পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১২৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৯৫
পাঠান বিদ্রোহ

সুতরাং ত্রিপুরেশ্বর হইতে তাঁহার পরাভব বিজয়ীর যশোরাশি ম্লান করিয়া ফেলিয়াছিল। ইহার প্রত্যুত্তর স্বরূপ নবাব নিজ শ্যালক মমারক খাঁকে সেনাপতি করিয়া দশ হাজার পদাতিক ও দুই হাজার অশ্বারোহী সৈন্য দিয়া চট্টগ্রাম জয় করিতে পাঠাইলেন। পাঠানবাহিনী ঝড়ের ন্যায় সহসা আসিয়া পড়িল, তজ্জন্য চট্টগ্রামে সেনা সন্নিবেশ পূর্ব্ব হইতে রাখা হয় নাই, কাযেই চট্টগ্রাম জয় করিতে পাঠানদের বেগ পাইতে হয় নাই। মমারক খাঁ সুলেমানের বিজয় কেতন চট্টগ্রামে উড়াইয়া দিলেন।

 যখন বিজয়মাণিক্য ভগ্নদূত মুখে এ সংবাদ শুনিতে পাইলেন তখন তাঁহার ক্রোধানল জ্বলিয়া উঠিল। তিনি সেনাপতিগণকে যুদ্ধ সম্বন্ধে উপদেশ দিয়া চট্টগ্রাম অভিমুখে সসৈন্যে তাহাদিগকে রওয়ানা করাইলেন। সুদীর্ঘ আট মাস ধরিয়া চট্টল অবরোধ চলিল, কিন্তু পাঠান সেনানী মমারক খাঁকে তাহারা কিছুতেই হঠাইতে পারিল না। বিজয়মাণিক্য সেনাপতিদের অকৃতকার্য্যতায় অত্যন্ত বিরক্ত হইলেন, বাহিরে এভাব প্রকাশ না করিয়া তাহাদিগকে চট্টগ্রাম হইতে ডাকাইয়া আনিলেন। রাজার ডাকে তাহারা যুদ্ধ স্থগিত রাখিয়া রাজধানীতে আসিয়া ভয়ে ভয়ে রাজদর্শন করিল। মহারাজ বিজয়মাণিক্য যেমন বীর ছিলেন তেমনি রসগ্রাহী পুরুষও ছিলেন। জয়ন্তী রাজের সহিত রসিকতাই তাহার নিদর্শন। সেনাপতিদের নিয়া এইবার যে রসিকতা করিলেন তাহার তুলনা ইতিহাসে অল্পই দেখা