পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बक्रर्गबट्छप्ठा আমার পিতার উপর মিথ্যা দোষারোপ করিতেছেন, তিনি এ বিষয়ের বিন্দবিসগও জানেন না। আমি আপনাদিগকে বিরক্ত করিতে আইসি নাই, এই জঘন্য ঘর হইতে অন্য ঘরে লইয়া যাইতে আসিয়াছি। মহাশ্বেতা পনরায় বলিলেন,—বন্দীর এইরুপ ঘরেই থাকা ভাল, বাহার চরণে শিকল, তাহার সে শিকল সবের্ণের না হইয়া লৌহের হওয়াই উপযুক্ত! যাও বাছা, হতভাগিনীদিগের কন্টের উপর আর উপহাস করিও না। বিমলা সজলনয়নে উত্তর করিলেন,-মাতঃ ! আমি যে আপনাদিগকে উপহাস করিতে আইসি নাই, জগদীশ্বর জানেন। বিমলা আরও বলিতেন, কিন্তু মহাশ্বেতা তীব্রস্বরে বলিলেন,--জগদীশ্বরের নাম করিও না, তোমার পিতা যেন সে পবিত্র নাম কখনও গ্রহণ না করেন, এবং যেন সে নাম কেহ গ্রহণ করিয়া অপবিত্র না করে। বিমলা গভীরস্বরে বলিলেন,-মাতঃ ! আপনি আমাদিগকে অন্যায় তিরস্কার করিতেছেন ! আপনি যেরপে হতভাগিনী, আমিও সেইরাপ; হতভাগিনীর জগদীশ্বরের নাম ভিন্ন আর কি আছে ? মৃত্যুকাল পয্যন্ত সেই নাম স্মরণ করিব, এই দুঃখ পরিপণ সংসারে হতভাগিনীর }সেই নামই অবলম্বন, সেই নামই একমাত্র সখ। সে পবিত্র কথা শুনিয়া মহাশ্বেতার ক্ৰোধ লীন হইল। বিমলার ঈশ্বরভক্তি দেখিয়া মহাশ্বেতা একদলেট তাঁহার দিকে দেখিতে লাগিলেন। দেখিলেন, দেবকন্যার মত সেই উন্নতপ্রকৃতি রমণীরত্ন দণ্ডায়মান আছেন। নয়নে আশ্রজেল, মুখে সবগীয় প্রেম ও ঈশ্বরে ভক্তি ভিন্ন আর কিছুই লক্ষিত হইতেছে না। মহাশ্বেতা ধীরে ধীরে বলিতে লাগিলেন–বিমলা, ক্ষমা কর; না জানিয়া তিরস্কার করিয়াছি, দুঃখে বিবেচনাশক্তির লোপ হয়। বিমলা মহাশ্বেতাকে আর কথা বলিতে দিলেন না। নিকটে আসিয়া হস্তধারণ করিয়া বলিলেন,—মাতঃ ! ক্ষমা প্রাথ’নার কিছুই কারণ নাই,--আপনিও দুঃখিনী, আমিও অলপ দঃখিনী নহি, আমার অবস্থা জানিলে আপনিও আমার প্রতি দয়া করিবেন। মহাশ্বেতা বিমলার হাত ধরিয়া রহিলেন, দই জনে নীরবে রোদন করিতে লাগিলেন, হতভাগিনী সরলাও রোদন করিতে লাগিল। ক্ষণেক পর মহাশ্বেতা বলিলেন,—বিমলা, তোমার মঃখ আমি বুঝিতে পারিতেছি। পিতার পাপকম দেখিয়া কোন ধৰ্ম্মপরায়ণা কন্যার হৃদয় না বিদীণ হয় ? বিমলা উত্তর করিলেন,-মাতঃ! আপনি এখনও ভ্রান্ত । আমরা যেরপে হতভাগা আমার পিতাও সেইরূপ হতভাগা, তাঁহার জীবন মরণ এখনও স্থির নাই। যে পামর আপনাকে ও সামাকে কট দিতেছে, সে পিতাকেও হতভাগ্য করিয়াছে, আমি আশঙ্কা করি, সে পিতার মৃত্যু সঙ্কল্প করিতেছে। মহাশ্বেতা বিস্মিত হইলেন। ভাবিলেন,—সে কি, সতীশচন্দ্র ভিন্ন ইহার ভিতর আর কে আছে ? বিমলা বলিলেন,—উপরে আসন, আমি সকল কথা আপনাকে অবগত করাইব। তিন জনে ধীরে ধীরে সেই জঘন্য ঘর হইতে বাঁহগাত হইলেন। বিমলা সরলাকে ভগিনীর মত স্নেহ করিয়া লইয়া যাইলেন। তাঁহাদিগের আহারাদি সাঙ্গ হইলে বিমলা শকুনিসংক্রান্ত সমস্ত কথা মহাশ্বেতাকে অবগত করাইলেন। を○