পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৯৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৭০
রামমাণিক্য

গোবিন্দমাণিক্যের জীবন হরণ করিল তখন তাঁহার বয়ঃক্রম ৭৯ বৎসর হইয়াছিল। ১৬৭৩ খ্রীষ্টাব্দে তাঁহার মৃত্যু হয়। শত শত বৎসর পূর্ব্বে তাঁহার মরদেহ ধরণীতে মিলাইয়া গেলেও গোবিন্দমাণিক্য স্বীয় কীর্ত্তির মধ্যে আজিও জীবিত, কারণ ‘কীর্ত্তির্যস্য স জীবতি’।

(১০)

রাম মাণিক্য

 ১৬৭৩ খৃষ্টাব্দে যুবরাজ রামদেব মাণিক্য উপাধি গ্রহণ পূর্ব্বক পিতৃসিংহাসনে আরোহণ করেন। রামমাণিক্যের শাসনকাল ঘটনা বিরল। তাঁহার চিত্তের ঔদার্য্যসূচক একটি কাহিনী আজিও এদেশে প্রচলিত আছে। সরাইলের জমিদার নুরমহম্মদের পুত্র নাছির শিকার উপলক্ষে রাজপুত্র চন্দ্রসিংহের মৃত্যুর কারণ হওয়ায় ত্রিপুর দরবার ইহার শাস্তি বিধানে উদ্যত হইলে, জমিদার নুরমহম্মদ পুত্রকে স্বয়ং শাস্তির জন্য মহারাজের নিকট পাঠাইয়া দেন। যখন নাছিরকে মহারাজের সম্মুখে আনা হইল, তখন রামমাণিক্যের হৃদয় গলিয়া গেল। তিনি বলিলেন—‘পুত্রহন্তাকে বধ করিয়া কি লাভ হইবে, যিনি সৃষ্টির কর্ত্তা তিনিই ইহার ব্যবস্থা করিবেন,’ এই বলিয়া নাছিরকে মুক্তি দিলেন। উক্ত ঘটনা দ্বারা মহারাজের অপূর্ব্ব চিত্ত-সংযমেরই পরিচয় পাওয়া যায়, এরূপ ক্রোধ সংবরণ ইতিহাসের পৃষ্ঠায় একান্ত বিরল।