পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৯৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৬৯
রাজর্ষির পরলোকগমন

ত্রপুরেশ্বর-দত্ত চন্দ্রনাথ-সেবাকার্য্যের দেবোত্তর সম্পত্তির বার্ষিক আয় দশ সহস্র।” গঙ্গাস্নান উপলক্ষে মহারাজ তীর্থ দর্শনে বাহির হন, ভাগীরথীতীরে স্নান সমাপ্ত করিয়া তাম্রপত্রে সনদ লিখিয়া নানা দেশীয় ব্রাহ্মণকে ভূমিদান করেন। সেই সকল তাম্রশাসন অদ্যাপি দেখিতে পাওয়া যায়।

 মহারাণী গুণবতীর নামে কস্‌বা থানার অধীন জাজীয়াড়া গ্রামে গুণসাগর দীঘি খনন করা হয়।[১] গোবিন্দমাণিক্যের সহোদর ভ্রাতা জগন্নাথের নামে একটি এক মাইল ব্যাপী দীঘি খনন করিয়া রাজপুত্রের স্মৃতি অমর করা হয়। কুমিল্লা হইতে চট্টগ্রাম অবধি যে রাস্তা গিয়াছে সেই রাস্তায় খণ্ডলের সন্নিকটে এই দীঘি দেখিতে পাওয়া যায়; ইহা প্রকৃতি সৌন্দর্য্যের এক অমূল্য সম্পদ।[২] মেহেরকুলে গোমতীর উভয় পার্শ্বে বহু সংখ্যক ঝিল থাকায় নদীর জলে শস্যের প্রচুর ক্ষতি হইত, তাই মহারাজ বহু অর্থ ব্যয়ে উভয় তীরে গাঙ্গাইল বাঁধিয়া দেন। এইরূপে পুণ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে মহারাজের জীবন সন্ধ্যা ঘনাইয়া আসিল। সর্ব্বগ্রাসী কাল যখন

  1. গুণবতী ১৫৯০ শকাব্দে বিষ্ণুর উদ্দেশে উদয়পুরে এক মন্দির নির্ম্মাণ করেন। শিলালিপিপাঠ কবিত্বপূর্ণ—মহারাজ পোবিন্দমাণিক্য শৌর্য্যে রঘুর ন্যায়, গাম্ভীর্য্যে সমুদ্রের ন্যায়, সৌন্দর্য্যে কন্দর্পের ন্যায় এবং দানে বলির ন্যায়।
  2. উদয়পুরে প্রস্তর নির্ম্মিত জগন্নাথ মন্দির অতি প্রসিদ্ধ। এই মন্দির গোবিন্দমাণিক্য ও অনুজ জগন্নাথ দেবের কীর্ত্তি—শ্রীশ্রীগোবিন্দমাণিক্য…ততঃ কনীয়ান্ শ্রীজগন্নাথ…শ্রীবিষ্ণবে অনন্ত ধাম্নে প্রাদাৎ প্রাসাদমুত্তমং।