পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৬৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৩৮
 

যশোধরমাণিক্য ও
জাহাঙ্গীর

এবং বাদশাহ কি কারণে তাঁহার সহিত সংগ্রামে লিপ্ত হইয়াছেন জানিবার উদ্দেশ্যে স্বীয় দূত মোগল শিবিরে প্রেরণ করিলেন। মোগল শিবির হইতে উত্তর আসিল—দিল্লীশ্বর এই ইচ্ছা করেন যে ত্রিপুরার যত হস্তী আছে সমস্তই বাদসাহকে অর্পণ করা হউক। যদি ত্রিপুরার মহারাজ ইহাতে অস্বীকৃত হন তবে যেন মোগলের সহিত স্বীয় বাহুবল পরীক্ষা করেন। যশোধরমাণিক্য প্রত্যুত্তরে জানাইলেন বীরের ন্যায় তিনি খাপ হইতে তরবারী খুলিবেন, যদি হার হয় তবেই ইহা সম্ভব।

 সুতরাং প্রবল পরাক্রম দিল্লীশ্বরের সহিত ত্রিপুরার নরনাথ যুদ্ধে অবতীর্ণ হইলেন। বীরত্বের তীব্র উদ্দীপনায় বিপক্ষের সমুদ্রপ্রমাণ সৈন্যের সহিত যুদ্ধ আদৌ সম্ভবপর কিনা ইহা ভাবিয়া দেখেন নাই কিন্তু যখন ত্রিপুর সৈন্যেরা যুদ্ধে ঝাঁপাইয়া পড়িয়া শত্রুসৈন্যের কূলকিনারা পাইল না তখন সকলেই রণে ভঙ্গ দিল।

 যুদ্ধক্ষেত্রে ত্রিপুর সৈন্যের শোচনীয় পরাজয় কাহিনী মহারাজের কানে আসিতে আসিতেই খবর পৌঁছিল যে ইস্পিন্দার ও নুরুল্যা বাদশাহী ফৌজ লইয়া উদয়পুর আসিয়া পড়িয়াছেন প্রায়। চারিদিকে হাহাকার পড়িয়া গেল, যশোধরমাণিক্য স্বীয় পরিজন ও পাত্রমিত্র সহ অমরমাণিক্যের ন্যায় গভীর অরণ্যে লুকাইয়া পড়িলেন—প্রজারাও যে যেদিকে পারিল ছুটিল, উদয়পুর শ্মশানের ন্যায় শূন্য নির্জ্জন হইয়া পড়িল। যখন উমরাহদ্বয় রাজধানীতে পৌঁছিলেন তখন আকবরের