পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১২৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
৯৮
গৌড়াধিপের পরাজয়

গড়ের ভিতরে ঢুকিয়া পড়িয়া আহার বিহারে ব্যস্ত হইয়া পড়িল।

 এদিকে ত্রিপুরসেনা শৈলমালার নীচে জমাট বাঁধিয়া মাথায় হাত দিয়া বসিয়া পড়িল—এখন উপায়? পরাজিত হইয়া রাজধানীতে প্রবেশ করিলে সকলেরই মাথা কাটা যাইবে, তার চাইতে এখানেই প্রাণ দেওয়া ভাল। এইরূপ মরিয়া হইয়া তাহাদের দলপতি এক ফন্দী আঁটিল, গড়ের যে দিকটা পাহাড়ের গায়ে ঠেকিয়া আছে এবং দুর্ল্লঙ্ঘ্য বলিয়া মাত্র জন কয় প্রহরী রহিয়াছে, তাহার নীচ দিয়া এক সুড়ঙ্গ কাটিয়া একেবারে গড়ের প্রবেশ-পথে পৌঁছান যাইবে। আজ রাত্রেই সুড়ঙ্গ করিয়া গড়ে প্রবেশ করিতে হইবে কারণ পাঠানেরা বুঝিয়াছে ত্রিপুর সৈন্য দেশে পলাইয়াছে, তাই নিশ্চিন্ত মনে গভীর নিদ্রায় ঢলিয়া পড়িবে। যেমন কথা তেমনি কায! তিন হাজার সৈন্য সুড়ঙ্গ খনন করিতে লাগিয়া গেল, আর ঐদিকে শ্রান্ত পাঠানেরা নাক ডাকাইয়া ঘুমাইতে লাগিল। গভীর অন্ধকারের মধ্যে ত্রিপুরসেনা পিঁপড়ার স্রোতের ন্যায় পিল্ পিল্ করিয়া সুড়ঙ্গ মুখে একেবারে দুর্গদ্বারে উপস্থিত! যে প্রহরীরা পাহারায় ফিরিতেছিল, তাহারা ব্যাপার বুঝিবার পূর্ব্বেই নিহত হইয়া গেল। তখন মুক্ত দ্বার পথে ত্রিপুরসেনা গড়ের মধ্যে ঢুকিতে লাগিল, ভিতরের প্রহরীরা এই কাণ্ড দেখিয়া দামামা পিটিয়া দিল। তখন এক মহা সোরগোল উঠিল। যে দিকেই পাঠান চোখ কচ্‌লাইয়া জাগিয়া