পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৫১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১২৩
অমরমাণিক্য ও মঘরাজ

তৃতীয় কুমার অমর দুর্লভ সেনাপতিরূপে তাহাদিগকে চালনা করিয়া শৈলমূলে স্বীয় সৈন্যের সহিত মিলিত হইলেন। মঘেরা এই অতর্কিত আক্রমণে ভীত হইয়া পড়িল, তাহারা শ্রেণীবদ্ধ হইয়া যুদ্ধ করিবার পূর্ব্বেই কুমার অমরের চাপে একেবারে ছত্রভঙ্গ হইয়া যে যেদিকে পারিল পলায়ন করিল। অমর দুর্লভ তখন অশ্বারোহণে সৈন্য চালনা করিয়া শত্রুর পশ্চাৎ ছুটিলেন। রণমদে মত্ত হইয়া দুই জন মাত্র সওয়ার সাথে অমর দুর্লভ রাইপুর পর্য্যন্ত শত্রু হঠাইতে হঠাইতে গেলেন। রাজধর স্বীয় শিবিরে থাকিয়া আক্রমণকারী একদল মঘের সহিত লড়িলেন, তাহাতে প্রায় সহস্রাধিক মঘের পতন হইয়াছিল। ইহার পর আর কোন দিক হইতে মঘেরা তাঁহার সহিত লড়িতে আসে নাই।

 এদিকে দুপুর পার হইয়া গেল, সূর্য্যদেব ক্রমশঃই পশ্চিম গগনে পদার্পণ করিতে লাগিলেন তথাপি অমর দুর্লভের কোন খবর নাই। রাজধর বড়ই চিন্তিত হইলেন, তাঁহার দূতেরাও তাঁহার সম্বন্ধে সঠিক খবর দিতে পারিতেছিল না কারণ কুমার আগু হইয়া পড়িয়াছিলেন। সন্ধ্যা ঘনীভূত হইল, এমন সময় দেখা গেল তিনজন অশ্বারোহী বিদ্যুৎবেগে রাজধরের শিবির অভিমুখে আসিতেছে, যখন কাছে আসিল তখন রাজধরের বদন আনন্দে উৎফুল্ল হইয়া উঠিল। রক্তাক্ত তরবারী হাতে অমর দুর্লভ ঘোড়া হইতে নামিলেন আর অমনি রাজধর তাঁহাকে আলিঙ্গন করিলেন।