পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रट्ञश्व ब्रळनाबलौ অসীম দঃখসাগরে ভাসিতাম না। চন্দ্রশেখর উত্তর করিলেন,—মহাশয়, কেবলই কি মন্দিরে পণ্যকম করা যায়, সংসারের মধ্যে থাকিয়া কি পণ্যকম সম্ভবে না? শাস্ত্রে বলে সত্য ও পরোপকারিতায় যত পণ্য, যাগযজ্ঞে তত নাই। যে জমীদার পরোপকারিতা ও প্রজাবৎসল্যের জন্য সব্বত্রই সমাদত, তাঁহার কি মন্দিরবাসের জন্য আক্ষেপ উচিত ? নগে। মহাশয়! আপনি আমাকে অতিশয় সম্মান করিলেন, আমি সে সম্মানের যোগ্য নহি। যদি যোগ্য হইতাম, তবে আজ পাপ-প্রশমনাথ মহাত্মা চন্দ্রশেখরের নিকট আসিতাম না। চন্দ্র। এজগতে সহস্ৰগুণসত্ত্বেও কে মহাপাপী নহে? কে বলিতে পারে, আমি পাপ করি নাই—কে বলিতে পারে, আমি নিকলঙ্ক, নিরপরাধী ? দুইজনে অনেকক্ষণ এইরুপ কথোপকথন করিতে লাগিলেন। অবশেষে নগেন্দ্রনাথ আপনার আসিবার কারণ বলিতে লাগিলেন। উনবিংশ পরিচ্ছেদ ঃ জমীদারের পন্বেকথা AND let me if I may not find A friend to help, find one to hear. –Crabbe. নগেন্দ্রনাথ বলিতে লাগিলেন,—মহাত্মন, আমার মত দুঃখী আর কেহই নাই, আমার দুঃখকথা শ্রবণ করন। আমার সহধৰ্ম্মিণী আমাকে বলিতেন যে, যেদিন তাঁহার জন্ম হয়, সেদিন আকাশে অপরাপ তিথি-নক্ষত্র দেখা গিয়াছিল। ব্রাহ্মণপণ্ডিত গণিয়া বলিয়াছেন যে, শিশুকন্যা ঘোর উন্মাদিনী হইবেন। সে ভ্রম, আমার সহধৰ্ম্মিণী উন্মাদিনী হয়েন নাই, কিন্তু তাঁহার কতকগুলি মনোবৃত্তি অতিশয় বেগবতী ছিল, সেজন্য আমি তাঁহাকে পাগলিনী বলিতাম। আজি দ্বাদশ বষ হইল, সে স্নেহময়ী পাগলিনীর কাল হইয়াছে। পাগলিনীর গর্ভে আমার দুইটী পত্র জন্মে। তাহাদিগের গর্ভধারিণীর মত দুই জনই পাগল। জ্যেঠটী চিন্তায় পাগল, কনিষ্ঠটী কায্যক্রমে পাগল। সে দুইটী পত্র আমার দুইটী নয়নের তারা ছিল,—আজ তাহারা কোথায় ? হায় দারুণ বিধি ! বাদ্ধক্যে কি আমার কপালে এই লিখিয়াছিলে ? আমার দুইটী নয়নই গিয়াছে, আমি অন্ধ হইয়াছি। দইটী রত্ন হারাইয়া আমি কাঙ্গালী হইয়াছি। সে দুঃখবচনে সকলেরই হৃদয় দ্রবীভূত হইল। ক্ষণেক পরে নগেন্দ্রনাথ বলিতে লাগিলেন,— । আমার জ্যেষ্ঠপত্রকে অলপ বয়সে ব্যাঘ্ৰে লইয়া যায়। তাহারই শোকে তাহার মাতা কালগ্রাসে পতিত হয়। কনিষ্ঠ পত্র সরেন্দ্রনাথের মুখ চাহিয়া আমি শোক সহ্য করিয়াছিলাম। আহা! সেরাপ বীরপত্র কেহ কখনও দেখে নাই। দয়া ধমে, বিদ্যালোচনায়, বল ও বিক্রমে সুরেন্দ্রনাথের মত কে ছিল ? বৎস নবীনবয়সে সিংহবল ধারণ করিত, মল্লযুদ্ধে পালওয়ানদিগকে পরাস্ত করিত, বাহুবলে সকলকে বিসিমত করিত, অশ্বচালনায় তাহার সমকক্ষ এদেশে কাহাকেও দেখি নাই। যে দেখিত, সুরেন্দ্রনাথকে দয়ায় দাতাকণ বলিত, বলবিক্রমে ভীমাবতার বলিত। বালক বাল্যকালেই রাজা সমরসিংহের নিকট যুদ্ধবাত্তা শুনিতে ভালবাসিত, শনিতে শুনিতে বালকের মুখ গম্ভীর হইত, নয়নদ্বয় প্রজবলিত হইত। শিশ সমরসিংহের খঙ্গ ধারণ করিত ও যুদ্ধে যাইব বলিয়া প্রতিজ্ঞা করিত, রাজা সমরসিংহ অশ্রুপণলোচনে বালককে চুম্বন করিতেন। বাল্যকালেই তাহাকে রাজা সমরসিংহ যুদ্ধক্ষেত্রে লইয়া যাইতেন। রাজা সব্বদাই বলিতেনপাঠানেরা বাঙ্গালীদিগকে ভীর বলিয়া ভৎসনা করে, কিন্তু সেই বাঙ্গালীর মধ্যেও মধ্যে মধ্যে বীরপরষ জন্মগ্রহণ করিয়াছেন। সরেন্দ্রনাথ ! আমি মরিলে তুমি আমার তরবারি লইবে, তোমার হস্তে এ খঙ্গের অপমান হইবে না –আজি সে সমরেন্দ্র কোথায় ! বিধাতঃ ! এক্ষণে আর কে আছে যাহার মাথ চাহিয়া আমি সরেন্দ্রনাথের বিচ্ছেদ সহ্য করিব। বদ্ধ দুই একটী আশ্রমবিন্দ ত্যাগ করিলেন। চন্দ্রশেখর শোকাত্ত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন,— সমরেন্দ্রনাথের কোন অমঙ্গল সমাচার শ্রবণ করিয়াছেন ? 玄3もf