পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৪৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১১৫
 

অমরসাগর খননে
অমরমাণিক্য

পাঠান শাসনকর্ত্তা ফতে খাঁর আশ্রয় লইল। এই সংবাদে অমরমাণিক্য স্বয়ং যুদ্ধযাত্রা করেন। কথিত আছে যে যুদ্ধক্ষেত্রে অমরমাণিক্য গরুড়ব্যূহ রচনা করেন। পুরোভাগে দুই সেনাপতি হইল গরুড়ের চঞ্চু, উভয় পার্শ্বস্থ সেনা হইল গরুড়পক্ষ আর হস্তী অশ্ব রহিল ভিতরে, তাহা যেন গরুড়ের উদর। বিশাল গজারূঢ় হইয়া অমর ব্যূহের পৃষ্ঠদেশে রহিলেন। যুদ্ধে ফতে খাঁ হারিয়া গেলেন, পাঠানের হাত হইতে শ্রীহট্ট খসিয়া পড়িল। ত্রিপুরার বিজয়কেতন শ্রীহট্টে উড়িল। কুমার রাজধর ফতে খাঁকে লইয়া উদয়পুর পৌঁছেন। ফতে খাঁর প্রতি অমরমাণিক্য অত্যন্ত সহৃদয় ব্যবহার করেন, নানা উপহার দিয়া তাঁহাকে বিদায় করা হয়।

 তৎপর ভুলুয়া বিগ্রহ উপস্থিত হয়।[১] ১৫৭৪ খৃষ্টাব্দে মহারাজ বিজয়মাণিক্য ভুলুয়া অধিকার করেন। কিন্তু তাঁহার মৃত্যুর পর যখন উদয় সিংহাসন অধিকার করেন তখন ভুলুয়ার শাসনকর্ত্তা উদয়কে রাজা মানিতে অস্বীকার করে, সেই হইতে

  1. সংস্কৃত রাজমালা পাঠে জানা যায় ৬১০ বঙ্গাব্দে অর্থাৎ প্রায় ৭০০ বৎসর পূর্ব্বে গৌড়ের প্রাতঃস্মরণীয় নরপতি আদিশূরের বংশধর রাজা বিশ্বম্ভর শূর পোতারোহণে চন্দ্রনাথে আসিতে চেষ্টা করিয়া নাবিকগণের দিক্‌ভ্রমে নোয়াখালি জিলার ভুলুয়া গ্রামে (ভুল হুয়া হইতে ভুলুয়া নাম হইয়াছে) উপনীত হইয়াছিলেন।—স্বর্গীয় হরকিশোর অধিকারী সম্পাদিত ‘চিত্রে চন্দ্রনাথ’ ৮ পৃঃ।