পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৭০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা

কল্যাণমাণিক্যের অভিষেক



(৩)

কল্যাণমাণিক্যের অভিষেক

 মহারাজ যশোধরমাণিক্য প্রবাসে জীবনযাপন করিতে লাগিলেন, আর এদিকে উদয়পুরে কষ্টের সীমা রহিল না। অবরোধকারী মোগলসৈন্যের অত্যাচারে লোকজন অতিষ্ঠ হইয়া পড়িল। উৎপীড়িত হইয়া যাহারা অতি কষ্টে টিকিয়াছিল তাহারাও পলায়ন করিতে লাগিল। দেবকার্য্যে মোগলেরা বাধা দিতে লাগিল, চতুর্দ্দশ দেবতার মন্দিরে ও কালিকা দেবীর মন্দিরে আর শঙ্খঘণ্টা বাজে না, সকাল সন্ধ্যার সুমধুর আরতিধ্বনি দিগ্‌দিগন্ত প্লাবিত করেনা। ধূপধুনার গন্ধে মন্দির আমোদিত হইয়া উঠেনা। ধনরত্নের আশে মোগলেরা উদয়পুরের স্ফটিক-স্বচ্ছ সরোবর হইতে জল বাহির করিয়া এগুলিকে শুকাইয়া ফেলিতে লাগিল। কি নিদারুণ অর্থশোষ! ধনরত্ন বাহির হইল না কিন্তু মহামারীর করাল মূর্ত্তি প্রকট হইয়া উঠিল, দলে দলে মোগলেরা মরিতে লাগিল, পথে ঘাটে মরিয়া পড়িতে লাগিল। মড়ক বুভুক্ষু রাক্ষসের ন্যায় লেলিহান জিহ্বা বিস্তার করিয়া মোগল ফৌজ গ্রাস করিতে লাগিল। ইহাতে মোগলেরা আতঙ্কিত হইয়া উদয়পুর হইতে অবরোধ তুলিয়া মেহেরকুল[১] (কুমিল্লা) অঞ্চলে চলিয়া গেল।

  1. এই সময়ে মোগলগণ ত্রিপুরার সমতলক্ষেত্র অধিকার পূর্ব্বক তাহার বন্দোবস্ত ও রাজস্বের হিসাব প্রস্তুত করেন। যে সকল পরগণা সামন্ত