পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৬৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৩৫
রাজধরমাণিক্য

 ত্রিপুরারাজ্য হস্তিবলে সমৃদ্ধ, গৌড়েশ্বর হস্তী অশ্ব ধনরত্ন লুণ্ঠন অভিপ্রায়ে এক বিপুল ফৌজ পাঠাইয়া দিলেন। মহারাজ হরিনামে তন্ময় এমন অবস্থায় তাঁহার কানে এই দুঃসংবাদ পৌছিল। এক কালে রাজধর যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন, সেই শৌর্য্যবীর্য্য ত্রিপুরার এ সঙ্কট কালে তাঁহাতে পুনরায় উদ্দীপ্ত হইয়া উঠিল। মহারাজ স্ব-সেনাপতিগণকে অভয় দিলেন—“মাভৈঃ, বিষ্ণুকৃপায় সর্ব্ব অমঙ্গল নিরস্ত হইবে।” ত্রিপুর সৈন্যের অধিনায়করূপে চন্দ্রদর্পনারায়ণ কৈলাগডে (কস্‌বা) গড়খাই করিয়া গৌড়সৈন্যের গতিরোধ করিলেন। গৌড়সেনাপতি ত্রিপুরেশ্বরের হরিনামে ডুবিয়া থাকিবার কথায় মনে করিয়াছিলেন যুদ্ধ বড় একটা হইবে না, গৌড়সৈন্যের সদর্প পদধ্বনিতেই পথ পরিষ্কার হইয়া যাইবে। এইরূপ একটা ভ্রান্ত ধারণায় যখন গৌড়সেনা আরাম আয়েসে গা ঢালিয়া আসিতেছিল তখন অতর্কিতে ত্রিপুরসৈন্যের প্রবল আক্রমণে তাঁহাদের সে সুখস্বপ্ন ভাঙ্গিয়া গেল। গৌড়বাহিনী একেবারে ছত্রভঙ্গ হইয়া পড়িল। বিষ্ণুশক্তিতে যেন ত্রিপুরসৈন্যের বাহু সবল হইয়া উঠিয়াছিল, সে বলের নিকট পরাভূত হইয়া গৌড়-কটক পলায়ন করিল।

 বিপদের মেঘ কাটিয়া গিয়া আনন্দের সুপ্রভাত হইল। উদয়পুরে আর আনন্দ ধরে না, গৃহে গৃহে উৎসব মুখরিত। বিষ্ণুকৃপায় রাজা রক্ষা পাইয়াছে ইহা সকলেরই ধারণা হইল। রাজধর বিষ্ণুমন্দির প্রদক্ষিণ ও বিষ্ণুর পাদোদক গ্রহণ করিতে করিতে তাঁহার জীবনের দিনগুলি কাটাইতেছিলেন। তৎপ্রতিষ্ঠিত