পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৪৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১২০
অমরমাণিক্য ও মঘরাজ

শয্যাপার্শ্বে তখন কনিষ্ঠ পুত্র যুঝা সিংহ ছিলেন, তিনি বেগতিক দেখিয়া খড়্গ লইয়। হাঁকিয়া উঠিলেন—রাজধরের কি রাজ্যলোভ, পিতা বাঁচিয়া থাকিতেই সিংহাসনে বসিতে চায়? কি আস্পর্দ্ধা! এই হাঁক ডাক রাজার কানে গেল, তিনি শয্যায় উঠিয়া বসিলেন। প্রধান সেনাপতি ইষা খাঁকে দিয়া যাহাতে ভাইয়ে ভাইয়ে যুদ্ধ না বাঁধিয়া যায় তাহার ব্যবস্থা করিলেন এবং স্বয়ং সিংহাসনে বসিয়া এই সঙ্কট সময়ে রাজাদেশ প্রচার করিতে লাগিলেন। ইহাতে বিরোধের করাল ছায়া মিলাইয়া গেল বটে কিন্তু ভাইয়ে ভাইয়ে বিবাদ ঠিক মিটিল না, কেবল ভবিষ্যৎ সুযোগের প্রতীক্ষায় রহিল।

 কিছুকাল পরে মহারাজ সুস্থ হইয়া রীতিমত রাজকার্য্য চালাইতে লাগিলেন কিন্তু মনের শান্তি ফিরিয়া পাইলেন না। রাজধানীতে নানা গুজবের সৃষ্টি হইতে লাগিল, অযথা রটনা হইল দেবতার নিকট শিশু বলি দেওয়া হইবে, ঘরে ঘরে আতঙ্কের সৃষ্টি হইল। শিশুদিগকে লুকাইয়া রাখিতে লাগিল। মহারাজ শুনিয়া দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, “হায় হায়, এসব কি কথা, কে এই ভীতির সঞ্চার করিতেছে?”

 কুমারদের মধ্যে বিরোধের হেতু রাজ্যে গোল হইতেছে জানিয়া আরাকানপতি চট্টগ্রাম অঞ্চল আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হইতে লাগিলেন। বাণিজ্যের লোভে পর্ত্তুগীজেরা সেই অঞ্চলে ছড়াইয়া পড়িয়াছিল, আরাকানপতি ইহাদের সাহায্য প্রার্থনা করিলেন। পর্ত্তুগীজের নৌবহর সমুদ্র মোহনা হইতে কর্ণফুলি