পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৫৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৩০

উদয়পুর অধিকার ও
অমরমাণিক্যের মৃত্যু

অমরমাণিক্য ছত্রভঙ্গ সৈন্য একত্র করিয়া একবার শেষ চেষ্টা পাইলেন। স্বয়ং দুর্গের ভার রাখিয়া যুদ্ধ চালনা করিতে লাগিলেন, দুই হাজার পাঠান অশ্বারোহী মঘ সৈন্য আক্রমণ করিল, ঘোর যুদ্ধ বাঁধিয়া গেল। রণক্ষেত্র দেখিতে দেখিতে দুই লক্ষ মঘ সৈন্যে ছাইয়া গেল, ত্রিপুরার হতাবশিষ্ট সেনা এই লোকবলের সহিত কি করিয়া লড়িবে? পাঠানেরা রণে ভঙ্গ দিয়া যে যেদিকে পারিল পলাইল, মহারাজ এই সংবাদ শুনিয়া বুঝিলেন সমুদ্র তরঙ্গ রোধ করিবার উপায় নাই সুতরাং ত্রিপুর শিবির উঠাইয়া ফেলিয়া চৌদোলে উদয়পুর চলিয়া আসিলেন।

 রাজধানীতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই খবর পাওয়া গেল মঘরাজ বিজয়োল্লাসে উদয়পুর নিতে আসিতেছেন। অমরমাণিক্য আত্মরক্ষার কোন পথ না পাইয়া উদয়পুর ত্যাগে কৃতসঙ্কল্প হইলেন। গভীর মনোদুঃখে পরিজনসহ ডোমঘাট পথে অরণ্যে প্রবেশ করিলেন, বিলাসবৈভবের উদয়পুর যেন শ্মশান হইয়া গেল। রাজহীন রাজ্যে বাস অসম্ভব দেখিয়া অনেকেই মহারাজের অনুগমন করিল। শৌর্য্যবীর্য্যের আধার উদয়পুর একটি কঙ্কালের ন্যায় পড়িয়া রহিল।

 এদিকে মঘরাজ উদয়পুর প্রবেশ করিলেন, তাঁহার সৈন্যেরা লুটপাট করিল। পনর দিন অবস্থানের পর মহারাজ বুড়ামঘী নামে এক সর্দ্দারকে মঘ সৈন্যের সহিত উদয়পুরে স্থাপন করিয়া প্রস্থান করেন। মহারাজ অমরমাণিক্য বনে বনে ফিরিতে লাগিলেন, উদয়পুর-লুণ্ঠন সংবাদ তাঁহার হৃদয়ে যেন