পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৪০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১১২
উদয়মাণিক্য ও জয়মাণিক্য

বিপদের কথা জানাইয়া তাঁহার সহিত অবিলম্বে সাক্ষাৎ করিবার জন্য এক গুপ্ত পত্র দিলেন। অমরের গুপ্তচর চারিদিকে ছড়ান ছিল, রণার পত্র-বাহক গুপ্তচরের হাত এড়াইতে পারিলনা। অমর তখন নদীতীরে চৌহাট্টা দুর্গে যুদ্ধের আয়োজন করিতে ছিলেন এমন সময় পত্রসহ ধৃত পত্রবাহককে তাঁহার নিকট আনা হয়।

 অমর রণার পত্র পড়িয়া দেখিলেন মস্ত সুযোগ উপস্থিত। পত্রবাহককে বন্দী করিয়া তাঁহার একজন সুদক্ষ সেনাপতিকে ঐ ভৃত্যের পোষাক পরাইয়া দিলেন, কুর্ত্তার ভিতরে খুরধার অস্ত্র লুকান রহিল। ভৃত্যবেশী সেনাপতি সমরজিৎ-ভবনে রণার পত্রের কথা জানাইল। সমরজিৎ তখন বাহিরের ঘরে বসিয়াছিলেন, পত্রবাহক হইতে পত্র লইয়া সমরজিৎ দেখিলেন রণার হাতের লেখা, পত্রখানি মাথায় ঠেকাইয়া পত্র পাঠে মন দিলেন। সেই সুযোগে সেনাপতি সমরজিতের গলা কাটিয়া ফেলিল। সমরজিতের মৃত্যু চক্ষের পলকে হইয়া গেল, বাহিরের লোক বড় একটা জানিতে পারিল না। সমরজিতের ছিন্ন মুণ্ড নানা কৌশলে রণার দুর্গে নিক্ষেপ করা হয়। যখন রণা ভ্রাতার ছিন্নমুণ্ড দেখিতে পাইলেন তখন বুঝিতে পারিলেন ইহা অমরের কার্য্য। ভ্রাতাকে নিহত দেখিয়া তিনি মনে করিলেন অমর ইতিমধ্যে তাঁহার ভ্রাতার দুর্গ অধিকার করিয়াছেন নতুবা ভাই মরিল কি করিয়া? সমরজিতের মৃত্যুতে তাঁহার ডান হাত খসিয়া পড়িল।