পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২০৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৭৫
দ্বিতীয় রত্নমাণিক্য

সচেষ্ট হইলেন। নবাবকে অনেক বুঝান হইল যে নরেন্দ্র নবাবের অভিপ্রায় অনুযায়ী যুবরাজ না হইয়া একেবারে মস্‌নদ অধিকার করিয়া বসিয়াছেন এবং রত্নমাণিক্য ও তাঁহার অমাত্য বর্গকে কারারুদ্ধ করিয়াছেন। এই সংবাদে নবাব অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া নরেন্দ্রকে ধরিয়া আনিবার জন্য মোগল ফৌজ পাঠাইয়া দিলেন। চম্পক রায়ের প্রচেষ্টা সফল হইল, নরেন্দ্রকে বন্দী করিয়া ঢাকা আনা হইল। রত্নমাণিক্য পুনরায় সিংহাসনে বসিলেন এবং চম্পক রায় যুবরাজরূপে ঘোষিত হইলেন।

 এই ভাবে রাজ্যশাসন কিছুকাল চলিল। কিন্তু নক্ষত্ররায় বাঙ্গলার নবাবের সাহায্যে ভ্রাতৃবিরোধের যে দাবানল জ্বালিয়া গিয়াছিলেন তাহা নিভে নাই। রামমাণিক্যের পুত্রদের মধ্যে রাজা হইবার লালসা সকলকেই পাইয়া বসিয়াছিল, রত্নমাণিক্যকে দূর করিয়া কি ভাবে সিংহাসনে বসা যায় ইহাই হইল ইহাদের একমাত্র আকাঙ্ক্ষা। সেই অভীষ্ট সাধনের জন্য স্বদেশের স্বাধীনতা বলি দিতে ইঁহারা কিছুমাত্র কুণ্ঠিত হন নাই। নরেন্দ্রের কার্য্যকলাপ দেখিয়া পুনরায় রত্নের কনিষ্ঠ ভ্রাতা ঘনশ্যাম ঠাকুর রাজস্বপ্নে বিভোর হইলেন। তিনি গোপনে মুর্শিদাবাদের নবাবের নিকট যাইয়া সৈন্যপ্রার্থী হইলেন। নবাব ত্রিপুরাকে অল্পায়াসে বশ করিতে পারিবেন দেখিয়া ইহাতে সম্মত হইলেন। আবার মোগল সৈন্য আসিয়া উদয়পুরে হানা দিল, রত্নমাণিক্য সংগ্রামে প্রবৃত্ত হইলেন না। সুতরাং ঘনশ্যাম ঠাকুরের হাতে উদয়পুর চলিয়া আসিল। ঘনশ্যাম মহেন্দ্রমাণিক্য নামে নিজকে