেন,—পামর মসলমান! কাপর্ষ বিদ্রোহী ! তোমাদের পাপের সমচিত দণ্ড দিব। হুমায়ন ও ইন্দ্রনাথের মধ্যে অসিযুদ্ধ আরম্ভ হইল। ইন্দ্রনাথ হুমায়ন অপেক্ষা অনেক বলিষ্ঠ ছিলেন ও অলপদিন মধ্যে চমৎকার অস্ত্রচালনা শিক্ষা করিয়াছিলেন। মহেক্তেমধ্যে হামায়নের শরীর ক্ষতবিক্ষত হইল; মহত্তেমধ্যে হুমায়ন ভূতলশায়ী হইলেন। যখন প্রথমে ইন্দ্রনাথ ও হুমায়নের সহিত যুদ্ধ হয়, তখন তখনি কিছু দরে দণ্ডায়মান ছিলেন। প্রথমেই যুদ্ধ এরপ ভয়ঙ্কর বেগে আরম্ভ হইয়াছিল যে, তখান ইতিকক্তব্যবিমুঢ় হইয়া দণ্ডায়মান ছিলেন, কিন্তু সে কেবল মহমত্তের জন্য। যখন দেখিলেন, হামায়ন ভূতলশায়ী হইয়াছেন, তখন একেবারে লম্বফ দিয়া ইন্দ্রনাথকে আক্রমণ করিলেন। ইন্দ্রনাথ ফিরিয়া তাহার সহিত যুদ্ধ আরম্ভ করিতে করিতে হুমায়নে উঠিয়া পনরায় অসিহস্ত হইলেন। সুতরাং দই জনে একেবারে ইন্দ্রনাথকে আক্রমণ করিলেন। এবার ইন্দ্রনাথের বিষম সঙ্কট উপস্থিত। দুই জনের সহিত এক জনের অসিযুদ্ধ সম্ভবে না। বিশেষতঃ তখান ও হুমায়নে অসিচালনে নিতান্ত অপট ছিলেন না। কেবল হামায়নের কাতরতা ও রজনীর অন্ধকার বশতঃই কিছুক্ষণের জন্য তাঁহার প্রাণরক্ষার সম্ভাবনা। হামায়ন ক্রমে অবসন্ন শরীর হইলেন, তজন করিয়া একবার শেষ আক্রমণ করিলেন। তখনিও সেই অবসরে সতেজে আক্রমণ করিলেন। দুই জনের সমকালীন আক্রমণ হইতে আপনাকে বক্ষা করিবার জন্য ইন্দ্রনাথ হঠাৎ পশ্চাৎ যাইবার মানস করিলেন। তখন তিনি গঙ্গার তীরে দণ্ডায়মান ছিলেন, লম্ফ দিয়া যেই পশ্চাতে যাইবেন, অমনি গঙ্গাসলিলে নিপতিত হইলেন ! “মাতঃ পথিবি ! এই বিপণ্ডিকালে তুমিও স্থান দিলে না", এইরুপ মনে ভাবিতে ভাবিতে গঙ্গাসলিলে মগ্ন হইলেন। তখান ও হামায়ন ইন্দ্রনাথের মৃত্যুস্থির করিয়া আপন কায্যে প্রস্থান করিলেন। 8Տ