পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৯৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৬৭

গোবিন্দমাণিক্যের নিকট
আওরঙ্গজেবের পত্র

বিরোধের অবসান ঘটাইলেন। স্থির হইল ত্রিপুরেশ্বর দিল্লীর সম্রাটকে বার্ষিক যত হস্তী ধৃত হইবে তাহার অর্দ্ধেক নজরানা স্বরূপ প্রদান করিবেন, তবে পাঁচ হস্তীর কম দিবেন না। এইভাবে গোবিন্দমাণিক্য কিঞ্চিৎ ন্যূনতা স্বীকার করিয়াও বাদসাহকে প্রীত করাইয়া নিজ রাজ্য অক্ষুণ্ণ রাখিলেন।

 দিল্লীশ্বরের সহিত প্রীতির সম্বন্ধ স্থাপন করিলেন বটে কিন্তু সর্ব্বহারা সুজার স্মৃতি গোবিন্দমাণিক্যের চিত্তে নিষ্প্রভ হয় নাই। নিজে সৌভাগ্য-সোপানে আরোহণ করিলেও দুর্ভাগা সুজার স্মৃতি মহারাজের উদার হৃদয় ব্যথিত করিত। রসাঙ্গ বাসের দুঃখের দিনগুলি তাঁহার বিশ্রাম সময়ে কখনও কখনও মনে পড়িত তার মনে পড়িত সুজা যে তাঁহার হাতে হীরকাঙ্গুরীয় পরাইয়া দিয়াছিলেন। সেই করুণ চিত্র তাঁহার প্রাণে অশ্রুময় ঝঙ্কার তুলিত। সুজার দুঃসময়ের দান তিনি আপন অভাব অনটনের মধ্যেও সযত্নে রক্ষা করিয়া আসিয়াছেন। এইবাব সেই দানটিকে সুজার স্মৃতি রক্ষার কার্য্যে লাগাইতে ইচ্ছা করিয়া হীরকাঙ্গুরীয় বিক্রয় করাইলেন এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ দ্বারা গোমতী নদীর তীরে বৃহৎ “সুজা মসজিদ” নির্ম্মাণ করিলেন। মসজিদের নিকটে সুজাগঞ্জ নামে এক বাজার বসাইলেন, উদ্দেশ্য হয়ত এইরূপ থাকিবে মসজিদের ব্যয়ভার বাজারের আয়ে নির্ব্বাহ হইবে। ‘সুজামসজিদ’ নির্ম্মাণ গোবিন্দমাণিক্যের এক অতুলনীয় কীর্ত্তি; ইহাতে তাঁহার হৃদয়ের পরিচয় লিপিবদ্ধ হইয়া আছে। নিজে হিন্দু রাজা