পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৩১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১০৩
বিজয়মাণিক্যের জয়যাত্রা

বর্ত্তমান কৈলাসহর বিভাগের অন্তর্গত ঊনকোটি তীর্থ পরিদর্শন করিয়াছিলেন।

 রাজধানীতে ফিরিয়া আসিয়া তিনি অনেক সৎকর্ম্মের অনুষ্ঠান করেন—তুলাপুরুষ, দেবোত্তর, ব্রহ্মোত্তর বিবিধ কীর্ত্তির সহিত তাঁহার নাম জড়িত। ১৫২৮ খৃষ্টাব্দে সিংহাসনে অভিষিক্ত হইয়া মহারাজ বিজয়মাণিক্য সগৌরবে সুদীর্ঘ ৪৭ বৎসর রাজত্ব করেন। ত্রিপুরার সিংহাসনে তিনি যখন সমাসীন তখন দিল্লীর তক্ততাউসে ভাগ্যবিপর্য্যয় ঘটিয়া হুমায়ুন সরিয়া গেলেন, শেরসাহ বসিলেন, পুনরায় নিয়তির চক্রে পাঠান শাসন অন্তে হুমায়ুন আসিয়া পড়িলেন এবং তাঁহার মৃত্যুর পর আকবর প্রতিষ্ঠিত হইলেন। রাজপুতানার ইতিহাসে এই সময় উদয়সিংহপ্রতাপসিংহের আবির্ভাব কাল। এই ভাবে ভারত ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে বিজয়মাণিক্য ত্রিপুরার সিংহাসন অলঙ্কৃত করিয়াছিলেন। বিজয়মাণিকোর খ্যাতি যে আকবর বাদসাহের দরবারেও পৌঁছিয়াছিল তাহার প্রমাণ ‘আইনী আকবরী’ গ্রন্থ। সুপ্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক আবুলফজল বিজয়মাণিক্যের নামের সহিত ঘনিষ্ঠভাবেই পরিচিত ছিলেন, তদীয় আইনী তাকবরী গ্রন্থে এইরূপ লিখিত হইয়াছে—“ভাটী প্রদেশের (হুগলী নদীর তীর হইতে মেঘনার তীর পর্য্যন্ত) সহিত সংলগ্ন একটি স্বাধীন রাজ্য আছে। সেই রাজ্যের নাম ত্রিপুরা, রাজার নাম বিজয়মাণিক্য। যিনি রাজা হন তিনিই নামের অন্তে “মাণিক্য” উপাধি ধারণ করেন।