পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৫২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা

মঘরাজের মুকুট প্রেরণ



(১১)

মঘরাজের মুকুট প্রেরণ

 ভীষণ ঝটিকার বেগে বাহিরে কোথাও তিষ্ঠাইতে না পারিয়া কপোত যেমন নিজ নীড়ে ফিরিয়া যায় পরাজিত মঘসৈন্য তেমনি মঘ দুর্গে ফিরিয়া আসিল। মঘরাজ নিরুপায় দেখিয়া সন্ধির প্রার্থনা করিয়া উড়িয়া রাজা নামক স্বীয় দূতকে রাজধরের শিবিরে পাঠাইলেন। উড়িয়া রাজা সন্ধিপত্র করযোড়ে রাজধরের নিকট নিবেদন করিল। রাজধর পত্র পড়িয়া দূতকে এই বলিয়া বিদায় দিলেন, “মহারাজ অমরমাণিক্যের অভিমত জানিয়া মঘরাজকে উত্তর দিব বলিও।” দূত চলিয়া গেল। পত্রে মঘরাজ এক বৎসরের জন্য যুদ্ধ স্থগিত রাখিবার প্রার্থনা জানাইয়াছিলেন।

 তখন দুর্গোৎসবের কাল সমাগত, উদয়পুরে পূজায় ধূমধাম চলিতেছে, পুত্রদের দেখিবার জন্য অমরমাণিক্যের মন ব্যাকুল হওয়া স্বাভাবিক। এমন অবস্থায় আরাকানপতির যুদ্ধ-স্থগিত-প্রার্থনা রাজধরের দূত-হস্তে মহারাজের নিকট আসিয়া পৌঁছিল। মহারাজ সম্মতি জানাইয়া পত্র দিলেন এবং লিখিয়া দিলেন যেন কুমারেরা দুর্গোৎসবের দিনে রাজধানীতে পৌঁছে। রাজধর পত্র পাইয়া মঘরাজকে যুদ্ধবিরতি জানাইয়া দিলেন এবং মঘরাজের বাক্যে বিশ্বাস করিয়া রণক্ষেত্র পরিত্যাগ করিয়া ভাইদের সহিত উদয়পুরে চলিয়া আসিলেন। কিন্তু এই উদারতা অনুচিত ব্যক্তিতে প্রদর্শিত হইয়াছিল।