পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৭১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৪৩
কল্যাণমাণিক্যের অভিষেক

 আড়াই বৎসর ধরিয়া অরাজক অবস্থা চলিয়াছিল। মোগলদের অবরোধত্যাগে ছত্রভঙ্গ ত্রিপুরবাহিনীর মধ্যে সাড়া পড়িয়া গেল, এ অবস্থায় আর কতদিন? পাত্রমিত্র সভাসদ্ মন্ত্রী ও সেনাপতির আগমনে উদয়পুর পুনরায় মুখরিত হইয়া উঠিল, কাহাকে রাজপদে বসান যায় এই লইয়া জল্পনা কল্পনা চলিতে লাগিল। যশোধরমাণিক্য তখন মথুরায় বানপ্রস্থ অবলম্বন করিয়াছেন, তাঁহার পুত্র নাই, ভ্রাতা নাই, কেহ নাই যাঁহাকে রাজপদে নির্ব্বাচন করা যায়। তখন মহামাণিক্যের ধারায় জন্ম পুরন্দরপুত্র কল্যাণকেই বসান স্থির হইল। যশোধরমাণিক্যের রাজত্বকালে তিনি কৈলাগড়ে (কসবা) সেনাপতি পদে বৃত ছিলেন। রণক্ষেত্রে নৈপুণ্য দেখাইয়া যশস্বী হন, সুতরাং তাঁহার দিকেই চক্ষু পড়িল। বিধাতা যাঁহার ভালে রাজমুকুট আঁকিয়া দিয়াছেন সকলের চক্ষুই যে তাঁহার উপর পড়িবে তাহাতে বিচিত্র কি?

    নরপতি কিম্বা জমিদারদিগের অধিকারভুক্ত ছিল তাহা ত্রিপুরা হইতে বিচ্ছিন্ন করা হইয়াছিল। কয়েকটি পরগণায় মুসলমান জমিদার নিযুক্ত করা হয়। তদ্ব্যতীত যে সকল স্থান মহারাজের খাসদখলে ছিল মোগলগণ তাহাকে “সরকার উদয়পুর” আখ্যা প্রদান পূর্ব্বক নুরনগর, মেহেরকুল প্রভৃতি চারিটি পরগণায় বিভক্ত করিয়া তাহার বার্ষিক রাজস্ব ৯৯,৮৬০ টাকা অবধারণ করেন। প্রায় দুই বৎসর কাল তাঁহারা এইরূপে ত্রিপুরার সমতলক্ষেত্র শাসন করিয়াছিলেন।

    কৈলাস সিংহ প্রণীত রাজমালা; ৭৭পৃঃ।