পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৩৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১০৮
উদয়মাণিক্য ও জয়মাণিক্য

সেনাপতি ছিলেন। সমর সজ্জা যে উৎকৃষ্ট আদর্শের হইয়াছিল তাহা বলাই বাহুল্য কিন্তু অধর্ম্মের মূর্ত্তি উদয়ের মধ্যে লক্ষ্মীর চিহ্ন মাত্রও ছিল না। সুতরাং শ্রীহীন ত্রিপুর সৈন্যের মধ্যে যতই দম্ভ প্রকাশ পাউক না কেন, গৌড়ের আক্রমণ ইহারা প্রতিরোধ করিতে পারিল না। গৌড়সেনা জয়োল্লাসে ত্রিপুর সেনার উপর ঝাঁপাইয়া পড়িল, ভীষণ যুদ্ধের পর ত্রিপুর গড় গৌড়ের হস্তগত হইল। মুসলমানদের মাত্র পাঁচ হাজার হত হইল কিন্তু ত্রিপুর সৈন্যের হত সংখ্যা হইয়াছিল চল্লিশ হাজার। নবাব এই সংবাদ শুনিয়া বাছাই বাছাই যোদ্ধা চট্টগ্রাম অধিকারের জন্য পাঠাইয়া দিলেন। পীরোজ খাঁ, জামাল খাঁ প্রভৃতি সদর্পে ত্রিপুর সৈন্য দলনে আসিয়া পড়িলেন। চট্টগ্রামের পথে উড়িয়া নারায়ণ তাহাদিগের গতি রোধ করিলে কামানের গোলায় তাঁহার মৃত্যু ঘটে। চট্টগ্রাম অধিকার লইয়া ভীষণ যুদ্ধ ইহার পর পাঁচ বৎসর চলিয়াছিল।

 এদিকে অত্যাচারী উদয়ের প্রাণ নাশের জন্য ষড়যন্ত্র চলিল, অবশেষে এক দাসীর চক্রান্তে ইঁহার প্রাণবিয়োগ হয়।

 উদয়মাণিক্যের মৃত্যুর পর তৎপুত্র জয়মাণিক্য ১৫৮৩ খৃষ্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন। জয়মাণিক্যের কিছুমাত্র বলবীর্য্য ছিল না, তাই গৌড় যুদ্ধ হইতে পিসা রণাকে আনাইলেন। প্রধান সেনাপতি রণার ভয়ে সকলেই থরহরি কম্পমান, দুর্ব্বল জয়মাণিক্য অনায়াসে তাঁহার হাতের মুঠোর ভিতর আসিয়া পড়িলেন। জয়ের নামে রণাই প্রকৃত প্রস্তাবে