পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रटभश्व ब्रध्नावली হামায়ন ও তখান যাহা ভাবিয়াছিলেন, তাহা বড় মিথ্যা নহে; ইন্দ্রনাথ বেরপে আহত হইয়াছিলেন, তাহাতে উত্থানশক্তি ছিল না। সস্তরণ করা দরে থাক, উচ্চ পাড় হইতে পড়িয়া একেবারে অচেতন হইলেন। ভাগ্যক্রমে নিকটবত্তী ঘাটে একখানি নৌকা বাঁধা ছিল এবং সেই নৌকায় একজন ভদ্রলোক জাগরিত ছিলেন । মনুষ্যকে জলে পড়িতে দেখিয়া তিনিও মাল্লাদিগকে জলে নামাইয়া মতপ্রায় ইন্দ্রনাথের প্রাণ বাঁচাইলেন। মাল্লাগণ ধীরে ধীরে ইন্দ্রনাথকে নৌকার দিকে লইয়া চলিলেন। শেষে ইন্দ্রনাথকে নৌকায় তুলিলেন। যিনি মাল্লাদিগকে উঠাইয়া ইন্দ্রনাথের প্রাণ বাঁচাইয়াছেন, তিনি রমণী। তিনি অতিশয় যত্নসহকারে ইন্দ্রনাথের শরীর ধৌত করিয়া দিলেন, তাহার পর সেই অস্ত্রাঘাতগুলি একে একে সিক্ত বস্ত্রের দ্বারা বধিতে লাগিলেন, দেখিলেন যদিও অনেক স্থানে ক্ষত হইয়াছে তথাপি কোন ক্ষতই গভীর বা সাংঘাতিক নহে। তাঁহার সপটেই বোধ হইল, সমস্ত রাত্রি উত্তম নিদ্রা হইলে প্রাতঃকালে শরীরে অধিক বেদনা থাকিবে না। সমস্ত রাত্রি ইন্দ্রনাথের উত্তম নিদ্রা হইল। প্রাতঃকালে চক্ষুরুন্মীলন করিয়া ইন্দ্রনাথ দেখিলেন, পাশ্বে এক পরমা সন্দেরী রমণী বসিয়া রহিয়াছেন। ইন্দ্রনাথের বোধ হইল যেন এই সন্দেরীকে কখন দেখিয়াছেন, কিন্তু কোথায় দেখিয়াছেন, স্মরণ করিতে পারিলেন ন ভদ্রে! আপনি আমাকে প্রাণ দিয়াছেন, আপনি বোধ হয় আমাকে জল হইতে উদ্ধার করিয়াছেন। আপনি কে ? কি করিলে এ ঋণ শোধ করিতে পারিব ? আপনি আমার জীবন রক্ষা করিয়াছেন জানিলে রাজা টোডরমল্প কিছুই দিতে অস্বীকৃত হইবেন না। রমণী অনেকক্ষণ উত্তর দিলেন না ; ইন্দ্রনাথ বার বার প্রশ্ন করাতে অবশেষে বলিলেন,— সৈনিকবর ! আমাকে কি ইহার মধ্যে বিস্মত হইয়াছেন ? সে কোকিলনিন্দিত কণ্ঠধবনি ইন্দ্রনাথ এখনও ভুলেন নাই। উদ্বিগ্ন হইয়া বলিলেন,— রমণীরত্ব ! আমি জীবিত থাকিতে আপনাকে বিস্মত হইব না। কিন্তু আপনি কিরাপে এস্থানে আসিলেন ? মহেশ্বর-মন্দির কতদিন ত্যাগ করিয়াছেন ? সেই নৌকাবাসিনী রমণী বিমলা ! ইন্দ্রনাথ তাঁহাকে মহেশ্বর-মন্দিরে দেখিয়াছিলেন, আদ্য এই স্থানে এই অবস্থায় দেখিয়া বিস্মিত হইলেন। ইন্দ্রনাথের বিসময় দেখিয়া বিমলা একটা হাসিলেন, অবগঠেন টানিয়া ধীরে ধীরে আহত সৈনিকের শশ্রেষা করিতে লাগিলেন! ইন্দ্রনাথ অনেকস্থানে আঘাত পাইয়াছিলেন, কিন্তু আঘাত গরতের নহে। বিমলা যত্নসহকারে আঘাতগুলিতে বস্ত্র বধিয়া দিলেন; তৎপর ইন্দ্রনাথ প্রস্থান করিবার উদ্যোগ করলেন। যাইবার সময় ইন্দ্রনাথ সেই রমণীকে শতবার ধন্যবাদ দিলেন, এবং কোনরুপ পরস্কার গ্রহণ করিতে বার বার উপরোধ করিলেন। বিমলা অনেক ক্ষণ নিস্তন্ধ হইয়া রহিলেন, শেষে সজলনয়নে উত্তর করিলেন,—সৈনিকবর ! প্রভু! মহেশ্বর-মন্দিরে আপনার নিকট একটী ভিক্ষা করিয়াছি, সতীশচন্দ্রের রক্ষা। তাহাই আমাকে পুরস্কারস্বরুপ দান করন। ইন্দ্রনাথ। কিন্তু সে ভিক্ষা নহে, সতীশচন্দ্র যদি নিন্দোষী হয়েন তবে তাঁহাকে রক্ষা করা মনুষ্য মাত্রেরই কত্তব্য। আমি আপনার আর কি করিতে পারি আদেশ করন, আমি পালন করিতে প্রতিশ্রত হইতেছি। বিমলা অনেকক্ষণ চিন্তা করিয়া ধীরে ধীরে বলিলেন,—আমার দ্বিতীয় ভিক্ষা এই, আপনি আমাকে মহেশ্বর-মন্দিরে দেখিয়াছেন, মঙ্গেরেও দেখিলেন, একথা বিস্মত হউন। ইন্দ্রনাথ বিসিমত হইয়া বলিলেন,—আপনি আজ আমাকে জীবন দান করিলেন তাহা আমি কখনও বিস্মত হইব না। আপনার এ যাদ্ধা কি জন্য ? বিমলা ধীরে ধীরে উত্তর করিলেন,—আমি ব্রাহ্মণকুমারী, অতএব আপনার স্মরণপথে থাকিবার অযোগ্যা। সরলা আপনাকে প্রতীক্ষা করিতেছেন, অতএব অন্য নারী আপনার সমরণপথে থাকিবার অযোগ্যা। 8 Ꭶ