পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৮৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৫৫
 

গোবিন্দমাণিক্য ও
নক্ষত্র রায়

সিংহাসনে বসাইয়া রাজা বলিয়া ঘোষণা করি।” তাহাই হইল, পাত্র মিত্র মন্ত্রী সভাসদে দরবার গৃহ পূর্ণ হইল, মহারাজ নক্ষত্ররায়কে সিংহাসনে বসাইয়া রাজমুকুট পরাইয়া দিলেন। তারপর সভা লক্ষ্য করিয়া মহারাজ বলিলেন, “অদ্য হইতে নক্ষত্ররায় আমার স্থলে অভিষিক্ত হইলেন, ভাইকে সিংহাসনে বসাইয়া আমি সানন্দে বনে চলিয়া যাইতেছি! আমার স্বদেশের কল্যাণ হউক, ইহাই আমি বিধাতার নিকট প্রার্থনা করি।” মহারাজের বাক্য শুনিয়া সকলের চক্ষু অশ্রুসিক্ত হইয়া উঠিল। এইরূপে উদয়পুর যখন অশ্রুজলে ভাসিতেছিল গোবিন্দমাণিক্য রাণী গুণবতী ও কয়েকজন পরিজন সহ নিঃশব্দে রাজধানী পরিত্যাগ করিয়া বনের পথে অদৃশ্য হইলেন।

 ভ্রাতৃবিরোধের সমরানল জ্বলিয়া না উঠিতেই নিভিয়া গেল। গোবিন্দমাণিকোর অপূর্ব্ব আত্মত্যাগে বিরোধের দাবানল আত্মপ্রকাশ করিবার সুযোগ পাইল না। যদি মহারাজ স্বেচ্ছায় নিজ অধিকার ছাড়িয়া না দিতেন তবে পরিণাম কি হইত তাহা দিল্লীর সিংহাসনের দিকে দৃষ্টি করিলেই অনায়াসে প্রতীত হয়। ঠিক সেই সময়ে ময়ূরসিংহাসনের লোভে ভারতব্যাপী সমরানল জ্বলিয়া উঠে এবং দারার ছিন্নমুণ্ড ভূমিতে গড়াইয়া পড়ে।