পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—A. বার বার পল্লীগ্রামের কথা জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। সরলার মুখ হইতে সেই সকল গল্প শুনিতে শুনিতে বিমলার চক্ষ জলে পরিপণ হইল, পিতার পাপকমে হৃদয়ে মন্মান্তিক বেদনা হইতে লাগিল, শকুনির চক্রান্তে তাঁহার শরীর কোপে কণ্টকিত হইতে লাগিল। অতি স্নেহসহকারে দই বাহ স্বারা সরলাকে আলিঙ্গন করিয়া বিমলা বার বার সেই বালিকার মুখে সেই দারিদ্র্যের কথা, সেই পল্লীগ্রামে নিবাসের কথা জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন, বার বার চক্ষজলে সরলার নয়ন ও বদনমন্ডল এবং কেশরাশি সিক্ত করিলেন। বিমলা জিজ্ঞাসা করিলেন,—তোমরা যখন রন্দ্রপরে ছিলে, তখন তোমাদের বন্ধন কে ছিল ? কৃষকপত্নীরাই কি তোমাদের বন্ধ ছিল ? সরলা বলিল,-মা কাহারও সহিত অধিক কথা কাঁহতেন না, দিবাভাগে প্রায় চিন্তায় লিপ্ত থাকিতেন, সন্ধ্যার সময় উপাসনা করিতেন। আমার সহিত দুই একজন গ্রাম্য সত্ৰীলোকের আলাপ ছিল । অমলা নামে এক মহাজনের সত্রী ছিল, তাহারই সহিত অধিক সময় আমার কথাবাত্তা হইত। বিমলা। সে কি জাতি ? সরলা । জাতিতে কৈবত্ত । বিমলা। সে তোমাকে ভালবাসিত, তোমাকে যত্ন করিত ? সরলা। বোধ হয়, আমার মাতা ভিন্ন আর কেহ আমাকে সেরাপ ভালবাসিতে পারে না, তাহার কথা মনে হইলে চক্ষতে জল আসে। বিমলা। সরলা, তোমাদের প্রতি কিরুপ অন্যায় করা হইয়াছে তাহা আমি বলিয়া শেষ যদি আমার সাধ্য থাকে, আপনি ভিখারিণী হইয়াও তোমাদের পর্বোবস্থা বজায় রাখব । সরলা। আমি সত্য বলিতেছি, পল্লীগ্রামে সেরুপ অবস্থায় আমার কিছুমাত্র কট হইত না, কিন্তু মাতা দিবারাত্রি চিন্তা করিতেন, সেইজন্য আমার দুঃখ হইত। মাতাকে সুখে রাখ, এই আমার ভিক্ষা। বিমলা। সরলা, আমারও সেই ইচ্ছা, প্রাণ দিয়াও যদি তোমার মাতাকে সুখে রাখিতে পারি, তাহাতেও সম্মত আছি । সরলা। কেন, তোমার অসাধ্য কি ? তোমাদের এত ধন, এত মানসম্প্রম ! বিমলা। সরলা, তুমি আমার সকল কথা জান না, যদি জানিতে, তবে আমাকে তোমা অপেক্ষাও হতভাগিনী বোধ করিতে। এ ধন মান আর আমাদের নহে। সরলা । কেন ? বিমলা। আমি প্রাতঃকালেই বলিয়াছিলাম যে, পামর শকুনি আমার পিতার প্রাণসংহার করিয়া এই দলগ ও জমীদারী হস্তগত করিবার উদযোগ করিতেছে। আমার দিবারাত্রি পিতার চিন্তায় নিদ্রা হয় না। কিন্তু কেবল সেই দুঃখ নহে। সরলা । আর কি ? বিমলা। সরলা, তোমার নিকট কিছরই লুকাইব না। এই পামর আমাকে বিবাহ করিতে চাহে, তাহা হইলে পিতার মৃত্যুর পর অনায়াসে উত্তরাধিকারী হইতে পারবে। আমার বলিতে লজা করে, এই পামর কয়েকদিন অবধি প্রত্যহই বিবাহের প্রস্তাব করিতেছে। আমি অস্বীকার করাতে বলপবেক পাণিগ্রহণ করিতে চাহে। কল্য প্রত্যুষে সেই নরঘাতক যমের সহিত সাক্ষাৎ করিতে হইবে। সরলা, আমাপেক্ষা হতভাগিনী আর কে আছে ? সরলা বিসিমত হইল, ক্ষণেক পরে জিজ্ঞাসা করিল,—কাল পরিত্রাণ পাইবে কিরাপে ? বিমলা অতি গম্ভীরস্বরে উত্তর করিলেন-কল্য জগদীশ্বর আমাকে উদ্ধার কারবেন, তাঁহার কুপায় কল্য পরিত্রাণের আশা আছে। তাহার পর নিশিযোগে পিতার নিকট পলায়ন করিব, তাহারও উপায় স্থির হইয়াছে। তাহার পর পামরের পাপের প্রায়শিচত্ত হইবে, তাহারও উপায় পাইয়াছি। ভগবান, এই দরোহ কায্যে অবলার সহায় হও । সরলা নিস্তব্ধ হইয়া রহিল, বিমলা আরও বলিতে লাগিলেন,—মঙ্গের যাইয়া পিতার পরিত্রাণ করিব, পাপীর শাস্তি দান করিব। তাহার পর পিতার নিকট প্রার্থনা করিয়া এই দগে" মহাশ্বেতাকে পনরায় দান করিব। আমি পিতার অন্তঃকরণ জানি, শকুনির পরামশ হইতে মত্ত గ్ర రI