পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৮৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৬০
 

আরাকান রাজ্যে
গোবিন্দমাণিক্য ও সুজা

করিতেন আবার বাপের বাড়ী চলিয়া আসিতেন। এই ভাবে রাজকন্যার যাওয়া আসার ধূমধাম কিছুকাল চলিল। একবার রাজকন্যা বাপের বাড়ী যাইতেছে এই অছিলায় সারি সারি দোলা সাজান হইল, সন্ধ্যার স্তিমিত আলোকে স্ত্রী-বেশধারী চল্লিশ জন মল্ল ঐগুলিতে প্রবেশ করিয়া দ্বার রোধ করিয়া রহিল। যখন শিবিকা-বাহকেরা ঘর্ম্মাক্ত কলেবরে প্রথম ফটকে পৌঁছিল তখন প্রতিহারী বাধা দিতে চাহিলে জানান হইল রাজদুহিতা পিত্রালয়ে যাইতেছেন। ফটক খুলিয়া গেল, এই ভাবে একে একে ছয়টি ফটত পার হইয়া যখন সর্ব্বশেষ ফটকে পৌঁছিল সেখানকার প্রহরীরা সঙ্গীন উঁচু করিয়া জোরে হাঁকিল—কোন্ হ্যায়? পূর্ব্বের ন্যায় তাহাদিগকেও বলা হইল, সেবিকাসহ রাজকন্যা আসিতেছে, পথ ছাড়! কিন্তু প্রহরীদের সন্দেহ হইল—রাজকন্যার সঙ্গে এত পাল্‌কির কি দরকার? এই বলিয়া তাহারা বাহকগণকে তাড়া করিল। বাহকেরা পাল্‌কি ফেলিয়া সরিয়া গেল।

 তখন বেশ সন্ধ্যা হইয়াছে, উদ্যানের পথে অন্ধকার ভরিয়া উঠিয়াছে, রাজপ্রাসাদের সম্মুখস্থ ঝাড় লণ্ঠন হইতে আলোকরশ্মি সাছের ফাঁকে ফাঁকে পড়িয়াছে। প্রহরীদের হুমকিতে যখন বাহকেরা সরিয়া গেল তখন দোলার দ্বার খুলিয়া চল্লিশ জন মোগল মল্ল বাহির হইয়া আসিল, উভয়ে লড়াই বাঁধিয়া গেল। একজন প্রতীহার নাকাড়া বাজাইয়া দিল। সঙ্কট সঙ্কেত পাওয়া মাত্র দুর্গ হইতে পিল্ পিল্ করিয়া সৈন্যের স্রোত ছুটিল।