পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৩৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১০৯
উদয়মাণিক্য ও জয়মাণিক্য

রাজ্যশাসন করিতেছিলেন। রণা প্রাচীন ছিলেন বলিয়া “বুড়া” নামে আখ্যাত হইতেন, স্বীয় নামে উদয়পুরে এক দীঘি খনন করেন, ইহা ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরের উত্তর দিকে অবস্থিত। এই দীঘি উৎসর্গের পর রণার রাজ্যলালসা ক্রমেই বাড়িয়া চলিল। জয়মাণিক্যকে সরাইয়া নিজের রাজমুকুট পরিবার সাধ হইল কিন্তু তাঁহার পত্নী দুই হাতে এই কুপ্রবৃত্তিকে রোধ করিতে লাগিলেন। রণা বেগতিক দেখিয়া বুড়া বয়সে আবার দার পরিগ্রহ করিলেন এবং নূতন স্ত্রীর সহিত রাজ্যলাভের নানা যুক্তি ফাঁদিতে লাগিলেন। হায় তৃষ্ণা, ইহা বুড়াশরীরেও তরুণ থাকিয়া যায়! রণা রাজস্বপ্নে বিভোর হইয়া থাকিতেন। জয়মাণিক্যকে সরান যে কঠিন হইবে না ইহা বেশ বুঝিতেন কিন্তু সিংহাসনের প্রধান কণ্টক ছিলেন অমর। রণার চক্ষু তাঁহার উপর পড়িল।

 অমর দেবমাণিক্যের সন্তান। একদা দেবমাণিক্য বজরায় ভ্রমণে বাহির হইয়াছিলেন, চট্টগ্রামের পথে এক হাজরার সুন্দরী কন্যা দেখিয়া মোহিত হন, সেই হাজরা ছিলেন ফৌজদার। দেবমাণিক্যের নিকট কন্যার বিবাহ প্রস্তাব শুনিয়া তিনি সম্মত হন। সেই পরিণয়ের ফলে অমরের জন্ম হয়। সুতরাং অমর বিজয়মাণিক্যের ভ্রাতা। অমর প্রাপ্তবয়স হইয়া সেনাদলে প্রবেশ করেন এবং ক্রমে সেনাপতির পদে উন্নীত হন। গৌড়সৈন্যের সহিত যুদ্ধে অমরের কৃতিত্ব রণার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। অমর দেখিতেছিলেন তাঁহার পিতৃসিংহাসন কিরূপে