পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৯১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৬৩
গোবিন্দমাণিক্যের পুনরভিষেক

 তিনি সসম্মানে অভ্যর্থিত হইয়া স্বদেশ অভিমুখে যাত্রা করিলেন। প্রজাবৎসল গোবিন্দমাণিক্য স্বরাজ্যে ফিরিয়া আসিতেছেন, এ সংবাদে ত্রিপুরাবাসীর আর আনন্দ ধরে না—রঘুপতি যেন বনবাস অন্তে স্বরাজ্যে ফিরিতেছেন। মহারাজের আগমন বার্ত্তায় উদয়পুর আনন্দ মুখরিত হইয়া উঠিল, পুরদ্বারে মহারাজ বিজয়মাল্যে ভূষিত হইলেন, দেবালয়ে মঙ্গলশঙ্খ বাজিয়া উঠিল। যিনি প্রজার হৃদয়ে পূর্ব্ব হইতেই অভিষিক্ত হইয়া আছেন তাঁহার পুনরভিষেকে সকলেরই মন পুলকে নাচিয়া উঠিল।

 নক্ষত্ররায় ছত্রমাণিক্য নাম গ্রহণে রাজত্ব করিয়াছিলেন, তাই তাঁহার স্মৃতি অধুনালুপ্ত ‘ছত্রসাগর’ নামক দীঘিতে, ও কুমিল্লার নিকটবর্ত্তী ‘ছত্রের খীল’ ও চান্দিনা থানার অন্তর্গত ‘ছত্রের কোট’ ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার অন্তর্গত ‘ছত্রপুর’ প্রভৃতি গ্রামের নামে অদ্যাপি বর্ত্তমান রহিয়াছে।[১] গোবিন্দমাণিক্য যখন পুনরায়

  1. কৈলাস সিংহ প্রণীত পুস্তকে এইস্থানগুলির উল্লেখ আছে, রাজমালায় ইহাদের উল্লেখ নাই। সিংহ মহাশয়ের পুস্তকে Tavernier-এর ভ্রমণ বৃত্তান্ত সম্বন্ধে এইরূপ উক্ত হইয়াছে—“টেবার্ণিয়ারের ভ্রমণ বৃত্তান্ত গ্রন্থে ত্রিপুরেশ্বর মহারাজ ছত্রমাণিক্যের নাম প্রাপ্ত হইয়াছি। টেবার্ণিয়ার বলেন যে মোগল সাম্রাজ্যের পূর্ব্বসীমা আসাম, ত্রিপুরা ও আরাকান নামক তিনটি স্বতন্ত্র রাজ্যের সহিত সংযুক্ত। টেবার্ণিয়ার স্থানান্তরে লিখিয়াছেন যে ত্রিপুরা রাজ্য হইতে স্বর্ণ ও তসর বাণিজ্যার্থে বিদেশে প্রেরিত হইয়া থাকে। কিন্তু ত্রিপুরা রাজ্য সমুৎপন্ন স্বর্ণ সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ নহে।”—Tavernier’s Travels in India, P. 156.