পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৬৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৩৯
 

যশোধরমাণিক্য ও
জাহাঙ্গীর

আক্রমণে শূন্য চিতোরের ন্যায় উদয়পুর আলোক-বিহীন (বে-চেরাগ)। মোগল সৈন্যেরা লুটতরাজ করিল, শূন্য নগরীতে শিবির খাটাইয়া সমরোল্লাসে রজনী কাটাইল, পরদিন রাজার খোঁজে লোক ছুটিল, গুপ্তচরে উদয়পুরের বনবনানী ছাইয়া গেল। শৈল হইতে শৈলান্তরে পলায়মান প্রতাপ সিংহের ন্যায়, যশোধর শত্রুহস্ত এড়াইয়া চলিতে লাগিলেন। কিন্তু এইভাবে কতদিন চলে? চরমুখে রাজবার্ত্তা শুনিয়া নুরুল্যা একদিন সহসা সৈন্যদিয়া মহারাজের বিশ্রামবন ঘেরাও করিয়া ফেলিলেন। যশোধরমাণিক্য ধৃত হইলেন।

 বন্দী অবস্থায় যশোধরমাণিক্যকে লইয়া ইস্পিন্দার ও নুরুল্যা ঢাকায় চলিয়া আসিলেন। এদিকে উদয়পুরে মোগল ফৌজ অবরোধ করিয়া রহিল। নবাব ফতেজঙ্গ মহারাজকে পাইয়া বড়ই প্রীতিলাভ করিলেন, মনে মনে ভাবিলেন অদৃষ্ট সুপ্রসন্ন। মহারাজকে পাইলে বাদশাহের আনন্দের সীমা থাকিবে না, নবাবের ভাগ্যেও কত না জয়মাল্য পড়িবে!

 ফতেজঙ্গ মহারাজকে সমাদর করিয়া কহিলেন—“আপনি যখন বাদশাহের অভিপ্রায় মানিতে চাহেন না তখন বাদশাহের সহিত আপনার সাক্ষাতের ব্যবস্থা করিতেছি, আপনার যাহা বক্তব্য থাকে বাদশাহকেই বলুন।” ফতেজঙ্গ যশোধরমাণিক্যকে বাদশাহ সমীপে দিল্লীতে পাঠাইয়া দিলেন। মহারাজ দিল্লীতে পৌঁছিলে, বাদসাহের দরবার হইতে তাঁহার ডাক পড়িল। যশোধরমাণিক্য যখন বাদশাহের দরবারে উপনীত হইলেন